০৮:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫
১৯৫৫ সালে নির্মিত হয়েছিল বাড়িটি, যদিও এখন এই বাড়ির কোনো অস্তিত্ব নেই।

যে বাড়ি থেকে নায়ক আলমগীরের চলচ্চিত্রে পথচলা শুরু

বিনোদন ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ০৫:৫০:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
  • / ২৯ বার পড়া হয়েছে

 

সোশাল মিডিয়ায় ইংরেজি ‘এল’ অক্ষর আকৃতির লম্বা বারান্দার একটি বাড়ির ছবি দেখলে এক মুহূর্ত থমকে যাচ্ছেন অনেকেই। তবে ওই বাড়ির ছবিতেই কেবল চোখ আটকে যাচ্ছে তা নয়, সঙ্গের পোস্টটি পড়ার পরও অজানা একটি তথ্য সামনে আসছে।

তা হল- ঢাকার তেজগাঁওয়ের স্টেশন রোডের এই বাড়ি থেকে ঢাকাই সিনেমার নায়ক আলমগীরের অভিনয় জীবনের সূচনা হয়। ১৯৫৫ সালে নির্মিত ওই বাড়িটি আলমগীরের পৈতৃক সম্পত্তি। সাত দশক পেরিয়ে এখন ওই বাড়ির কোনো অস্তিত্ব না থাকলেও, ছবি রয়ে গেছে।

আর সেই ছবিটি ফেইসবুকে প্রকাশ করে আলমগীরের মেয়ে সংগীত শিল্পী আঁখি আলমগীর বলেছেন, তার বাবার জীবনের মোড় ঘোরানো সময়ের কথা।

আঁখি লিখেছেন, একদিন পরিচালক আলমগীর কুমকুম তার দাদার বাড়ির একটি অংশ ভাড়া নিতে এসে দেখেন এক সুদর্শন তরুণকে।

“সেই তরুণই পরবর্তীতে হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের নায়ক আলমগীর।”

১৯৭৩ সালে আলমগীর কুমকুম পরিচালিত ‘আমার জন্মভূমি’ সিনেমার মাধ্যমে রূপালি পর্দার জগতে পা রাখেন আলমগীর।

সে বছর সিনেমায় আসার আগে গীতিকার ও কবি খোশনূরকে বিয়ে করেন আলমগীর। এই দম্পতির সন্তান হলেন আঁখি আলমগীর। পরবর্তীতে আঁখির নামও রাখেন পরিচালক কুমকুম।

বাড়ি নিয়ে ফেইসবুকে আঁখি লিখেছেন, “পুরোটা দেখা যাচ্ছে না, এল শেফড এই বাড়িটি তেজগাঁও স্টেশন রোডে। আমার দাদার বাড়ি, আমার জন্যে অনেক বেশি আবেগের। কারণ, জন্মের পর থেকে অনেক বছর এখানে ছিলাম। যতটা সামনে দেখা যাচ্ছে, পেছনে তার চেয়েও বড় জায়গা। সন্ধ্যা হলে বিশাল জমির উপরে বানানো বিরাটাকার এই বাড়িতে ভয় পাওয়ার গল্প যেমন মনে আছে, তেমনি মনে আছে চাচা–ফুফু আর কাজিনদের সাথে কাটানো সুন্দর সময়ের গল্পও।”

দাদার বাথরুমের বাথটাব ছিল আঁখির শৈশবের প্রিয় খেলার জায়গা, আরেকটি বাথটাব বাড়ির পেছনে গাছতলায় কেন রাখা ছিল, তা আজও রহস্য রয়ে গেছে এই গায়িকার কাছে।

“ছাদে যাওয়া আমাদের ছোটদের একদম নিষেধ ছিল, আমরা কি আর কথা শুনতাম! চলে যেতাম যখন–তখন, পরে ভূতের ভয় দেখিয়ে আমাদের থামানো হল। মনে পড়ে, দাদি এখানেই মারা যান, তার অনেক আগে দাদা, তবে আমি দেখিনি দাদাকে।”

এখন আর নেই সেই বাড়ি। ভেঙে সেখানে উঠে গেছে আধুনিক অ্যাপার্টমেন্ট।

আঁখির কথায়, “এত বছর পরও যখন যাই, আগের বাড়ির একটা বাতাস কোথা থেকে যেন গায়ে হাত বুলিয়ে যায়… অতীত আমাকে খুঁজে নেয়।”

 

নায়ক আলমগীরের পুরো নাম আলমগীর হোসেন। পরিচালক আলমগীর কুমকুমের হাত ধরে সিনেমায় আসার পর নায়ক আলমগীর ‘দস্যুরাণী’, ‘চাষীর মেয়ে’, ‘গুণ্ডা’, ‘মাটির মায়া’সহ বহু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।

১৯৭৮ সালে মুক্তি পাওয়া দিলিপ বিশ্বাস পরিচালিত ‘জিঞ্জির’ সিনেমায় নায়ক রাজ রাজ্জাক ও সোহেল রানার সঙ্গে অন্যতম নায়ক হিসেবে আলমগীরের অভিনয় দর্শকদের নজর কাড়ে।

এছাড়া ১৯৮০ সালে আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘কসাই’ সিনেমায় কেন্দ্রীয় পুরুষ চরিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি পান আলমগীর। এ ছবিতে কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রে ছিলেন কবরী।

 

সামাজিক সিনেমা করে আলমগীর বেশি সাড়া তুলেছিলেন। ১৯৮৫ সালে কামাল আহমেদ পরিচালিত ‘মা ও ছেলে’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুবাদে প্রথমবারের মত সেরা অভিনেতার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয় করেন আলমগীর।

বাংলাদেশের অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে ৯ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ আজীবন সম্মাননা পদক পাওয়ার রেকর্ড নায়ক আলমগীরেরই রয়েছে।

 

 

 

 

বিনোদন ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

১৯৫৫ সালে নির্মিত হয়েছিল বাড়িটি, যদিও এখন এই বাড়ির কোনো অস্তিত্ব নেই।

যে বাড়ি থেকে নায়ক আলমগীরের চলচ্চিত্রে পথচলা শুরু

আপডেট সময় ০৫:৫০:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫

 

সোশাল মিডিয়ায় ইংরেজি ‘এল’ অক্ষর আকৃতির লম্বা বারান্দার একটি বাড়ির ছবি দেখলে এক মুহূর্ত থমকে যাচ্ছেন অনেকেই। তবে ওই বাড়ির ছবিতেই কেবল চোখ আটকে যাচ্ছে তা নয়, সঙ্গের পোস্টটি পড়ার পরও অজানা একটি তথ্য সামনে আসছে।

তা হল- ঢাকার তেজগাঁওয়ের স্টেশন রোডের এই বাড়ি থেকে ঢাকাই সিনেমার নায়ক আলমগীরের অভিনয় জীবনের সূচনা হয়। ১৯৫৫ সালে নির্মিত ওই বাড়িটি আলমগীরের পৈতৃক সম্পত্তি। সাত দশক পেরিয়ে এখন ওই বাড়ির কোনো অস্তিত্ব না থাকলেও, ছবি রয়ে গেছে।

আর সেই ছবিটি ফেইসবুকে প্রকাশ করে আলমগীরের মেয়ে সংগীত শিল্পী আঁখি আলমগীর বলেছেন, তার বাবার জীবনের মোড় ঘোরানো সময়ের কথা।

আঁখি লিখেছেন, একদিন পরিচালক আলমগীর কুমকুম তার দাদার বাড়ির একটি অংশ ভাড়া নিতে এসে দেখেন এক সুদর্শন তরুণকে।

“সেই তরুণই পরবর্তীতে হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের নায়ক আলমগীর।”

১৯৭৩ সালে আলমগীর কুমকুম পরিচালিত ‘আমার জন্মভূমি’ সিনেমার মাধ্যমে রূপালি পর্দার জগতে পা রাখেন আলমগীর।

সে বছর সিনেমায় আসার আগে গীতিকার ও কবি খোশনূরকে বিয়ে করেন আলমগীর। এই দম্পতির সন্তান হলেন আঁখি আলমগীর। পরবর্তীতে আঁখির নামও রাখেন পরিচালক কুমকুম।

বাড়ি নিয়ে ফেইসবুকে আঁখি লিখেছেন, “পুরোটা দেখা যাচ্ছে না, এল শেফড এই বাড়িটি তেজগাঁও স্টেশন রোডে। আমার দাদার বাড়ি, আমার জন্যে অনেক বেশি আবেগের। কারণ, জন্মের পর থেকে অনেক বছর এখানে ছিলাম। যতটা সামনে দেখা যাচ্ছে, পেছনে তার চেয়েও বড় জায়গা। সন্ধ্যা হলে বিশাল জমির উপরে বানানো বিরাটাকার এই বাড়িতে ভয় পাওয়ার গল্প যেমন মনে আছে, তেমনি মনে আছে চাচা–ফুফু আর কাজিনদের সাথে কাটানো সুন্দর সময়ের গল্পও।”

দাদার বাথরুমের বাথটাব ছিল আঁখির শৈশবের প্রিয় খেলার জায়গা, আরেকটি বাথটাব বাড়ির পেছনে গাছতলায় কেন রাখা ছিল, তা আজও রহস্য রয়ে গেছে এই গায়িকার কাছে।

“ছাদে যাওয়া আমাদের ছোটদের একদম নিষেধ ছিল, আমরা কি আর কথা শুনতাম! চলে যেতাম যখন–তখন, পরে ভূতের ভয় দেখিয়ে আমাদের থামানো হল। মনে পড়ে, দাদি এখানেই মারা যান, তার অনেক আগে দাদা, তবে আমি দেখিনি দাদাকে।”

এখন আর নেই সেই বাড়ি। ভেঙে সেখানে উঠে গেছে আধুনিক অ্যাপার্টমেন্ট।

আঁখির কথায়, “এত বছর পরও যখন যাই, আগের বাড়ির একটা বাতাস কোথা থেকে যেন গায়ে হাত বুলিয়ে যায়… অতীত আমাকে খুঁজে নেয়।”

 

নায়ক আলমগীরের পুরো নাম আলমগীর হোসেন। পরিচালক আলমগীর কুমকুমের হাত ধরে সিনেমায় আসার পর নায়ক আলমগীর ‘দস্যুরাণী’, ‘চাষীর মেয়ে’, ‘গুণ্ডা’, ‘মাটির মায়া’সহ বহু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।

১৯৭৮ সালে মুক্তি পাওয়া দিলিপ বিশ্বাস পরিচালিত ‘জিঞ্জির’ সিনেমায় নায়ক রাজ রাজ্জাক ও সোহেল রানার সঙ্গে অন্যতম নায়ক হিসেবে আলমগীরের অভিনয় দর্শকদের নজর কাড়ে।

এছাড়া ১৯৮০ সালে আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘কসাই’ সিনেমায় কেন্দ্রীয় পুরুষ চরিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি পান আলমগীর। এ ছবিতে কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রে ছিলেন কবরী।

 

সামাজিক সিনেমা করে আলমগীর বেশি সাড়া তুলেছিলেন। ১৯৮৫ সালে কামাল আহমেদ পরিচালিত ‘মা ও ছেলে’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুবাদে প্রথমবারের মত সেরা অভিনেতার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয় করেন আলমগীর।

বাংলাদেশের অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে ৯ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ আজীবন সম্মাননা পদক পাওয়ার রেকর্ড নায়ক আলমগীরেরই রয়েছে।

 

 

 

 

বিনোদন ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম