১০:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
“বাংলাদেশে গরুর রগকাটা গেলে এখনো অধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। রগকাটা গরুর চিকিৎসা আমাদের কাছে নেই।”

রগ কেটে দেওয়ায় মৃত্যুযন্ত্রণায় ছটফট গরুর, অভিযোগ প্রতিবেশির বিরুদ্ধে

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ১১:০৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
  • / ৩৩ বার পড়া হয়েছে

গোপালগঞ্জে একটি গরুর পায়ের রগ বা লিগামেন্ট কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

 

গোপালগঞ্জে এক কৃষকের গরুর পায়ের রগ বা লিগামেন্ট কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। প্রাণি চিকিৎসকদের হাতেও এর কোনো চিকিৎসা না থাকায় মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছে অবলা প্রাণিটি।

পাশাপাশি অভিযোগ উঠেছে গরুকে আহত করার প্রতিবাদ করায় মারধর করে হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে কৃষকের।

সোমবার ২৮ জুলাই  দুপুরে দিকে মুকসুদপুর উপজেলার প্রভাকারদি গ্রামে এসব ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন মুকসুদপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নিয়ামত খান।

আহত গরুটির মালিক প্রভাকারদি গ্রামের আব্দুল মান্নান সরদারের ছেলে মো. সেলিম সরদার (৫০)।

তিনি বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সকালে আমি প্রতিবেশি মজিদ মোল্লার ছেলে ইমদাদ মোল্লার পাট ক্ষেতের পাশের ফাঁকা জায়গায় গরু গোছড় (বেঁধে) দিয়ে আসি। সেখানে গরু ঘাস খাচ্ছিল। পরে দুপুরের দিকে খবর পাই ইমদাদ মোল্লা আমার গরুর রগ কেটে দিয়েছে।”

তাৎক্ষণিকভাবে গরুটি উদ্ধার করে মুকসুদপুর উপজেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই কার্যালয়ের চিকিৎসকরা গরুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন। কিন্তু চিকিৎসকরা বলেছেন এ ধরনের আঘাতে গরুটির ভালো হওয়ার সুযোগ নেই।

এ ব্যাপারে জানতে গেলে ইমদাদ মোল্লা ও তার ছেলেরা পিটিয়ে তার হাত ভেঙে দিয়েছে অভিযোগ করে সেলিম আরও বলেন, “আমার গরুও এখন মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছে। আমি দুই যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছি না। এ ব্যাপারে আমি থানায় অভিযোগ দেব।”

প্রাণি সম্পদ কার্যালয় থেকে দেওয়া মেডিকেল প্রত্যয়নে দেশী বকনা জাতের আহত গরুটির বয়স ১ বছর ১১ মাস উল্লেখ করা হয়েছে। লালচে রংয়ের গরুটির পেছনের ডান পায়ের হাঁটুর নিচে রগ (লিগামেন্ট) ধারালো বস্তু দিয়ে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এতে প্রাণিটির শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে মেডিকেল প্রত্যয়নে বলা হয়েছে।

মুকসুদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “গরুটি আমাদের কাছে নিয়ে আসার পর আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। তবে কিছুদিন পর গরুর ক্ষত স্থানে পচন ধরতে পারে। তখন ধীরে ধীরে গরুটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে।”

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, “মানুষের রগ (লিগামেন্ট) কেটে গেলে চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। সঠিক চিকিৎসা পেলে মানুষ সুস্থ হয়ে ওঠে। কিন্তু বাংলাদেশে গরুর রগকাটা গেলে এখনো অধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। রগকাটা গরুর চিকিৎসা আমাদের কাছে নেই।”

মুকসুদপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর প্রভাকরদি গ্রামের নিয়ামত খান বলেন, “গরুর রগ কাটার প্রতিবাদ করায় গরুর মালিকের ডান হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছি।”

প্রতিবেশী ইমদাদ মোল্লার ছেলে রমজান মোল্লা বলেন, “গরুর রগ কাটা সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। সেলিম সরদারের গরু আমাদের পাটের ক্ষেতে এসে পাট ভাঙতে থাকে। পরে আমার বাবা গরুটি রশিসহ ধরে নিয়ে আসে। এ নিয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে আমার বাবা ও আমি আহত হয়েছি।”

এ ব্যাপারে মুকসুদপুর থানার ওসি মোস্তফা কামাল বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঘটনার বিষয়টি আমরা শুনেছি। তবে এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।”

 

 

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

“বাংলাদেশে গরুর রগকাটা গেলে এখনো অধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। রগকাটা গরুর চিকিৎসা আমাদের কাছে নেই।”

রগ কেটে দেওয়ায় মৃত্যুযন্ত্রণায় ছটফট গরুর, অভিযোগ প্রতিবেশির বিরুদ্ধে

আপডেট সময় ১১:০৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

 

গোপালগঞ্জে এক কৃষকের গরুর পায়ের রগ বা লিগামেন্ট কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। প্রাণি চিকিৎসকদের হাতেও এর কোনো চিকিৎসা না থাকায় মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছে অবলা প্রাণিটি।

পাশাপাশি অভিযোগ উঠেছে গরুকে আহত করার প্রতিবাদ করায় মারধর করে হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে কৃষকের।

সোমবার ২৮ জুলাই  দুপুরে দিকে মুকসুদপুর উপজেলার প্রভাকারদি গ্রামে এসব ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন মুকসুদপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নিয়ামত খান।

আহত গরুটির মালিক প্রভাকারদি গ্রামের আব্দুল মান্নান সরদারের ছেলে মো. সেলিম সরদার (৫০)।

তিনি বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সকালে আমি প্রতিবেশি মজিদ মোল্লার ছেলে ইমদাদ মোল্লার পাট ক্ষেতের পাশের ফাঁকা জায়গায় গরু গোছড় (বেঁধে) দিয়ে আসি। সেখানে গরু ঘাস খাচ্ছিল। পরে দুপুরের দিকে খবর পাই ইমদাদ মোল্লা আমার গরুর রগ কেটে দিয়েছে।”

তাৎক্ষণিকভাবে গরুটি উদ্ধার করে মুকসুদপুর উপজেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই কার্যালয়ের চিকিৎসকরা গরুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন। কিন্তু চিকিৎসকরা বলেছেন এ ধরনের আঘাতে গরুটির ভালো হওয়ার সুযোগ নেই।

এ ব্যাপারে জানতে গেলে ইমদাদ মোল্লা ও তার ছেলেরা পিটিয়ে তার হাত ভেঙে দিয়েছে অভিযোগ করে সেলিম আরও বলেন, “আমার গরুও এখন মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছে। আমি দুই যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছি না। এ ব্যাপারে আমি থানায় অভিযোগ দেব।”

প্রাণি সম্পদ কার্যালয় থেকে দেওয়া মেডিকেল প্রত্যয়নে দেশী বকনা জাতের আহত গরুটির বয়স ১ বছর ১১ মাস উল্লেখ করা হয়েছে। লালচে রংয়ের গরুটির পেছনের ডান পায়ের হাঁটুর নিচে রগ (লিগামেন্ট) ধারালো বস্তু দিয়ে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এতে প্রাণিটির শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে মেডিকেল প্রত্যয়নে বলা হয়েছে।

মুকসুদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “গরুটি আমাদের কাছে নিয়ে আসার পর আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। তবে কিছুদিন পর গরুর ক্ষত স্থানে পচন ধরতে পারে। তখন ধীরে ধীরে গরুটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে।”

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, “মানুষের রগ (লিগামেন্ট) কেটে গেলে চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। সঠিক চিকিৎসা পেলে মানুষ সুস্থ হয়ে ওঠে। কিন্তু বাংলাদেশে গরুর রগকাটা গেলে এখনো অধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। রগকাটা গরুর চিকিৎসা আমাদের কাছে নেই।”

মুকসুদপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর প্রভাকরদি গ্রামের নিয়ামত খান বলেন, “গরুর রগ কাটার প্রতিবাদ করায় গরুর মালিকের ডান হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছি।”

প্রতিবেশী ইমদাদ মোল্লার ছেলে রমজান মোল্লা বলেন, “গরুর রগ কাটা সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। সেলিম সরদারের গরু আমাদের পাটের ক্ষেতে এসে পাট ভাঙতে থাকে। পরে আমার বাবা গরুটি রশিসহ ধরে নিয়ে আসে। এ নিয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে আমার বাবা ও আমি আহত হয়েছি।”

এ ব্যাপারে মুকসুদপুর থানার ওসি মোস্তফা কামাল বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঘটনার বিষয়টি আমরা শুনেছি। তবে এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।”

 

 

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম