০৪:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫
অনেক সবজি আছে যেগুলোর পুষ্টিগুণ বেশি তাপে নষ্ট হয়।

রান্নার পদ্ধতিতে সবজির পুষ্টিগুণ থাকবে অটুট

লাইফস্টাইল ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ০৫:০২:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৪০ বার পড়া হয়েছে

অনেকের কাছে সবজি খাওয়া ছিল শুধু স্বাস্থ্যগত বাধ্যবাধকতা, মজাদার কোনো খাবার নয়। তবে সময়ের সাথে সাথে বোঝা যায়, সবজি শুধু পুষ্টিকরই নয়, সঠিকভাবে প্রস্তুত করলে এগুলো সুস্বাদুও হতে পারে।

 

অনেকের কাছে সবজি খাওয়া ছিল শুধু স্বাস্থ্যগত বাধ্যবাধকতা, মজাদার কোনো খাবার নয়। তবে সময়ের সাথে সাথে বোঝা যায়, সবজি শুধু পুষ্টিকরই নয়, সঠিকভাবে প্রস্তুত করলে এগুলো সুস্বাদুও হতে পারে।

তবে সবজি রান্নার ধরন অনুযায়ী এর পুষ্টিগুণের পরিমাণ কমে বা বেড়ে যেতে পারে।

কানাডাভিত্তিক পুষ্টিবিদ অ্যাভেরি জেঙ্কার রিয়েলসিম্পল ডটকম-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেন, “প্রতিটি সবজির জন্য আলাদা প্রস্তুত পদ্ধতি কার্যকর হতে পারে। তাই কোন সবজি কাঁচা, হালকা সেদ্ধ বা সম্পূর্ণ রান্না করা উচিত—এটি জানা জরুরি।”

কাঁচা সবজির জৌলুস

কাঁচা সবজির প্রস্তুত পদ্ধতি সহজ। কারণ এতে চুলার প্রয়োজন নেই, শুধু ধুয়ে কেটে খাওয়া যায়। পুষ্টির দিক থেকেও এগুলো অনেক ক্ষেত্রে সেরা।

অ্যাভেরি জেঙ্কার বলেন, “সাধারণভাবে, কাঁচা সবজিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পলিফেনল, বি ভিটামিন এবং ভিটামিন সি-র মাত্রা সর্বোচ্চ থাকে।”

লেটুস: তাপে পুষ্টি দ্রুত নষ্ট হয়, তাই কাঁচাই সেরা।

শসা: খোসাসহ খেলে আঁশ ও পলিফেনলস’য়ের পরিমাণ বাড়ে।

ক্যাপসিকাম: ভিটামিন সি-র অন্যতম সেরা উৎস।

সালাদে, দই মিশিয়ে দিয়ে কিংবা সরাসরি নাস্তা হিসেবে কাঁচা সবজি খাওয়া সহজ ও স্বাস্থ্যকর।

হালকা রান্নায় উপকারী সবজি

কিছু সবজি কাঁচা বা রান্না— দুভাবেই খাওয়া যায়। তবে তাপে যত কম সময় রাখা যায়, তত বেশি পুষ্টি থাকে।

জেঙ্কার বলেন, “রসুন ও পেঁয়াজের মতো সবজিতে অ্যালিসিন ও কুয়ারসেটিনের মতো তাপ-সংবেদনশীল উপাদান থাকে, যা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। তবে দীর্ঘ সময় বেশি তাপে রাখলে এগুলো নষ্ট হতে পারে।”

হালকা রান্নায় উপকারী সবজির মধ্যে রয়েছে গাজর, মাশরুম, বরবটি, ব্রকলি, ফুলকপি, বাঁধাকপির মতো ক্রুসিফেরাস সবজি।

গবেষণা অনুযায়ী, স্টিম বা মাইক্রোওয়েভে রান্না করলে এসব সবজির পুষ্টি সবচেয়ে ভালোভাবে সংরক্ষিত থাকে।

বিশেষ করে ব্রকলি রান্নার আগে কেটে রাখলে ‘সালফোরাফেন’ নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ বেড়ে যায়, যা প্রদাহ কমাতে সহায়ক।

রান্না করলে আরও পুষ্টিকর হয় যে সবজি

সবাই মনে করে কাঁচা সবজিই বেশি পুষ্টিকর। তবে কিছু সবজি রান্নায় মান বাড়ে।

আলু: এর খোসায় আঁশ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বেশি থাকে, যা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তবে কাঁচা আলু খাওয়া উচিত নয়, কারণ এটি হজমে সমস্যা করতে পারে।

পালংশাক: থাকে অক্সালেট, যা ক্যালসিয়াম ও লৌহের সাথে যুক্ত হয়ে শরীরে শোষণ বাধাগ্রস্ত করে।

অ্যাভেরি জেঙ্কার মন্তব্য করেন, “রান্না করলে অক্সালেটের পরিমাণ কমে যায়। ফলে ক্যালসিয়াম ও লৌহ সহজে শোষিত হয়।”

টমেটো: হালকা সিদ্ধ করলে ‘লাইকোপেন’ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ বেড়ে যায়, যা হৃদস্বাস্থ্য ও ত্বকের জন্য ভালো।

বাঁধাকপি: কেটে ভাপানো বা মাইক্রোওয়েভ করলে এর পুষ্টি ভালোভাবে বজায় থাকে।

পুষ্টি রক্ষায় রান্নার সেরা পদ্ধতি

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভাপানো মানে স্টিম করা ও মাইক্রোওয়েভে রান্না পদ্ধতিতে পুষ্টি ক্ষয় সবচেয়ে কম হয়।

অন্যদিকে, বেশি সময় ধরে সেদ্ধ করা, ভাজা বা রোস্ট করলে তাপ-সংবেদনশীল ভিটামিন (যেমন- ভিটামিন সি এবং কিছু বি ভিটামিন দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়।

তবে অ্যাভেরি জেঙ্কার মনে করিয়ে দেন, “কোনো একটি নির্দিষ্ট ‘সেরা’ রান্নার পদ্ধতি নেই। রান্নার ধরন পরিবর্তন করলে খাবারে বৈচিত্র্য আসে এবং মানুষ বেশি পরিমাণে সবজি খায়—যেটাই শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সাফল্য।”

 

 

 

লাইফস্টাইল ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

অনেক সবজি আছে যেগুলোর পুষ্টিগুণ বেশি তাপে নষ্ট হয়।

রান্নার পদ্ধতিতে সবজির পুষ্টিগুণ থাকবে অটুট

আপডেট সময় ০৫:০২:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫

 

অনেকের কাছে সবজি খাওয়া ছিল শুধু স্বাস্থ্যগত বাধ্যবাধকতা, মজাদার কোনো খাবার নয়। তবে সময়ের সাথে সাথে বোঝা যায়, সবজি শুধু পুষ্টিকরই নয়, সঠিকভাবে প্রস্তুত করলে এগুলো সুস্বাদুও হতে পারে।

তবে সবজি রান্নার ধরন অনুযায়ী এর পুষ্টিগুণের পরিমাণ কমে বা বেড়ে যেতে পারে।

কানাডাভিত্তিক পুষ্টিবিদ অ্যাভেরি জেঙ্কার রিয়েলসিম্পল ডটকম-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেন, “প্রতিটি সবজির জন্য আলাদা প্রস্তুত পদ্ধতি কার্যকর হতে পারে। তাই কোন সবজি কাঁচা, হালকা সেদ্ধ বা সম্পূর্ণ রান্না করা উচিত—এটি জানা জরুরি।”

কাঁচা সবজির জৌলুস

কাঁচা সবজির প্রস্তুত পদ্ধতি সহজ। কারণ এতে চুলার প্রয়োজন নেই, শুধু ধুয়ে কেটে খাওয়া যায়। পুষ্টির দিক থেকেও এগুলো অনেক ক্ষেত্রে সেরা।

অ্যাভেরি জেঙ্কার বলেন, “সাধারণভাবে, কাঁচা সবজিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পলিফেনল, বি ভিটামিন এবং ভিটামিন সি-র মাত্রা সর্বোচ্চ থাকে।”

লেটুস: তাপে পুষ্টি দ্রুত নষ্ট হয়, তাই কাঁচাই সেরা।

শসা: খোসাসহ খেলে আঁশ ও পলিফেনলস’য়ের পরিমাণ বাড়ে।

ক্যাপসিকাম: ভিটামিন সি-র অন্যতম সেরা উৎস।

সালাদে, দই মিশিয়ে দিয়ে কিংবা সরাসরি নাস্তা হিসেবে কাঁচা সবজি খাওয়া সহজ ও স্বাস্থ্যকর।

হালকা রান্নায় উপকারী সবজি

কিছু সবজি কাঁচা বা রান্না— দুভাবেই খাওয়া যায়। তবে তাপে যত কম সময় রাখা যায়, তত বেশি পুষ্টি থাকে।

জেঙ্কার বলেন, “রসুন ও পেঁয়াজের মতো সবজিতে অ্যালিসিন ও কুয়ারসেটিনের মতো তাপ-সংবেদনশীল উপাদান থাকে, যা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। তবে দীর্ঘ সময় বেশি তাপে রাখলে এগুলো নষ্ট হতে পারে।”

হালকা রান্নায় উপকারী সবজির মধ্যে রয়েছে গাজর, মাশরুম, বরবটি, ব্রকলি, ফুলকপি, বাঁধাকপির মতো ক্রুসিফেরাস সবজি।

গবেষণা অনুযায়ী, স্টিম বা মাইক্রোওয়েভে রান্না করলে এসব সবজির পুষ্টি সবচেয়ে ভালোভাবে সংরক্ষিত থাকে।

বিশেষ করে ব্রকলি রান্নার আগে কেটে রাখলে ‘সালফোরাফেন’ নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ বেড়ে যায়, যা প্রদাহ কমাতে সহায়ক।

রান্না করলে আরও পুষ্টিকর হয় যে সবজি

সবাই মনে করে কাঁচা সবজিই বেশি পুষ্টিকর। তবে কিছু সবজি রান্নায় মান বাড়ে।

আলু: এর খোসায় আঁশ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বেশি থাকে, যা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তবে কাঁচা আলু খাওয়া উচিত নয়, কারণ এটি হজমে সমস্যা করতে পারে।

পালংশাক: থাকে অক্সালেট, যা ক্যালসিয়াম ও লৌহের সাথে যুক্ত হয়ে শরীরে শোষণ বাধাগ্রস্ত করে।

অ্যাভেরি জেঙ্কার মন্তব্য করেন, “রান্না করলে অক্সালেটের পরিমাণ কমে যায়। ফলে ক্যালসিয়াম ও লৌহ সহজে শোষিত হয়।”

টমেটো: হালকা সিদ্ধ করলে ‘লাইকোপেন’ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ বেড়ে যায়, যা হৃদস্বাস্থ্য ও ত্বকের জন্য ভালো।

বাঁধাকপি: কেটে ভাপানো বা মাইক্রোওয়েভ করলে এর পুষ্টি ভালোভাবে বজায় থাকে।

পুষ্টি রক্ষায় রান্নার সেরা পদ্ধতি

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভাপানো মানে স্টিম করা ও মাইক্রোওয়েভে রান্না পদ্ধতিতে পুষ্টি ক্ষয় সবচেয়ে কম হয়।

অন্যদিকে, বেশি সময় ধরে সেদ্ধ করা, ভাজা বা রোস্ট করলে তাপ-সংবেদনশীল ভিটামিন (যেমন- ভিটামিন সি এবং কিছু বি ভিটামিন দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়।

তবে অ্যাভেরি জেঙ্কার মনে করিয়ে দেন, “কোনো একটি নির্দিষ্ট ‘সেরা’ রান্নার পদ্ধতি নেই। রান্নার ধরন পরিবর্তন করলে খাবারে বৈচিত্র্য আসে এবং মানুষ বেশি পরিমাণে সবজি খায়—যেটাই শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সাফল্য।”

 

 

 

লাইফস্টাইল ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম