১১:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫
ছুটির দিন কাটিয়ে সামনের সপ্তাহটা গুছিয়ে শুরু করতে চাই সঠিক সমন্বয়।

সপ্তাহজুড়ে সময় বাঁচাতে ছুটির দিনের পরিকল্পনা

লাইফস্টাইল ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ০৪:২৯:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ অগাস্ট ২০২৫
  • / ২৭ বার পড়া হয়েছে

ছুটির দিন কাটিয়ে সামনের সপ্তাহটা গুছিয়ে শুরু করতে চাই সঠিক সমন্বয়।

 

সপ্তাহের ছুটির দিন মানেই শুধুই বিশ্রামের সময় নয়, বরং এই সময়কে একটু পরিকল্পিতভাবে কাজে লাগালে পরের পুরো সপ্তাহ হয়ে উঠতে পারে কম চাপের, সহজ ও গোছানো।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংগঠক লরি হাইস রিয়েল সিম্পলডটকম-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেন, “সাপ্তাহিক ছুটি শুধু কাপড় ধোয়া বা বারান্দায় বসে চা খাওয়ার জন্যই নয়। সময়টি হতে পারে সপ্তাহকে সহজ করে তোলার গোপন হাতিয়ার।”

সাংগঠনিক বিশেষজ্ঞদের মতে, “ছুটির দিনে মাত্র কয়েকটি ছোট অভ্যাস গড়ে তুললে সময় যেমন বাঁচে তেমনি মানসিক চাপও কমে।”

 

পোশাকের আলমারি গোছানো

সপ্তাহ শেষে যদি পোশাকের আলমারিটি যুদ্ধক্ষেত্রের মতো দেখায়, তাহলে সেটা গুছিয়ে রাখার সময় এসেছে। বিশেষ করে কোনো বিশেষ দিনে পছন্দের জুতা বা শাড়ি খুঁজতে গিয়ে দেরি হওয়া বা বিরক্ত হওয়া এড়াতে সপ্তাহান্তে আলমারি গোছানো জরুরি।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেন্ট লুইস ক্লোসেট কো.’-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাঞ্জেলিয়া ইয়র্ক একই প্রতিবেদনে বলেন, “মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় নিয়ে কাপড়গুলো যথাস্থানে রেখে দিন, হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে দিন, সোয়েটার ভাঁজ করে রাখুন এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ড্রয়ার বা ঝুড়িতে ফেরত দিন।”

নিয়মিত এই ছোট কাজটি আলমারিকে সচল ও ব্যবহারযোগ্য রাখে।

 

সপ্তাহের পোশাক পরিকল্পনা

সকালের ব্যস্ততা, গোসল, নাস্তা, সাজগোজ—সব মিলিয়ে এক বিশৃঙ্খল সময়। এর মধ্যে আবার কী পরবেন তা ভাবা মানে আরও একধাপ চাপ নেওয়া। তাই আগেভাগেই পরিকল্পনা করে রাখা ভালো।

অ্যাঞ্জেলিয়া ইয়র্ক বলেন, “ব্যস্ত সকালে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ক্লান্তি কাজ করতেই পারে। আমি একটি ‘টেলিস্কোপিং রড’ বা আলমারির একটি অংশে তিন থেকে পাঁচটি পোশাক পরিকল্পনা করে রাখি, আবহাওয়া ও ক্যালেন্ডার অনুযায়ী।”

এতে করে সময় যেমন বাঁচে, তেমনি নিজের সাজ-পোশাক নিয়েও আত্মবিশ্বাস বাড়ে।

 

ছোট একটি জায়গা গোছানো

পুরো সপ্তাহে ঘর অগোছালো হয়ে পড়া স্বাভাবিক। তবে পুরো ছুটির দিন খালি পরিষ্কার করে কাটানো কারও ভালো লাগে না।

তাই অ্যাঞ্জেলিয়া ইয়র্ক পরামর্শ দেন, “প্রতি সপ্তাহে মাত্র ১০ মিনিট সময় নিয়ে একটি ছোট জায়গা যেমন- ড্রয়ার, তাক বা নির্দিষ্ট ক্যাটাগরি (যেমন মোজা বা ওড়না) থেকে অপ্রয়োজনীয় জিনিস সরিয়ে ফেলুন।”

এই ছোট ছোট পরিষ্কারই দীর্ঘমেয়াদে স্বস্তি এনে দেবে।

 

খাবারের পরিকল্পনা

বিনা পরিকল্পনায় বাজারে গিয়ে অনেকেই প্রয়োজনের অতিরিক্ত জিনিস কিনে ফেলেন। আবার কিছু দরকারি উপাদান ভুলে যাওয়ায় মাঝেমধ্যেই দোকানে ছোটাছুটি করতে হয়।

এর থেকে মুক্তি পেতে চাইলে সপ্তাহের খাবারের পরিকল্পনা ছুটির দিনেই করে ফেলা উচিত।

লরি হাইস বলেন, “বাজারে যাওয়ার আগে দেখে নিন ফ্রিজ ও কাবার্ডে কী আছে। এর থেকেই সাপ্তাহিক রান্নার তালিকা ঠিক করতে পারেন।”

হাইস পরামর্শ দেন, “রান্নার মেনু একটি বোর্ডে লিখে রাখলে পুরো পরিবার জানে কোন দিনে কী রান্না হবে। এতে সময় যেমন বাঁচে তেমনি বাজেটও নিয়ন্ত্রণে থাকে।”

 

জিনিসপত্রের জন্য আলাদা ঝুড়ি

সপ্তাহের মধ্যে কোথা থেকে যেন ঘরে অপ্রয়োজনীয় জিনিস জমে যায়।

তাই হাইস পরামর্শ দেন, “তিনটি ঝুড়ি রাখুন। একটি অনুদানের জন্য, একটি ফেলে দেওয়ার জন্য আর একটি পুনর্ব্যবহারের জন্য। ছুটির দিনে পরিবারের সবাইকে বলুন, তাদের অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এসব ঝুড়িতে ফেলতে।”

এরপর ছুটির রাতে এগুলো আলাদা করে যথাযথ জায়গায় ফেলে দিন। এই পদ্ধতি ঘরকে গোছানো রাখে এবং অপ্রয়োজনীয় জিনিস জমে থাকার ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকা যায়।

 

ক্যালেন্ডার সমন্বয়

পরিবারের সবাই ব্যস্ত থাকলে ভুল বোঝাবুঝি বা রুটিন মেলানো ঝামেলাকর হতে পারে। তাই ছুটির দিনে একটি নির্দিষ্ট সময়ে সবাই মিলে বসে ক্যালেন্ডার মিলিয়ে নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।

লরি হাইস বলেন, “নিজের অথবা পুরো পরিবারের অনুষ্ঠান, স্কুল কার্যক্রম, কাজের সময়সূচি ও পরিকল্পনাগুলো একবার দেখে নিয়ে সব প্ল্যানার ও ডিভাইসে মিলিয়ে নিন।”

এতে কেউ কারও কাজের সঙ্গে বিরোধ তৈরি না করেই নিজেদের সময় ও বিশ্রাম ঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে।

যদি পরিবারের সদস্যরা ডিজিটাল ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে, তাহলে গুগল ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে একটি ‘শেয়ারড ক্যালেন্ডার’ চালু করা যেতে পারে। এতে সবার সময়সূচি আপডেট রাখবে। আর বাকি সময়টা অন্য কিছু গোছাতে ব্যয় করা যাবে।

 

 

লাইফস্টাইল ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

ছুটির দিন কাটিয়ে সামনের সপ্তাহটা গুছিয়ে শুরু করতে চাই সঠিক সমন্বয়।

সপ্তাহজুড়ে সময় বাঁচাতে ছুটির দিনের পরিকল্পনা

আপডেট সময় ০৪:২৯:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ অগাস্ট ২০২৫

 

সপ্তাহের ছুটির দিন মানেই শুধুই বিশ্রামের সময় নয়, বরং এই সময়কে একটু পরিকল্পিতভাবে কাজে লাগালে পরের পুরো সপ্তাহ হয়ে উঠতে পারে কম চাপের, সহজ ও গোছানো।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংগঠক লরি হাইস রিয়েল সিম্পলডটকম-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেন, “সাপ্তাহিক ছুটি শুধু কাপড় ধোয়া বা বারান্দায় বসে চা খাওয়ার জন্যই নয়। সময়টি হতে পারে সপ্তাহকে সহজ করে তোলার গোপন হাতিয়ার।”

সাংগঠনিক বিশেষজ্ঞদের মতে, “ছুটির দিনে মাত্র কয়েকটি ছোট অভ্যাস গড়ে তুললে সময় যেমন বাঁচে তেমনি মানসিক চাপও কমে।”

 

পোশাকের আলমারি গোছানো

সপ্তাহ শেষে যদি পোশাকের আলমারিটি যুদ্ধক্ষেত্রের মতো দেখায়, তাহলে সেটা গুছিয়ে রাখার সময় এসেছে। বিশেষ করে কোনো বিশেষ দিনে পছন্দের জুতা বা শাড়ি খুঁজতে গিয়ে দেরি হওয়া বা বিরক্ত হওয়া এড়াতে সপ্তাহান্তে আলমারি গোছানো জরুরি।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেন্ট লুইস ক্লোসেট কো.’-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাঞ্জেলিয়া ইয়র্ক একই প্রতিবেদনে বলেন, “মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় নিয়ে কাপড়গুলো যথাস্থানে রেখে দিন, হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে দিন, সোয়েটার ভাঁজ করে রাখুন এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ড্রয়ার বা ঝুড়িতে ফেরত দিন।”

নিয়মিত এই ছোট কাজটি আলমারিকে সচল ও ব্যবহারযোগ্য রাখে।

 

সপ্তাহের পোশাক পরিকল্পনা

সকালের ব্যস্ততা, গোসল, নাস্তা, সাজগোজ—সব মিলিয়ে এক বিশৃঙ্খল সময়। এর মধ্যে আবার কী পরবেন তা ভাবা মানে আরও একধাপ চাপ নেওয়া। তাই আগেভাগেই পরিকল্পনা করে রাখা ভালো।

অ্যাঞ্জেলিয়া ইয়র্ক বলেন, “ব্যস্ত সকালে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ক্লান্তি কাজ করতেই পারে। আমি একটি ‘টেলিস্কোপিং রড’ বা আলমারির একটি অংশে তিন থেকে পাঁচটি পোশাক পরিকল্পনা করে রাখি, আবহাওয়া ও ক্যালেন্ডার অনুযায়ী।”

এতে করে সময় যেমন বাঁচে, তেমনি নিজের সাজ-পোশাক নিয়েও আত্মবিশ্বাস বাড়ে।

 

ছোট একটি জায়গা গোছানো

পুরো সপ্তাহে ঘর অগোছালো হয়ে পড়া স্বাভাবিক। তবে পুরো ছুটির দিন খালি পরিষ্কার করে কাটানো কারও ভালো লাগে না।

তাই অ্যাঞ্জেলিয়া ইয়র্ক পরামর্শ দেন, “প্রতি সপ্তাহে মাত্র ১০ মিনিট সময় নিয়ে একটি ছোট জায়গা যেমন- ড্রয়ার, তাক বা নির্দিষ্ট ক্যাটাগরি (যেমন মোজা বা ওড়না) থেকে অপ্রয়োজনীয় জিনিস সরিয়ে ফেলুন।”

এই ছোট ছোট পরিষ্কারই দীর্ঘমেয়াদে স্বস্তি এনে দেবে।

 

খাবারের পরিকল্পনা

বিনা পরিকল্পনায় বাজারে গিয়ে অনেকেই প্রয়োজনের অতিরিক্ত জিনিস কিনে ফেলেন। আবার কিছু দরকারি উপাদান ভুলে যাওয়ায় মাঝেমধ্যেই দোকানে ছোটাছুটি করতে হয়।

এর থেকে মুক্তি পেতে চাইলে সপ্তাহের খাবারের পরিকল্পনা ছুটির দিনেই করে ফেলা উচিত।

লরি হাইস বলেন, “বাজারে যাওয়ার আগে দেখে নিন ফ্রিজ ও কাবার্ডে কী আছে। এর থেকেই সাপ্তাহিক রান্নার তালিকা ঠিক করতে পারেন।”

হাইস পরামর্শ দেন, “রান্নার মেনু একটি বোর্ডে লিখে রাখলে পুরো পরিবার জানে কোন দিনে কী রান্না হবে। এতে সময় যেমন বাঁচে তেমনি বাজেটও নিয়ন্ত্রণে থাকে।”

 

জিনিসপত্রের জন্য আলাদা ঝুড়ি

সপ্তাহের মধ্যে কোথা থেকে যেন ঘরে অপ্রয়োজনীয় জিনিস জমে যায়।

তাই হাইস পরামর্শ দেন, “তিনটি ঝুড়ি রাখুন। একটি অনুদানের জন্য, একটি ফেলে দেওয়ার জন্য আর একটি পুনর্ব্যবহারের জন্য। ছুটির দিনে পরিবারের সবাইকে বলুন, তাদের অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এসব ঝুড়িতে ফেলতে।”

এরপর ছুটির রাতে এগুলো আলাদা করে যথাযথ জায়গায় ফেলে দিন। এই পদ্ধতি ঘরকে গোছানো রাখে এবং অপ্রয়োজনীয় জিনিস জমে থাকার ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকা যায়।

 

ক্যালেন্ডার সমন্বয়

পরিবারের সবাই ব্যস্ত থাকলে ভুল বোঝাবুঝি বা রুটিন মেলানো ঝামেলাকর হতে পারে। তাই ছুটির দিনে একটি নির্দিষ্ট সময়ে সবাই মিলে বসে ক্যালেন্ডার মিলিয়ে নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।

লরি হাইস বলেন, “নিজের অথবা পুরো পরিবারের অনুষ্ঠান, স্কুল কার্যক্রম, কাজের সময়সূচি ও পরিকল্পনাগুলো একবার দেখে নিয়ে সব প্ল্যানার ও ডিভাইসে মিলিয়ে নিন।”

এতে কেউ কারও কাজের সঙ্গে বিরোধ তৈরি না করেই নিজেদের সময় ও বিশ্রাম ঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে।

যদি পরিবারের সদস্যরা ডিজিটাল ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে, তাহলে গুগল ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে একটি ‘শেয়ারড ক্যালেন্ডার’ চালু করা যেতে পারে। এতে সবার সময়সূচি আপডেট রাখবে। আর বাকি সময়টা অন্য কিছু গোছাতে ব্যয় করা যাবে।

 

 

লাইফস্টাইল ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম