০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
“পড়াশোনা যে হবে স্কুল কয়দিন খোলা থাকছে,” বলেন তিনি।

সাক্ষরতার হার ‘সত্যিকার অর্থে কমও হতে পারে’, বললেন উপদেষ্টা বিধান

সাবরিনা জাহান- বিশেষ প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ০১:২৩:১৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৩০ বার পড়া হয়েছে

 

সরকারি হিসাবে দেশে সাক্ষরতার হার ৭৭ দশমিক ৯ শতাংশ হলেও ‘সত্যিকার অর্থে’ তা আরও কম হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।

রোববার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, “যে পরিসংখ্যান আছে, সেটি দেখাচ্ছে আমাদের নিরক্ষরতার হার ২২ শতাংশের মতো।

“কিন্তু আপনি যদি স্টাডি করেন, তাহলে সত্যিকার অর্থে সাক্ষরতার আরও কমও হতে পারে। এটা হচ্ছে আমার পর্যবেক্ষণ।”

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা বলেন, “বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ প্রতিবেদন ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০২৪’ অনুযায়ী দেশের সাত বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর মধ্যে বর্তমানে সাক্ষরতার হার ৭৭ দশমিক ৯ শতাংশ।

“অর্থাৎ প্রায় ২২ দশমিক ১ শতাংশ জনগোষ্ঠী এখনো নিরক্ষর।”

তিনি বলেন, “এ জনগোষ্ঠী মূলত বিদ্যালয় বহির্ভূত বা ঝরে পড়া শিশু এবং শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ।”

পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান বলেন, “যেখানে আমাদের ঝরে পড়া কমে যাচ্ছিল, হঠাৎ করে ঝরে পড়া বেড়ে গেল। এটা একটা উদ্বেগের বিষয়।”

সাধারণত সরকার নিজেদের প্রচারিত তথ্যের বিপরীতে যাওয়া তথ্য চেপে রাখার চেষ্টা করলেও অন্তর্বর্তী সরকার তা করছে না বলেও দাবি করেন তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, “আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, আমরা খুবই লিমিটেড ম্যান্ডেট নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। ফলে সত্যটাকে ধামাচাপা দেওয়ার ইচ্ছা আমরা রাখি না। আমরা যা আছে তা বলতে চাই। কারণ আমাদের উদ্দেশ্যটা ভালো।”

 

প্রাথমিকে ছুটি কমানোর চিন্তা

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছুটি কমানোর চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, “আপনারা দেখেন ক্যালেন্ডারে ৩৬৫ দিনের মধ্যে আমার স্কুল (সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়) খোলা থাকছে কয়দিন? ১৮০ দিন। খেয়াল করছেন ব্যাপারটা? পড়াশোনা যে হবে স্কুল কয়দিন খোলা থাকছে?

“আমাদের অনেক অপ্রয়োজনীয় ছুটি রয়ে গেছে। আমরা চেষ্টা করছি, ছুটি কি কিছুটা কমিয়ে আনা যায়? আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে সে চেষ্টা করছি।”

 

শিক্ষকদের আন্দোলনের ‘যুক্তি নেই’

সরকার দাবি দাওয়া মেনে নেওয়ায় প্রাথমিকের শিক্ষকদের আন্দোলন করার মতো কোনো যুক্তি নেই।

উপদেষ্টা বলেন, “শিক্ষকদের একটা গুরুত্বপূর্ণ দাবি প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড। আমি মনে করি, এটা গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। কারণ ২০১৪ সালে তাদের দ্বিতীয় শ্রেণি ঘোষণা করা হল। কিন্তু তাদের তৃতীয় শ্রেণির আর্থিক সুবিধা কেটে দেওয়া হল। কিন্তু তাদের বেতন বাড়ানো হল না। তারা মামলা করে, মামলা জিতেছে।

কিন্তু আমাদের আদালতের নিয়ম হচ্ছে যে ৪৫ জন মামলা করেছে তাদের দিতে হবে। সরকার মনে করছে যেহেতু আদালত বলছে, তাই সবাই পেতে পারে। তাদের বড় একটা দাবি মিটলো। তাদের বড় একটা দাবি মিটলো।”

 

 

সাবরিনা জাহান- বিশেষ প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

“পড়াশোনা যে হবে স্কুল কয়দিন খোলা থাকছে,” বলেন তিনি।

সাক্ষরতার হার ‘সত্যিকার অর্থে কমও হতে পারে’, বললেন উপদেষ্টা বিধান

আপডেট সময় ০১:২৩:১৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 

সরকারি হিসাবে দেশে সাক্ষরতার হার ৭৭ দশমিক ৯ শতাংশ হলেও ‘সত্যিকার অর্থে’ তা আরও কম হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।

রোববার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, “যে পরিসংখ্যান আছে, সেটি দেখাচ্ছে আমাদের নিরক্ষরতার হার ২২ শতাংশের মতো।

“কিন্তু আপনি যদি স্টাডি করেন, তাহলে সত্যিকার অর্থে সাক্ষরতার আরও কমও হতে পারে। এটা হচ্ছে আমার পর্যবেক্ষণ।”

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা বলেন, “বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ প্রতিবেদন ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০২৪’ অনুযায়ী দেশের সাত বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর মধ্যে বর্তমানে সাক্ষরতার হার ৭৭ দশমিক ৯ শতাংশ।

“অর্থাৎ প্রায় ২২ দশমিক ১ শতাংশ জনগোষ্ঠী এখনো নিরক্ষর।”

তিনি বলেন, “এ জনগোষ্ঠী মূলত বিদ্যালয় বহির্ভূত বা ঝরে পড়া শিশু এবং শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ।”

পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান বলেন, “যেখানে আমাদের ঝরে পড়া কমে যাচ্ছিল, হঠাৎ করে ঝরে পড়া বেড়ে গেল। এটা একটা উদ্বেগের বিষয়।”

সাধারণত সরকার নিজেদের প্রচারিত তথ্যের বিপরীতে যাওয়া তথ্য চেপে রাখার চেষ্টা করলেও অন্তর্বর্তী সরকার তা করছে না বলেও দাবি করেন তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, “আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, আমরা খুবই লিমিটেড ম্যান্ডেট নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। ফলে সত্যটাকে ধামাচাপা দেওয়ার ইচ্ছা আমরা রাখি না। আমরা যা আছে তা বলতে চাই। কারণ আমাদের উদ্দেশ্যটা ভালো।”

 

প্রাথমিকে ছুটি কমানোর চিন্তা

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছুটি কমানোর চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, “আপনারা দেখেন ক্যালেন্ডারে ৩৬৫ দিনের মধ্যে আমার স্কুল (সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়) খোলা থাকছে কয়দিন? ১৮০ দিন। খেয়াল করছেন ব্যাপারটা? পড়াশোনা যে হবে স্কুল কয়দিন খোলা থাকছে?

“আমাদের অনেক অপ্রয়োজনীয় ছুটি রয়ে গেছে। আমরা চেষ্টা করছি, ছুটি কি কিছুটা কমিয়ে আনা যায়? আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে সে চেষ্টা করছি।”

 

শিক্ষকদের আন্দোলনের ‘যুক্তি নেই’

সরকার দাবি দাওয়া মেনে নেওয়ায় প্রাথমিকের শিক্ষকদের আন্দোলন করার মতো কোনো যুক্তি নেই।

উপদেষ্টা বলেন, “শিক্ষকদের একটা গুরুত্বপূর্ণ দাবি প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড। আমি মনে করি, এটা গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। কারণ ২০১৪ সালে তাদের দ্বিতীয় শ্রেণি ঘোষণা করা হল। কিন্তু তাদের তৃতীয় শ্রেণির আর্থিক সুবিধা কেটে দেওয়া হল। কিন্তু তাদের বেতন বাড়ানো হল না। তারা মামলা করে, মামলা জিতেছে।

কিন্তু আমাদের আদালতের নিয়ম হচ্ছে যে ৪৫ জন মামলা করেছে তাদের দিতে হবে। সরকার মনে করছে যেহেতু আদালত বলছে, তাই সবাই পেতে পারে। তাদের বড় একটা দাবি মিটলো। তাদের বড় একটা দাবি মিটলো।”

 

 

সাবরিনা জাহান- বিশেষ প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম