০৭:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫
“হত্যাকারীদের ধরতে পুলিশের দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ছে না,” বলেন গৃহবধূর এক স্বজন।

সেই গৃহবধূর লাশ নিয়ে মিরপুর থানার সামনে স্বজনদের বিক্ষোভ

সাবরিনা জাহান- বিশেষ প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ১১:০৮:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫
  • / ২৫ বার পড়া হয়েছে

মিরপুর মডেল থানার সামনে বিক্ষোভ।

 

ঢাকার শেওড়াপাড়ায় এক গৃহবধূর ‘রহস্যজনক’ মৃত্যর পর ‘বিচার চেয়ে’ তার লাশ নিয়ে থানার সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন স্বজনরা।

ফাহমিদা তাহসিন কেয়া (২৫) নামে ওই নারী পশ্চিম শেওড়াপাড়ার শামীম সরণির ৫৮৩ নম্বর অনামিকা কনকর্ডে স্বামী-সন্তান নিয়ে থাকতেন।

তার স্বামীর নাম সিফাত আলী, যিনি ঘটনার পর থেকে ‘পলাতক’ রয়েছেন।

বুধবার রাতের ওই ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার সিফাতসহ নয়জনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা করেন কেয়ার মা নাজমা বেগম।

কেয়ার বাবা রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেছিলেন, সিফাত আলী ‘পরিকল্পিতভাবে’ তার মেয়েকে ‘শ্বাসরোধ করে’ হত্যা করে পালিয়েছেন।

শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হওয়ার পর সন্ধ্যায় কেয়ার লাশ নিয়ে থানার সামনে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন স্বজনরা।

কেয়ার ফুপা শামসুদ্দোহা খান বলেন, “আমাদের মেয়েটাকে ওরা মেরে ফেলেছে। হত্যাকারীদের ধরতে পুলিশের দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ছে না।

 

স্বামী-সন্তানের সঙ্গে ফাহমিদা তাহসিন কেয়া। ফাইল ছবিস্বামী-সন্তানের সঙ্গে ফাহমিদা তাহসিন কেয়া। ফাইল ছবি

 

“এছড়া কেয়ার চারটা সন্তান আছে। তার মৃত্যুর পরে সেই চার সন্তানকে আটকে রাখে ওর শ্বশুর বাড়ির লোকজন। কারো সঙ্গে দেখা করতেও দেওয়া হয়নি।”

রাত সোয়া ৯টার দিকে পুলিশের ‘সহায়তায়’ কেয়ার চার সন্তানকে নিজেদের ‘জিম্মায়’ পেয়ে লাশ নিয়ে কেয়ার গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরায় রওনা হওয়ার কথা জানিয়েছেন শামসুদ্দোহা খান।

তিনি বলেন, “পুলিশ কেয়ার সন্তানদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছে। আমরা রায়পুরায় এখনই রওনা দেব। সেখানেই কেয়ার দাফন হবে।”

কেয়ার বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, “কেয়ার চার সন্তানকে আমাদের কাছে দেওয়া হয়েছে। আর পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে বলে আশ্বস্ত করলে আমরা লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি।”

মিরপুর মডেল থানার ওসি সাজ্জাদ রোমানের ভাষ্য, দুই পরিবারের লোকজনকে বসে কেয়ার সন্তানদেরকে তাদের নানা-নানীর ‘জিম্মায়’ দেওয়া হয়েছে।

মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে, বলেন তিনি।

কেয়াকে ‘হত্যা করা হয়েছে’ পরিবারের এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার পুলিশের মিরপুর জোনের সহকারী কমিশনার মো. মিজানুর রহমান বলেছিলেন, “আমরা ‘ঘটনাস্থল’ থেকে লাশ উদ্ধার করিনি। পরিবারের সদস্যরা ওই নারীকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

“এটি আত্মহত্যা, নাকি হত্যা, সেটি নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে নিহতের স্বামীকে এখনও পাওয়া যায়নি। তাকে খুঁজে পাওয়া পেলে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”

কেয়ার বাবা বলেছিলেন, “বুধবার রাত ২টার দিকে সিফাত আমার স্ত্রীকে ফোন করে বলে, ‘কেয়া খুবই অসুস্থ, আপনারা দ্রুত বাসায় আসেন’। কিছুক্ষণ পর বলে ‘ঢাকা মেডিকেলে আসেন’। এর কিছুক্ষণ পর বলে, ‘পান্থপথের বিআরবি হাসপাতালে আসেন’।

“আমরা বিআরবি হাসপাতালে গিয়ে কেয়াকে মৃত অবস্থায় পাই। ডাক্তাররা বলেছেন, সে অনেক আগেই মারা গেছে। হাসপাতাল থেকে সিফাত পালিয়ে যায়।”

তার ভাষ্য, সিফাত খুবই ‘বদমেজাজী, সন্তানদের সামনেই তাকে (কেয়া) প্রায়ই মারধর করত। কেয়ার চার সন্তানের মধ্যে এক মেয়ে ও তিন ছেলে।

 

 

সাবরিনা জাহান- বিশেষ প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

“হত্যাকারীদের ধরতে পুলিশের দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ছে না,” বলেন গৃহবধূর এক স্বজন।

সেই গৃহবধূর লাশ নিয়ে মিরপুর থানার সামনে স্বজনদের বিক্ষোভ

আপডেট সময় ১১:০৮:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫

 

ঢাকার শেওড়াপাড়ায় এক গৃহবধূর ‘রহস্যজনক’ মৃত্যর পর ‘বিচার চেয়ে’ তার লাশ নিয়ে থানার সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন স্বজনরা।

ফাহমিদা তাহসিন কেয়া (২৫) নামে ওই নারী পশ্চিম শেওড়াপাড়ার শামীম সরণির ৫৮৩ নম্বর অনামিকা কনকর্ডে স্বামী-সন্তান নিয়ে থাকতেন।

তার স্বামীর নাম সিফাত আলী, যিনি ঘটনার পর থেকে ‘পলাতক’ রয়েছেন।

বুধবার রাতের ওই ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার সিফাতসহ নয়জনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা করেন কেয়ার মা নাজমা বেগম।

কেয়ার বাবা রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেছিলেন, সিফাত আলী ‘পরিকল্পিতভাবে’ তার মেয়েকে ‘শ্বাসরোধ করে’ হত্যা করে পালিয়েছেন।

শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হওয়ার পর সন্ধ্যায় কেয়ার লাশ নিয়ে থানার সামনে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন স্বজনরা।

কেয়ার ফুপা শামসুদ্দোহা খান বলেন, “আমাদের মেয়েটাকে ওরা মেরে ফেলেছে। হত্যাকারীদের ধরতে পুলিশের দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ছে না।

 

স্বামী-সন্তানের সঙ্গে ফাহমিদা তাহসিন কেয়া। ফাইল ছবিস্বামী-সন্তানের সঙ্গে ফাহমিদা তাহসিন কেয়া। ফাইল ছবি

 

“এছড়া কেয়ার চারটা সন্তান আছে। তার মৃত্যুর পরে সেই চার সন্তানকে আটকে রাখে ওর শ্বশুর বাড়ির লোকজন। কারো সঙ্গে দেখা করতেও দেওয়া হয়নি।”

রাত সোয়া ৯টার দিকে পুলিশের ‘সহায়তায়’ কেয়ার চার সন্তানকে নিজেদের ‘জিম্মায়’ পেয়ে লাশ নিয়ে কেয়ার গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরায় রওনা হওয়ার কথা জানিয়েছেন শামসুদ্দোহা খান।

তিনি বলেন, “পুলিশ কেয়ার সন্তানদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছে। আমরা রায়পুরায় এখনই রওনা দেব। সেখানেই কেয়ার দাফন হবে।”

কেয়ার বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, “কেয়ার চার সন্তানকে আমাদের কাছে দেওয়া হয়েছে। আর পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে বলে আশ্বস্ত করলে আমরা লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি।”

মিরপুর মডেল থানার ওসি সাজ্জাদ রোমানের ভাষ্য, দুই পরিবারের লোকজনকে বসে কেয়ার সন্তানদেরকে তাদের নানা-নানীর ‘জিম্মায়’ দেওয়া হয়েছে।

মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে, বলেন তিনি।

কেয়াকে ‘হত্যা করা হয়েছে’ পরিবারের এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার পুলিশের মিরপুর জোনের সহকারী কমিশনার মো. মিজানুর রহমান বলেছিলেন, “আমরা ‘ঘটনাস্থল’ থেকে লাশ উদ্ধার করিনি। পরিবারের সদস্যরা ওই নারীকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

“এটি আত্মহত্যা, নাকি হত্যা, সেটি নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে নিহতের স্বামীকে এখনও পাওয়া যায়নি। তাকে খুঁজে পাওয়া পেলে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”

কেয়ার বাবা বলেছিলেন, “বুধবার রাত ২টার দিকে সিফাত আমার স্ত্রীকে ফোন করে বলে, ‘কেয়া খুবই অসুস্থ, আপনারা দ্রুত বাসায় আসেন’। কিছুক্ষণ পর বলে ‘ঢাকা মেডিকেলে আসেন’। এর কিছুক্ষণ পর বলে, ‘পান্থপথের বিআরবি হাসপাতালে আসেন’।

“আমরা বিআরবি হাসপাতালে গিয়ে কেয়াকে মৃত অবস্থায় পাই। ডাক্তাররা বলেছেন, সে অনেক আগেই মারা গেছে। হাসপাতাল থেকে সিফাত পালিয়ে যায়।”

তার ভাষ্য, সিফাত খুবই ‘বদমেজাজী, সন্তানদের সামনেই তাকে (কেয়া) প্রায়ই মারধর করত। কেয়ার চার সন্তানের মধ্যে এক মেয়ে ও তিন ছেলে।

 

 

সাবরিনা জাহান- বিশেষ প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম