সংস্থাটি শিক্ষকদের সতর্ক করে বলছে, শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে তৈরি এ ‘অভ্যন্তরীণ হুমকি’ যথাযথভাবে বুঝতে ও শনাক্ত করতে ব্যর্থ হচ্ছেন তারা।
স্রেফ ‘মজার জন্য’ নিজের স্কুলে হ্যাকিং চালায় ব্রিটিশ শিশুরা

- আপডেট সময় ০২:১১:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ২১ বার পড়া হয়েছে
শিশুরা ‘মজার ছলে’ নিজেদের স্কুলে হ্যাকিং কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে সতর্ক করেছে যুক্তরাজ্যের নজরদারি সংস্থা।
দেশটির তথ্য কমিশনারের দপ্তর আইসিও বলেছে, স্কুল ও কলেজে সাইবার আক্রমণ ও তথ্য চুরির অর্ধেকেরও বেশি ঘটনা তাদের নিজস্ব শিক্ষার্থীদের মাধ্যমেই ঘটছে।
মজার ছলে বা চ্যালেঞ্জিং কিছু করার অংশ হিসেবে হ্যাকিং ও ব্যক্তিগত তথ্যে প্রবেশ করছে স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা, যেটিকে ‘উদ্বেগজনক প্রবণতা’ হিসেবে বর্ণনা করেছে তথ্য কমিশনারের দপ্তর।
সংস্থাটি শিক্ষকদের সতর্ক করে বলছে, শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে তৈরি এ ‘অভ্যন্তরীণ হুমকি’ যথাযথভাবে বুঝতে ও শনাক্ত করতে ব্যর্থ হচ্ছেন তারা।
আইসিও-এর প্রধান সাইবার বিশেষজ্ঞ হিদার টুমি বলেছেন, “স্কুলে সাধারণত কোনো কিছু শুরু হয় চ্যালেঞ্জ, দুঃসাহসিকতা বা নিছক মজার ছলে। তবে সেটিই শেষ পর্যন্ত শিশুদের এমন ক্ষতিকর সাইবার আক্রমণে নিয়ে যেতে পারে, যা কোনো সংস্থা বা গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ওপর আঘাত হানবে।”
বিষয়টি এমন সময়ে সামনে এল যখন এমঅ্যান্ডএস ও জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার’সহ বিভিন্ন কোম্পানির ওপর একের পর এক গুরুতর মাত্রার সাইবার আক্রমণ ঘটছে। আর এসব ঘটনার সঙ্গে কিশোর হ্যাকারদের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।
নতুন তথ্য অনুসারে, প্রায় এক-তৃতীয়াংশ তথ্য ফাঁসের ঘটনায় শিক্ষার্থীরা অবৈধভাবে কর্মীদের কম্পিউটার সিস্টেমে প্রবেশ করেছে। কখনও পাসওয়ার্ড অনুমান করে, আবার কখনও শিক্ষকদের কাছ থেকে চুরি করা তথ্য ব্যবহার করে এসব হ্যাকিং কার্যক্রম চালিয়েছে শিশুরা।
তবে একটি ঘটনায় কেবল সাত বছর বয়সী এক শিশুর সঙ্গে তথ্য ফাঁসের ঘটনার যোগ পেয়েছে সংস্থাটি। পরে তাকে তার কাজের গুরুত্ব ও পরিণতি বোঝাতে ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির ‘সাইবার চয়েসেস’ প্রোগ্রামে পাঠানো হয়।
সেই তথ্য ফাঁসের প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেয়নি যুক্তরাজ্যের তথ্য কমিশনারের দপ্তর।
আরেকটি ঘটনায় ১৫ থেকে ১৬ বছর বয়সী তিনজন একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী অবৈধভাবে স্কুলের এমন এক ডেটাবেইসে প্রবেশ করেছিল, যেখানে এক হাজার চারশর বেশি শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষিত ছিল।
এসব ডেটাবেইসে ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করা হ্যাকিং টুল ব্যবহার করে পাসওয়ার্ড ও সিকিউরিটি প্রোটোকল ভেঙে প্রবেশ করেছিল শিক্ষার্থীরা।
কী কারণে সাইবার হামলা করছে এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষার্থীরা বলেছিল, সাইবার সিকিউরিটিতে আগ্রহী এবং নিজেদের দক্ষতা ও জ্ঞান পরীক্ষা করতে চেয়েছিল তারা।
আরেকটি ক্ষেত্রে আইসিও বলেছে, একজন শিক্ষার্থী অবৈধভাবে তার কলেজের ডেটাবেইসে একজন শিক্ষকের তথ্য ব্যবহার করে লগইন করে ৯ হাজারেরও বেশি স্টাফ, শিক্ষার্থী ও আবেদনকারীর ব্যক্তিগত তথ্য পরিবর্তন বা মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে।
ওই সিস্টেমে ব্যক্তিগত তথ্য যেমন নাম ও বাড়ির ঠিকানা, স্কুলের রেকর্ড, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য, নিরাপত্তা ও পরামর্শ সংক্রান্ত বিষয় এবং জরুরি যোগাযোগের তথ্য সংরক্ষিত ছিল।
যুক্তরাজ্য সরকারের সাম্প্রতিক ‘সাইবার সিকিউরিটি ব্রিচ সার্ভে’-এর তথ্য অনুসারে, বিভিন্ন স্কুলে সাইবার আক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে। গত বছর নিজেদের ওপর সাইবার আক্রমণ বা তথ্য ফাঁসের ঘটনা রিপোর্ট করেছে ৪৪ শতাংশ স্কুল।
তরুণ সমাজের সাইবার অপরাধের সংস্কৃতি বাড়তে থাকা একটি হুমকি, যা ইংরেজি ভাষী টিনএজার গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে।
এমঅ্যান্ডজি গ্র্যান্ড ক্যাসিনো, টিএফএল, মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সার ও কো-অপ’সহ বড় বিভিন্ন কোম্পানির বিরুদ্ধে হ্যাকিং অভিযান চালানোর অভিযোগে গত বছর যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে টিনএজার বা তরুণ সন্দেহভাজন হ্যাকারদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম