“সম্পদের তথ্যে গড়মিল হলে বা অসত্য তথ্য দিয়েছে অভিযোগ আনলে এ সংক্রান্ত বিষয়টি অযোগ্যতার মধ্যে পড়ে না; সেক্ষেত্রে ইসির করার কিছু থাকে না বিদ্যমান আরপিও’তে,” বলেন এক ইসি।
হলফনামায় শেখ হাসিনার ‘তথ্য গোপনে’ করার কিছু নেই: দুদককে ইসি

- আপডেট সময় ০৬:৪০:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫
- / ৫০ বার পড়া হয়েছে
নবম সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনা যে হলফনামা দাখিল করেছিলেন, তাতে ‘তথ্য গোপনের’ বিষয়ে কিছু করার নেই বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
দুদককে চিঠি দিয়ে এ কথা জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসি সচিব আখতার আহমেদ।
তিনি বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের রিপ্লাই জানিয়ে দিয়েছি। দুদককে চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
“আমরা বলেছি, আরপিওর বিধানে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই। আরপিও’তে এ ধরনের কোনো প্রভিশন নেই জানিয়ে দিয়েছি।”
হলফনামায় ‘সম্পদের তথ্য গোপনের’ অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে গত ২২ মে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেয় দুদক।
এতে বলা হয়, ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ইসিতে দেওয়া হলফনামায় নিজের সম্পদের বিষয়ে অসত্য তথ্য দিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ বিষয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয় চিঠিতে।
ইসি কেন ব্যবস্থা নিতে পারেনি
দুদকের চিঠিতে বলা হয়েছে, দুদকে শেখ হাসিনার দাখিল করা সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে দেখা যায়, তিনি ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগে হলফনামায় ৬ দশমিক ৫০ একর কৃষিজমি এবং তার দাম ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দেখিয়েছেন।
কিন্তু দুদক যাচাই করে দেখেছে, শেখ হাসিনার নামে ২৮ দশমিক ৪১১ একর কৃষিজমি রয়েছে। যার মধ্যে কেনার জমির মোট দাম ৩৩ লাখ ৬৬ হাজার ১০ টাকা।
এ হিসাবে তিনি ২১ দশমিক ৯১ একর জমির তথ্য গোপন করেছেন এবং ক্রয়মূল্যও প্রকৃত দামের চেয়ে ৩১ লাখ ৯১ হাজার ১০ টাকা কম দেখিয়েছেন, যা হলফনামায় ‘অসত্য তথ্য দেওয়ার শামিল’।
একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, “হলফনামায় অসত্য তথ্য দেওয়ার অভিযোগ এলে দুটি বিষয় দেখতে হবে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১২ অনুচ্ছেদে প্রার্থীর যোগ্য-অযোগ্যতার বিষয়টি রয়েছে। হলফনামার এমন কোনো তথ্য অসত্য দিলেন প্রার্থী, যা তার প্রার্থী বা নির্বাচিত হওয়ার অযোগ্যতা- তাহলে নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।”
তিনি বলেন, “যেমন ঋণখেলাপের বিষয়টি অযোগ্যতার মধ্যে পড়ে; হলফনামায় এ ধরনের বিষয়ে অসত্য তথ্য থাকলে ইসির করার কিছু থাকে।
“কিন্তু সম্পদের তথ্যে গড়মিল হলে বা অসত্য তথ্য দিয়েছে অভিযোগ আনলে এ সংক্রান্ত বিষয়টি অযোগ্যতার মধ্যে পড়ে না। সেক্ষেত্রে ইসির করার কিছু থাকে না বিদ্যমান আরপিও’তে। সেক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে অভিযোগ আসে, সে বিষয়ে স্ব স্ব সংস্থার প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার থাকে।”
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এবার একগুচ্ছ আইনি সংস্কার আসছে। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন এমন বিধানের সুপারিশ করেছে, যাতে হলফনামার অসত্য তথ্যের কারণে ভোটের পরেও ব্যবস্থা নেওয়ার এবং নির্বাচন বাতিলের কথা বলা হচ্ছে।
সার্বিক সুপারিশ পর্যালোচনা করে আরপিওতে প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে নির্বাচন কমিশন তা পাঠাবে আইন মন্ত্রণালয়ে। সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন পেলে তা অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হতে পারে।
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম