০৪:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫
এয়ারলাইন্সের প্রয়োজন বিবেচনায় না রেখে ওপর থেকে এরকম কেনাকাটা চাপিয়ে দেওয়াকে ‘অদ্ভুত’ বলছেন এভিয়েশন খাত সংশ্লিষ্টরা।

২৫টি বোয়িং কেনা হচ্ছে, জানেই না বিমান!

মইদুল হাসান - জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ১০:৫২:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫
  • / ২৮ বার পড়া হয়েছে

 

মার্কিন কোম্পানি বোয়িংয়ের কাছ থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কিনতে ক্রয়াদেশ দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। তবে যার জন্য কেনা হবে এসব উড়োজাহাজ, সেই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বলছে, তারা কিছুই জানে না।

অথচ উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব এয়ারলাইন্সের পক্ষ থেকেই আসার কথা। এ সংক্রান্ত চুক্তিও হওয়ার কথা বিমানের সঙ্গে বোয়িংয়ের।

এয়ারলাইন্সের প্রয়োজন বিবেচনায় না রেখে ওপর থেকে এরকম কেনাকাটা চাপিয়ে দেওয়াকে ‘অদ্ভুত’ বলছেন এভিয়েশন খাত সংশ্লিষ্টরা।

যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা বড় অংকের শুল্ক কমানোর জন্য আলোচনার মধ্যে মার্কিন কোম্পানি বোয়িংয়ের কাছ থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কেনার ক্রয়াদেশ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।

এ পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনা, যাতে ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বাড়তি ৩৫ শতাংশ শুল্কের বোঝা থেকে বাংলাদেশকে রেহাই দেয়।

রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, “আমাদের ইমিডিয়েট কিছু এয়ারক্রাফট দরকার, আমাদের দুয়েক বছরের মধ্যে দরকার, হয়ত আমরা দুয়েক বছরের মধ্যে কিছু পাব। আমাদের বিমানের তো বহর বাড়াতে হবে। সেই পরিকল্পনা সরকারের বেশ আগে থেকেই ছিল।

“আমরা এ বছরে রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ ইস্যুতে আবার নতুন করে এই আদেশগুলো দিয়েছি, আগে ১৪টা ছিল, পরে ২৫টা করেছি।”

সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে সচিব বলেন, “বোয়িংয়ের ব্যবসাটা কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সরকার করে না। বোয়িং কোম্পানি করে। আমরা ২৫টি বোয়িং কেনার জন্য অর্ডার দিয়েছি। এরকম অর্ডার ভারত দিয়েছে ১০০টা। ভিয়েতনাম দিয়েছে ১০০টা, ইন্দোনেশিয়া দিয়েছে ৫০টা। এরকম বিভিন্ন দেশ দিয়েছে।”

অথচ এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে বিমানের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক এ বি এম রওশন কবীর  বলেন, “আমরা এ বিষয়ে অবগত নই।”

বিমানের বহরের এখন ২১টি এয়ারক্রাফটের মধ্যে ১৬টি বোয়িং। এর মধ্যে ছয়টি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার, চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর আর ছয়টি ন্যারোবডির বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ রয়েছে। এর বাইরে বিমানের বহরে স্বল্পদূরত্বের রুটে চলাচল উপেযোগী পাঁচটি ড্যাশ-৮০০ উড়োজাহাজ রয়েছে।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ফ্রান্সের কোম্পানি এয়ারবাস থেকে ১০টি বড় উড়োজাহাজ কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে সরকার বদলের পর সে উদ্যোগে তেমন কোনো গতি দেখা যায়নি। আগের সিদ্ধান্ত পাল্টে বাংলাদেশ যে ফের বোয়িং কেনার ক্রয়াদেশ দিয়ে ফেলেছে, সে কথা বাণিজ্য সচিবই প্রথম জানালেন।

কীভাবে কেনা হয় উড়োজাহাজ

এভিয়েশন খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এয়ারলাইন্সের প্রস্তাব ছাড়া এভাবে কেউ উড়োজাহাজ কেনে না। কমার্শিয়াল এয়ারলাইন্সের ক্ষেত্রে এটা কখনোই সম্ভব না।

বিমান পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য কাজী ওয়াহেদুল আলম বলছেন, “এটা আদৌ বিমানের জন্য প্রয়োজন আছে কি না সেটা তো বিমানকে বলতে হবে। আল্টিমেটলি এটাতো বিমানকে চালাতে হবে। এটার অর্থনৈতিক দায়-দায়িত্বও তো বিমানের। বিমানকে ইনভলভ করলে বাঞ্ছনীয় হত।”

২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় যখন বিমানের জন্য বোয়িংয়ের কাছ থেকে ১০টি উড়োজাহাজ অর্ডার করা হয়, তখন বিমানের পর্ষদের সদস্য ছিলেন কাজী ওয়াহেদুল আলম। ওই উড়োজাহাজগুলোই বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় পর্যায়ক্রমে সরবরাহ করে বোয়িং।

সেই অভিজ্ঞতা থেকে কাজী ওয়াহেদুল আলম যে কোনো এয়ারলাইন্সের জন্য উড়োজাহাজ কেনার সাধারণ প্রক্রিয়ার বিষয়ে বলেন।

“প্রত্যেকটা এয়ারলাইনের ফ্লিট প্ল্যানিং কমিটি থাকে। এই কমিটি নিজেরা পর্যালোচনা করে তাদের কোন রুটের জন্য দরকার, কোন সাইজের বা কোন ধরনের উড়োজাহাজ দরকার, কোন প্রাইস হওয়া উচিৎ ইত্যাদি বিষয় ধরে এই কমিটি পুরো বিষয়টা পর্যালোচনা করে।

“উড়োজাহাজের স্পেসিফিকেশন কী হবে, ফাইনান্সিয়াল স্পেসিফিকেশন কী হবে, রিটার্ন অব ইনভেস্টমেন্ট কী হতে পারে। একটা প্লেন আমি কিনব, কতদিনে সেই টাকা উঠবে ইত্যাদি সবকিছু পর্যালোচনা করে এই ফ্লিট প্ল্যানিং কমিটি একটা রেকমেন্ডেশন পাঠায় সেই এয়ারলাইনের বোর্ডকে (পরিচালনা পর্ষদকে)। বোর্ড পরে পর্যালোচনা করে দেখবে যে এই প্রস্তাবটা কতোটুকু সঠিক।

“বোর্ড যদি কেনার বিষয়ে ইতিবাচক হয়, তখন তারা বোয়িং ও এয়ারবাসের মত প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলোকে ডাকবে। তাদের কাছ থেকে দর চাইবে, প্রেজেন্টেশন দিতে বলবে। ফ্লিট প্ল্যানিং কমিটি কিন্তু বলবে না তারা কোন কোম্পানির উড়োজাহাজ কিনবে, তারা শুধু বলবে ওয়াইড বডি বা ন্যারো বডি লাগবে। এটা ঠিক করবে এয়ারলাইনের বোর্ড।

“বোর্ড ম্যানুফ্যাকচারারদের কাছে টেকনিক্যাল অফার, ফাইনান্সিয়াল অফার চাইবে। বোয়িং, এয়ারবাস নিজেদের প্রস্তাব দেওয়ার পর সেগুলো নিয়ে দর কষাকষি হবে। এই এয়ারক্রাফটগুলোর পাইলট ট্রেনিংয়ের কী বন্দোবস্ত হবে তার চুক্তি হতে হবে। এর বাইরে এয়ারলাইন্সগুলো আরও কিছু সুযোগ নেওয়ার জন্য দরকষাকষি করে। নতুন রুট খোলা, ব্র্যান্ডিংয়ের সুযোগ করে দেওয়াসহ বাড়তি কিছু সুযোগ চাইতে পারে এয়ারলাইন্সগুলো। আমাদের বিমানের ক্ষেত্রে ঢাকা থেকে নিউ ইয়র্কে সরাসরি ফ্লাইট চালানোর জন্য ঢাকা বিমানবন্দরকে এফএও ক্যাটেগরি- ১ এ উন্নীতকরণের বিষয়টি আসতে পারে। এরকম আরও অনেক কিছু থাকে।”

২০০৮ সালের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বিমান পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য ওয়াহেদুল আলম বলেন, “তখন কিন্তু আমরা এই প্রসিডিউরগুলো ফলো করে গিয়েছিলাম। তখন কিন্তু বিমান বোর্ড বোয়িং ও এয়ারবাস দুপক্ষের কাছ থেকেই প্রপোজাল নিয়েছে। তারপর নেগোসিয়েশন করে বোয়িংয়ের কাছ থেকে কিছু এক্সট্রা সুবিধা আদায় করে শেষ পর্যন্ত বোয়িংয়ের কাছ থেকে কেনা হয়েছে।”

 

 

মইদুল হাসান – জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

এয়ারলাইন্সের প্রয়োজন বিবেচনায় না রেখে ওপর থেকে এরকম কেনাকাটা চাপিয়ে দেওয়াকে ‘অদ্ভুত’ বলছেন এভিয়েশন খাত সংশ্লিষ্টরা।

২৫টি বোয়িং কেনা হচ্ছে, জানেই না বিমান!

আপডেট সময় ১০:৫২:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫

 

মার্কিন কোম্পানি বোয়িংয়ের কাছ থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কিনতে ক্রয়াদেশ দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। তবে যার জন্য কেনা হবে এসব উড়োজাহাজ, সেই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বলছে, তারা কিছুই জানে না।

অথচ উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব এয়ারলাইন্সের পক্ষ থেকেই আসার কথা। এ সংক্রান্ত চুক্তিও হওয়ার কথা বিমানের সঙ্গে বোয়িংয়ের।

এয়ারলাইন্সের প্রয়োজন বিবেচনায় না রেখে ওপর থেকে এরকম কেনাকাটা চাপিয়ে দেওয়াকে ‘অদ্ভুত’ বলছেন এভিয়েশন খাত সংশ্লিষ্টরা।

যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা বড় অংকের শুল্ক কমানোর জন্য আলোচনার মধ্যে মার্কিন কোম্পানি বোয়িংয়ের কাছ থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কেনার ক্রয়াদেশ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।

এ পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনা, যাতে ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বাড়তি ৩৫ শতাংশ শুল্কের বোঝা থেকে বাংলাদেশকে রেহাই দেয়।

রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, “আমাদের ইমিডিয়েট কিছু এয়ারক্রাফট দরকার, আমাদের দুয়েক বছরের মধ্যে দরকার, হয়ত আমরা দুয়েক বছরের মধ্যে কিছু পাব। আমাদের বিমানের তো বহর বাড়াতে হবে। সেই পরিকল্পনা সরকারের বেশ আগে থেকেই ছিল।

“আমরা এ বছরে রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ ইস্যুতে আবার নতুন করে এই আদেশগুলো দিয়েছি, আগে ১৪টা ছিল, পরে ২৫টা করেছি।”

সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে সচিব বলেন, “বোয়িংয়ের ব্যবসাটা কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সরকার করে না। বোয়িং কোম্পানি করে। আমরা ২৫টি বোয়িং কেনার জন্য অর্ডার দিয়েছি। এরকম অর্ডার ভারত দিয়েছে ১০০টা। ভিয়েতনাম দিয়েছে ১০০টা, ইন্দোনেশিয়া দিয়েছে ৫০টা। এরকম বিভিন্ন দেশ দিয়েছে।”

অথচ এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে বিমানের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক এ বি এম রওশন কবীর  বলেন, “আমরা এ বিষয়ে অবগত নই।”

বিমানের বহরের এখন ২১টি এয়ারক্রাফটের মধ্যে ১৬টি বোয়িং। এর মধ্যে ছয়টি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার, চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর আর ছয়টি ন্যারোবডির বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ রয়েছে। এর বাইরে বিমানের বহরে স্বল্পদূরত্বের রুটে চলাচল উপেযোগী পাঁচটি ড্যাশ-৮০০ উড়োজাহাজ রয়েছে।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ফ্রান্সের কোম্পানি এয়ারবাস থেকে ১০টি বড় উড়োজাহাজ কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে সরকার বদলের পর সে উদ্যোগে তেমন কোনো গতি দেখা যায়নি। আগের সিদ্ধান্ত পাল্টে বাংলাদেশ যে ফের বোয়িং কেনার ক্রয়াদেশ দিয়ে ফেলেছে, সে কথা বাণিজ্য সচিবই প্রথম জানালেন।

কীভাবে কেনা হয় উড়োজাহাজ

এভিয়েশন খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এয়ারলাইন্সের প্রস্তাব ছাড়া এভাবে কেউ উড়োজাহাজ কেনে না। কমার্শিয়াল এয়ারলাইন্সের ক্ষেত্রে এটা কখনোই সম্ভব না।

বিমান পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য কাজী ওয়াহেদুল আলম বলছেন, “এটা আদৌ বিমানের জন্য প্রয়োজন আছে কি না সেটা তো বিমানকে বলতে হবে। আল্টিমেটলি এটাতো বিমানকে চালাতে হবে। এটার অর্থনৈতিক দায়-দায়িত্বও তো বিমানের। বিমানকে ইনভলভ করলে বাঞ্ছনীয় হত।”

২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় যখন বিমানের জন্য বোয়িংয়ের কাছ থেকে ১০টি উড়োজাহাজ অর্ডার করা হয়, তখন বিমানের পর্ষদের সদস্য ছিলেন কাজী ওয়াহেদুল আলম। ওই উড়োজাহাজগুলোই বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় পর্যায়ক্রমে সরবরাহ করে বোয়িং।

সেই অভিজ্ঞতা থেকে কাজী ওয়াহেদুল আলম যে কোনো এয়ারলাইন্সের জন্য উড়োজাহাজ কেনার সাধারণ প্রক্রিয়ার বিষয়ে বলেন।

“প্রত্যেকটা এয়ারলাইনের ফ্লিট প্ল্যানিং কমিটি থাকে। এই কমিটি নিজেরা পর্যালোচনা করে তাদের কোন রুটের জন্য দরকার, কোন সাইজের বা কোন ধরনের উড়োজাহাজ দরকার, কোন প্রাইস হওয়া উচিৎ ইত্যাদি বিষয় ধরে এই কমিটি পুরো বিষয়টা পর্যালোচনা করে।

“উড়োজাহাজের স্পেসিফিকেশন কী হবে, ফাইনান্সিয়াল স্পেসিফিকেশন কী হবে, রিটার্ন অব ইনভেস্টমেন্ট কী হতে পারে। একটা প্লেন আমি কিনব, কতদিনে সেই টাকা উঠবে ইত্যাদি সবকিছু পর্যালোচনা করে এই ফ্লিট প্ল্যানিং কমিটি একটা রেকমেন্ডেশন পাঠায় সেই এয়ারলাইনের বোর্ডকে (পরিচালনা পর্ষদকে)। বোর্ড পরে পর্যালোচনা করে দেখবে যে এই প্রস্তাবটা কতোটুকু সঠিক।

“বোর্ড যদি কেনার বিষয়ে ইতিবাচক হয়, তখন তারা বোয়িং ও এয়ারবাসের মত প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলোকে ডাকবে। তাদের কাছ থেকে দর চাইবে, প্রেজেন্টেশন দিতে বলবে। ফ্লিট প্ল্যানিং কমিটি কিন্তু বলবে না তারা কোন কোম্পানির উড়োজাহাজ কিনবে, তারা শুধু বলবে ওয়াইড বডি বা ন্যারো বডি লাগবে। এটা ঠিক করবে এয়ারলাইনের বোর্ড।

“বোর্ড ম্যানুফ্যাকচারারদের কাছে টেকনিক্যাল অফার, ফাইনান্সিয়াল অফার চাইবে। বোয়িং, এয়ারবাস নিজেদের প্রস্তাব দেওয়ার পর সেগুলো নিয়ে দর কষাকষি হবে। এই এয়ারক্রাফটগুলোর পাইলট ট্রেনিংয়ের কী বন্দোবস্ত হবে তার চুক্তি হতে হবে। এর বাইরে এয়ারলাইন্সগুলো আরও কিছু সুযোগ নেওয়ার জন্য দরকষাকষি করে। নতুন রুট খোলা, ব্র্যান্ডিংয়ের সুযোগ করে দেওয়াসহ বাড়তি কিছু সুযোগ চাইতে পারে এয়ারলাইন্সগুলো। আমাদের বিমানের ক্ষেত্রে ঢাকা থেকে নিউ ইয়র্কে সরাসরি ফ্লাইট চালানোর জন্য ঢাকা বিমানবন্দরকে এফএও ক্যাটেগরি- ১ এ উন্নীতকরণের বিষয়টি আসতে পারে। এরকম আরও অনেক কিছু থাকে।”

২০০৮ সালের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বিমান পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য ওয়াহেদুল আলম বলেন, “তখন কিন্তু আমরা এই প্রসিডিউরগুলো ফলো করে গিয়েছিলাম। তখন কিন্তু বিমান বোর্ড বোয়িং ও এয়ারবাস দুপক্ষের কাছ থেকেই প্রপোজাল নিয়েছে। তারপর নেগোসিয়েশন করে বোয়িংয়ের কাছ থেকে কিছু এক্সট্রা সুবিধা আদায় করে শেষ পর্যন্ত বোয়িংয়ের কাছ থেকে কেনা হয়েছে।”

 

 

মইদুল হাসান – জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম