৯০ হাজার ভবনের মধ্যে ৭০ হাজারই অবৈধ
- আপডেট সময় ১০:০৭:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ৪৩২ বার পড়া হয়েছে
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন জানিয়েছেন, ঢাকা শহরে বছরে ৯০ হাজার ভবন নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এর মধ্যে ১০ থেকে ১৪ হাজার ভবন রাজউকসহ সংশ্লিষ্টদের অনুমোদন নেয়। বাকি ৭০ হাজার ভবন কর্তৃপক্ষ অনুমোদনই নেয় না কিংবা ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড মেনে ভবন নির্মাণ না করায় অনুমোদন দেওয়া হয় না। এসব ভবনের বিরুদ্ধে চাইলেও ফায়ার সার্ভিস ব্যবস্থা নিতে পারছে না। কেননা সংস্থাটির নিজস্ব কোন ম্যাজিস্ট্রেট নেই। সোমবার দুপুরে ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরে নবগঠিত ‘ফায়ার সার্ভিস রিপোর্টার্স ফোরামের’ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে এই তথ্য জানান সংস্থাটির ডিজি। ফায়ার সার্ভিস রিপোর্টার্স ফোরামের নেতৃবৃন্দ ডিজিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান এবং কমিটির কর্মকান্ডের বিষয়ে অবহিত করেন। এসময় সংগঠনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, সহ-সভাপতি ওবায়দুল কবীর (বাবু), সাধারণ সম্পাদক শুভ্র দেব, যুগ্ম সম্পাদক ইমন রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুর রহমান, অর্থ সম্পাদক ইমরান রহমান, দপ্তর সম্পাদক মাসুদা লাবনী, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক খলিলুর রহমান ও নির্বাহী সদস্য সিরাজুম সালেকীন এবং ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে উপপরিচালক (ঢাকা) মোঃ ছালেহ উদ্দিন, উপপরিচালক (পরিকল্পনা) মোঃআক্তারুজ্জামান, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া সেল) মোঃ শাহজাহান শিকদার, মিডিয়া অফিসার মোঃ তালহা বিন জসিম উপস্থিত ছিলেন। ফায়ার সার্ভিস রিপোর্টার্স ফোরামের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপকালে ডিজি বলেন, আমাদের নিজস্ব কোনো ম্যাজিস্ট্রেট নেই। কিন্তু এটা প্রয়োজন। মাঝে মধ্যে জেলা প্রশাসন থেকে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে অভিযান পরিচালনা করছি। আমাদের নীতিমালার মধ্যে থেকে ম্যাজিস্ট্রেট চেয়েছি। বর্তমানে আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে রয়েছে। আমরা ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা চাচ্ছি না, তবে ম্যাজিস্ট্রেট থাকা প্রয়োজন। বিগত বিভিন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জ্বালাও-পোড়াও, পেট্রল বোমা হামলা, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। আসন্ন নির্বাচনে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে কিভাবে মোকাবিলা করা হবে, প্রস্তুতি রয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ডিজি বলেন, আমরা আওয়ামী লীগ-বিএনপি দেখি না, আমরা দেখি প্রপার্টি। আগুন বোমা থেকে লেগেছে নাকি অন্যভাবে লেগেছে সেটিও আমাদের দেখার বিষয় নয়। আগুন নেভানোই আমাদের কাজ, সেই আগুন যেভাবেই লাগুক না কেন। আর ফায়ার সার্ভিস সব সময় অগ্নিনির্বাপণে প্রস্তুতি নিয়ে রাখে। পাগলাঘন্টা বাজার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে ফায়ার ফাইটারদের গাড়িতে উঠতে হয়। এটা আমাদের রেসপন্স টাইম। হাতে খাবার আছে, খাবার রেখে চলে যেতে হবে। কারণ আগুন আমাদেরই নেভাতে হবে। অগ্নিকান্ডের পর তদন্ত প্রতিবেদন, সুপারিশমালা প্রদান ও সতর্ক করার পরও সংশ্লিষ্টরা সতর্ক হচ্ছে না। তবে এ ক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসের কিছু করার নেই। কেননা, ফায়ার সার্ভিস একটি ভবনে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র না ফেলে ভবনটিকে অগ্নিঝুঁকি হিসেবে ঘোষণা করা হয়, পুরো ভবনকে অবৈধ ঘোষণা করে না। ভবন ঝুঁকিতে আছে কিনা, সেটি সংশ্লিষ্টরা দেখেন। অগ্নিঝুঁকি কমাতে ফায়ার সার্ভিসের গোয়েন্দা ইউনিটের প্রয়োজন আছে কি না? এর উত্তরে তিনি বলেন, ভবন তৈরি করতে দেশের প্রচলিত আইন আছে। একটি ভবন নির্মাণে অনুমোদন নিলে, নির্মাণ শেষে রাজউক থেকে অকুপেন্সি সার্টিফিকেট নিলে এবং ফায়ার সার্ভিস থেকে সার্টিফিকেট নিলে গোয়েন্দা ইউনিটের প্রয়োজন হয় না। তার মানে, ভবনটি যেভাবে হবার কথা, সেভাবেই হয়েছে। এরপর দুর্ঘটনা তো দুর্ঘটনাই। এখন রাজউক থেকে অকুপেন্সি সার্টিফিকেট নেওয়ার আগে ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র নেওয়ার বিষয়টি রাজউক বাধ্যতামূলক করেছে। বর্তমানে রাজধানীতে ১২ হাজার মানুষের জন্য একজন ফায়ার ফাইটার রয়েছেন। আর সারাদেশে ১১ হাজার ৭০০ জনের জন্য রয়েছেন একজন। আমেরিকাতে ৯০০ জনে একজন ফায়ার ফাইটার রয়েছে। তবে কত মানুষে কতজন ফায়ার কর্মী থাকবেন সেটা নিয়ে আন্তজার্তিক কোনো হিসাব নেই। আমরা তো ২০৪১ সালে উন্নত দেশে যেতে চাচ্ছি। তাহলে তো ৯০০ জনে না হোক, ১ হাজার জনে একজন লাগবে।