০৬:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
“মালয়েশিয়ার পুলিশ বলে তুই জঙ্গি হলে জেলে পাঠাব আর জঙ্গি না হলে দেশে পাঠাব।"

মালয়েশিয়ায় জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা: ‘ফেঁসে গেছি’, আদালতে বললেন প্রবাসীরা বলেছেন-‘অন্যের অপকর্মে তারা ‘ফেঁসে গেছেন’

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ১০:৫১:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
  • / ২৪ বার পড়া হয়েছে

‘জঙ্গিবাদে জড়িত’ থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার মালয়েশিয়া প্রবাসীরা রিমান্ড শুনানিতে নিজেদের ‘নির্দোষ’ দাবি করে বলেছেন, অন্যের অপকর্মে তারা ‘ফেঁসে গেছেন’।

 

‘জঙ্গিবাদে জড়িত’ থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার মালয়েশিয়া প্রবাসীরা রিমান্ড শুনানিতে নিজেদের ‘নির্দোষ’ দাবি করে বলেছেন, অন্যের অপকর্মে তারা ‘ফেঁসে গেছেন’।

মঙ্গলবার ৮ জুলাই বিমানবন্দর থানার মামলায় মালয়েশিয়ার চার প্রবাসীকে জিজ্ঞাবাদের জন্য ৪ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের শুনানি নিয়ে এদিন ঢাকার মহানগর হাকিম মিনহাজুর রহমান এ আদেশ দেন।

শুনানিতে আদালতে দাঁড়িয়ে এসব কথা বলেছেন মামলার আসামিরা।

রিমান্ডে যাওয়া চারজনের মধ্যে তিনজনকে শুক্রবার মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। তারা হলেন-নজরুল ইসলাম সোহাগ, মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম, জাহেদ আহমেদ। এছাড়া মাহফুজকে সোমবার কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে পুলিশ, তিনিও মালয়েশিায় থাকেন। দেশে এসেছেন কদিন আগে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এন্টি টেররিজম ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক কে. এম. তারিকুল ইসলাম প্রত্যেকের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।

তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক তারিকুল ইসলাম শুনানিতে বলেন, “আসামিরা মালয়েশিয়ায় ছিল। পুলিশ জঙ্গী সন্দেহে ইমিগ্রেশনে হস্তান্তর করে। তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ায় সন্ত্রাস বিরোধ আইনে মামলা করা হয়েছে। সন্ত্রাসী সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করেছিল কি না সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।”

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আজিজুল হক দিদার রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন।

পাবলিক প্রসিকিউটর দিদার বলেন, “প্রকৃত তথ্য পাওয়ার জন্য তাদের সাত দিনের রিমান্ড দরকার।”

প্রসিকিউশন পুলিশের এসআই এসএম বখতিয়ার খালেদ বলেন, “মালয়েশিয়া থেকে বড় অংকের রেমিটেন্স আসে। তাদের অপকর্মের কারণে রেমিটেন্সের যেন ক্ষতি না হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের প্রয়োজন।’

আসামিদের পক্ষে এমদাদুল হক (বিজয়) সহ কয়েকজন আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।

বিচারক বলেন, “মামলার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার। আসামিরা জড়িত হোক বা জড়িত না

হোক স্ট্রংলি তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। কারণে এখানে দুই দেশের সম্পর্ক জড়িত। সরকারের অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক বিষয় জড়িত।”

এরপর আদালত আসামিদের বক্তব্য শুনতে চান।

এ সময় জাহেদ আহমেদ বলেন, “আমাদের কোম্পানি থেকে ৬ জনকে চোখ বেঁধে একদিন সেখানকার থানায় রাখে। আমার হ্যান্ডফোন কোথায় জানতে চায়। পকেটে বললে, সেখান থেকে ফোন নিয়ে নেয়। পরে আবার রুমে নিয়ে যায়। সেখানে তল্লাশি করে, কিন্তু কিছু পায় না। দুইজন লোককে দেখিয়ে বলেন, এদের কারণে তোদের আটক করা হয়েছে। পরে চারজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে। বলে, তুই জঙ্গি হলে জেলে পাঠাব আর জঙ্গি না হলে দেশে পাঠাব।”

তিনি বলেন, “জঙ্গি হলে আমার সাজা হয়ে যেত। কুমিল্লা এবং কিশোরগঞ্জের দুই জনের সাজা হয়েছে। কোম্পানির নামে বিচার। আমরা সেখানে কাজ করেছি। এজন্য দেশে পাঠিয়ে দিছে। আমাকে দুই বছরের জন্য ব্ল্যাক লিস্ট করেছে। জঙ্গি হলে তো আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করতো।”

মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম বলেন, “আমি চার মাস ওই কোম্পানিতে কাজ করেছি। অন্যদের কারণে আমি ফেঁসে গেছি। ৮ বছরে কোনোদিন পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করেনি।

“মালয়েশিয়ায় যখন রেইড দেয়, হোস্টেল ঘেরাও করে রেইড দেয়। দুইজন জঙ্গি সংশ্লিষ্ঠতার জড়িত। দুইজন বাংলাদেশি দোষী। আমাদের ১১ জনের বিরুদ্ধে কোনো কোনো দোষ-ত্রুটি পায়নি। ইমিগ্রেশনে বাধা দেয়নি। ট্রাভেল পাসে দেশে আসছি। নিজ খরচে টিকেট কেটে এসেছি। মালয়েশিয়ায় পুলিশ আমাদের জেলে নেয়নি, ক্যাম্পে রেখেছিল।”

মাহফুজ বলেন, গত ১৭ জুন কুয়ালালামপুর যান তিনি।

“কোম্পানির হয়ে তিনদিন কাজ করি।”

আদালত বলেন, “প্রমাণের ভিত্তিতে তদন্ত কর্মকর্তাকে মামলাটি সুষ্ঠু করতে হবে। কারণ মালয়েশিয়া আমাদের কাছ থেকে কিন্তু ফলোআপ নিবে। বিষয়টা বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া সংশ্লিষ্ট। আর রিমান্ড তো ভয়ের কিছু না। হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে জিজ্ঞাসাবাদ হবে।”

গত ৩ জুলাই সোহাগ, রেদোয়ানুল ও জাহেদকে মালয়েশিয়ান পুলিশ দেশে ফের‍ত পাঠায়। পরদিন শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩ টায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এসে পৌঁছান তারা। এসময় পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিট তাদের হেফাজতে নেন। পরে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের কারাগারে হয়। বিমানবন্দর থানায় মামলা দায়েরের পর তাদের এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।এন্টি টেররিজম ইউনিটের ইনটেলিজেন্স শাখার পুলিশ পরিদর্শক মো. আব্দুল বাতেন ৫ জুলাই ৩৫ জনকে আসামিকে করে রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, “আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠনের আদর্শে অনুপ্রাণিত হন। তারা মলয়েশিয়ায় অবস্থান করা সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। তারা মালয়েশিয়ার আইপি ঠিকানা ব্যবহার করে বাংলাদেশি কতিপয় নাগরিকদের পরিচালিত সামাজিক যোগাযোগ মাধামে সদস্য সংগ্রহ এবং প্রচার-প্ররোচণা চালিয়ে আসছিল।

“আসামিরা মালয়েশিয়ায় অবস্থান করে সেদেশের জননিরাপত্তা, জনসাধারণের আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশে কর্যক্রম পরিচালনা করে। পরে গত ২৮ এপ্রিল থেকে ২১ জুন পর্যন্ত মালয়েশিয়ান পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। আসামিরা সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য হয়ে আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী স্বেচ্ছায় দেওয়া অনুদানের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করেন। পরে সংগৃহীত অর্থ ই-ওয়ালেট এবং আন্তর্জাতিক অর্থ স্থানান্তর পরিষেবার মাধ্যমে অন্যান্য দেশে অর্থ প্রেরণ করে। সংগঠনটির সদস্য হিসেবে বছরে ৫০০ রিঙ্গিত চাঁদা দিত।”

অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার আসামিদের মালয়েশিয়ান পুলিশ পর্যায়ক্রমে নিজ দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

“গোয়েন্দা তথ্য বলছে, আসামিরা পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশে এসে সন্ত্রাসবাদে জড়িত হয়ে উগ্রবাদী কার্যক্রম পরিচালনা করে দেশের অখণ্ডতা, সংহতি, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, জননিরাপত্তা, জনসাধারণের কোন অংশে আতঙ্ক সৃষ্টি উদ্দেশ্যে কার্যক্রম পরিচালনা করে যে কোন সময় বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি হামলার সম্ভবনা রয়েছে।”

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

“মালয়েশিয়ার পুলিশ বলে তুই জঙ্গি হলে জেলে পাঠাব আর জঙ্গি না হলে দেশে পাঠাব।"

মালয়েশিয়ায় জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা: ‘ফেঁসে গেছি’, আদালতে বললেন প্রবাসীরা বলেছেন-‘অন্যের অপকর্মে তারা ‘ফেঁসে গেছেন’

আপডেট সময় ১০:৫১:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫

 

‘জঙ্গিবাদে জড়িত’ থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার মালয়েশিয়া প্রবাসীরা রিমান্ড শুনানিতে নিজেদের ‘নির্দোষ’ দাবি করে বলেছেন, অন্যের অপকর্মে তারা ‘ফেঁসে গেছেন’।

মঙ্গলবার ৮ জুলাই বিমানবন্দর থানার মামলায় মালয়েশিয়ার চার প্রবাসীকে জিজ্ঞাবাদের জন্য ৪ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের শুনানি নিয়ে এদিন ঢাকার মহানগর হাকিম মিনহাজুর রহমান এ আদেশ দেন।

শুনানিতে আদালতে দাঁড়িয়ে এসব কথা বলেছেন মামলার আসামিরা।

রিমান্ডে যাওয়া চারজনের মধ্যে তিনজনকে শুক্রবার মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। তারা হলেন-নজরুল ইসলাম সোহাগ, মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম, জাহেদ আহমেদ। এছাড়া মাহফুজকে সোমবার কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে পুলিশ, তিনিও মালয়েশিায় থাকেন। দেশে এসেছেন কদিন আগে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এন্টি টেররিজম ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক কে. এম. তারিকুল ইসলাম প্রত্যেকের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।

তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক তারিকুল ইসলাম শুনানিতে বলেন, “আসামিরা মালয়েশিয়ায় ছিল। পুলিশ জঙ্গী সন্দেহে ইমিগ্রেশনে হস্তান্তর করে। তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ায় সন্ত্রাস বিরোধ আইনে মামলা করা হয়েছে। সন্ত্রাসী সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করেছিল কি না সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।”

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আজিজুল হক দিদার রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন।

পাবলিক প্রসিকিউটর দিদার বলেন, “প্রকৃত তথ্য পাওয়ার জন্য তাদের সাত দিনের রিমান্ড দরকার।”

প্রসিকিউশন পুলিশের এসআই এসএম বখতিয়ার খালেদ বলেন, “মালয়েশিয়া থেকে বড় অংকের রেমিটেন্স আসে। তাদের অপকর্মের কারণে রেমিটেন্সের যেন ক্ষতি না হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের প্রয়োজন।’

আসামিদের পক্ষে এমদাদুল হক (বিজয়) সহ কয়েকজন আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।

বিচারক বলেন, “মামলার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার। আসামিরা জড়িত হোক বা জড়িত না

হোক স্ট্রংলি তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। কারণে এখানে দুই দেশের সম্পর্ক জড়িত। সরকারের অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক বিষয় জড়িত।”

এরপর আদালত আসামিদের বক্তব্য শুনতে চান।

এ সময় জাহেদ আহমেদ বলেন, “আমাদের কোম্পানি থেকে ৬ জনকে চোখ বেঁধে একদিন সেখানকার থানায় রাখে। আমার হ্যান্ডফোন কোথায় জানতে চায়। পকেটে বললে, সেখান থেকে ফোন নিয়ে নেয়। পরে আবার রুমে নিয়ে যায়। সেখানে তল্লাশি করে, কিন্তু কিছু পায় না। দুইজন লোককে দেখিয়ে বলেন, এদের কারণে তোদের আটক করা হয়েছে। পরে চারজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে। বলে, তুই জঙ্গি হলে জেলে পাঠাব আর জঙ্গি না হলে দেশে পাঠাব।”

তিনি বলেন, “জঙ্গি হলে আমার সাজা হয়ে যেত। কুমিল্লা এবং কিশোরগঞ্জের দুই জনের সাজা হয়েছে। কোম্পানির নামে বিচার। আমরা সেখানে কাজ করেছি। এজন্য দেশে পাঠিয়ে দিছে। আমাকে দুই বছরের জন্য ব্ল্যাক লিস্ট করেছে। জঙ্গি হলে তো আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করতো।”

মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম বলেন, “আমি চার মাস ওই কোম্পানিতে কাজ করেছি। অন্যদের কারণে আমি ফেঁসে গেছি। ৮ বছরে কোনোদিন পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করেনি।

“মালয়েশিয়ায় যখন রেইড দেয়, হোস্টেল ঘেরাও করে রেইড দেয়। দুইজন জঙ্গি সংশ্লিষ্ঠতার জড়িত। দুইজন বাংলাদেশি দোষী। আমাদের ১১ জনের বিরুদ্ধে কোনো কোনো দোষ-ত্রুটি পায়নি। ইমিগ্রেশনে বাধা দেয়নি। ট্রাভেল পাসে দেশে আসছি। নিজ খরচে টিকেট কেটে এসেছি। মালয়েশিয়ায় পুলিশ আমাদের জেলে নেয়নি, ক্যাম্পে রেখেছিল।”

মাহফুজ বলেন, গত ১৭ জুন কুয়ালালামপুর যান তিনি।

“কোম্পানির হয়ে তিনদিন কাজ করি।”

আদালত বলেন, “প্রমাণের ভিত্তিতে তদন্ত কর্মকর্তাকে মামলাটি সুষ্ঠু করতে হবে। কারণ মালয়েশিয়া আমাদের কাছ থেকে কিন্তু ফলোআপ নিবে। বিষয়টা বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া সংশ্লিষ্ট। আর রিমান্ড তো ভয়ের কিছু না। হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে জিজ্ঞাসাবাদ হবে।”

গত ৩ জুলাই সোহাগ, রেদোয়ানুল ও জাহেদকে মালয়েশিয়ান পুলিশ দেশে ফের‍ত পাঠায়। পরদিন শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩ টায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এসে পৌঁছান তারা। এসময় পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিট তাদের হেফাজতে নেন। পরে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের কারাগারে হয়। বিমানবন্দর থানায় মামলা দায়েরের পর তাদের এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।এন্টি টেররিজম ইউনিটের ইনটেলিজেন্স শাখার পুলিশ পরিদর্শক মো. আব্দুল বাতেন ৫ জুলাই ৩৫ জনকে আসামিকে করে রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, “আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠনের আদর্শে অনুপ্রাণিত হন। তারা মলয়েশিয়ায় অবস্থান করা সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। তারা মালয়েশিয়ার আইপি ঠিকানা ব্যবহার করে বাংলাদেশি কতিপয় নাগরিকদের পরিচালিত সামাজিক যোগাযোগ মাধামে সদস্য সংগ্রহ এবং প্রচার-প্ররোচণা চালিয়ে আসছিল।

“আসামিরা মালয়েশিয়ায় অবস্থান করে সেদেশের জননিরাপত্তা, জনসাধারণের আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশে কর্যক্রম পরিচালনা করে। পরে গত ২৮ এপ্রিল থেকে ২১ জুন পর্যন্ত মালয়েশিয়ান পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। আসামিরা সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য হয়ে আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী স্বেচ্ছায় দেওয়া অনুদানের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করেন। পরে সংগৃহীত অর্থ ই-ওয়ালেট এবং আন্তর্জাতিক অর্থ স্থানান্তর পরিষেবার মাধ্যমে অন্যান্য দেশে অর্থ প্রেরণ করে। সংগঠনটির সদস্য হিসেবে বছরে ৫০০ রিঙ্গিত চাঁদা দিত।”

অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার আসামিদের মালয়েশিয়ান পুলিশ পর্যায়ক্রমে নিজ দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

“গোয়েন্দা তথ্য বলছে, আসামিরা পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশে এসে সন্ত্রাসবাদে জড়িত হয়ে উগ্রবাদী কার্যক্রম পরিচালনা করে দেশের অখণ্ডতা, সংহতি, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, জননিরাপত্তা, জনসাধারণের কোন অংশে আতঙ্ক সৃষ্টি উদ্দেশ্যে কার্যক্রম পরিচালনা করে যে কোন সময় বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি হামলার সম্ভবনা রয়েছে।”

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম