ইউক্রেইনের বিমান বাহিনী প্রায় সব ড্রোন ভূপাতিত করলেও ছয়টি রুশ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের কয়েকটির আঘাতে কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে।
ট্রাম্প আরও অস্ত্র পাঠানোর কথা বলতেই ইউক্রেইনে রেকর্ড ড্রোন হামলা রাশিয়ার

- আপডেট সময় ০৩:০৯:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
- / ৩৭ বার পড়া হয়েছে
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প কিইভকে আরও প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই ইউক্রেইনে রেকর্ডসংখ্যক ৭২৮টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।
চতুর্থ বছরে গড়ানো যুদ্ধের এই সময়ে ইউক্রেইনের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্রমেই চাপে পড়ছে। সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহে ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার আক্রমণ বেড়েছে।
ইউক্রেইনের বিমান বাহিনীর মুখপাত্র টিভিতে জানিয়েছেন, কিইভের সেনারা প্রায় সব ড্রোন ভূপাতিত করেছে। তবে রাশিয়ার ছোড়া ছয়টি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের কয়েকটির আঘাতে কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
রুশ হামলার জবাবে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়া যেসব উৎস থেকে যুদ্ধের অর্থায়ন করছে, যেমন তেল রপ্তানি, সেসবের ওপর ‘কঠোর নিষেধাজ্ঞা’ জরুরি। বুধবার ৯ জুলাই রোমে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত কিথ কেলগের সঙ্গে তার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উপর অসন্তুষ্ট মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত সোমবার ৭ জুলাই ইউক্রেইনকে ১০টি ‘প্যাট্রিয়ট’ ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেন।
এরপর মঙ্গলবার ৮ জুলাই এক মন্ত্রিসভা বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, তিনি রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের একটি প্রস্তাব বিবেচনা করছেন। এতে রাশিয়ার তেল, গ্যাস, ইউরেনিয়াম ও অন্যান্য পণ্য যেসব দেশ কেনে তাদের ওপর ৫০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের কথা বলা হয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, “পুতিন আমাদের ওপর অনেক কিছু ছুড়ে দেন… সবসময় খুব ভাল ব্যবহার করেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়না।”
পুতিনের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেবেন, সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমি কী করব তা আপনাদের এখন বলব না। আমরা একটু চমক রাখতে চাই।”
তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফিরে আসার পর ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে সম্প্রীতিমূলক মনোভাব দেখাচ্ছেন বলে অনেকেই মনে করছেন। ইউক্রেইনের প্রতি বাইডেন প্রশাসনের কঠোর সমর্থনের তুলনায় ট্রাম্পের অবস্থান তুলনামূলক নরম।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর কয়েক দফা আলোচনার চেষ্টা হলেও এখনও যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে রাশিয়া ট্রাম্পের প্রস্তাবে সায় দেয়নি। যদিও কিইভ প্রস্তাব মেনে নিয়েছে।
পেন্টাগনের সাম্প্রতিক একটি সিদ্ধান্তে ইউক্রেইনে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র সরবরাহ স্থগিত রাখা হয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্পের আরও প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র কিইভকে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পেন্টাগনের সেই সিদ্ধান্ত উল্টে দিতে পারে।
ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি মঙ্গলবার জানান, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে জরুরি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিশেষ করে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্রুত নিশ্চিত করা যায়।
রাশিয়ার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ফলে ইউক্রেইনের রাজধানী কিইভসহ অন্যান্য বড় শহরের বাসিন্দারা রাত কাটিয়েছেন বাঙ্কারে এবং পাতাল রেলে আশ্রয় নিয়ে।
ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট জানান, এই হামলার অন্যতম লক্ষ্য ছিল নেটো সদস্য পোল্যান্ডের সীমান্তের কাছে অবস্থিত পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লুতস্ক। পোল্যান্ডের সীমান্ত থেকে মাত্র ২০০ কিলোমিটার দূরে থাকা শহরটিতে বড় আকারের ক্ষয়ক্ষতি হলেও প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।
সূত্র : বিবিসি / রয়টার্স
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম