০৩:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫
বাংলাদেশে দুটি লাইসেন্স পেয়েছে স্টারলিংক। একটি ননজিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট অরবিট অপারেটরের; আরেকটি রেডিও কমিউনিকেশন অ্যাপারেটার্স হিসেবে।

দেশে স্টারলিংকের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ০৯:১৪:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫
  • / ২৭ বার পড়া হয়েছে

 

ইন্টারনেট ‘শাটডাউনের বর্ষপূর্তিতে’ দেশে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করল স্টারলিংক।

শুক্রবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে এ আনুষ্ঠানিক যাত্রার ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার এবং আন্তর্জাতিক কৌশল ও সরকারি সম্পর্ক বিভাগের পরিচালক রিচার্ড গ্রিফিথস। তবে তারা সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন নেননি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে লরেন বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা এবং তার প্রশাসনকে সাধুবাদ জানাতেই হয়, কারণ তিনি বাংলাদেশের জনগণের জন্য নজিরবিহীন এক সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন।

“আপনাদের নেতৃত্ব নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করেছেন। উচ্চগতির ইন্টারনেট এখন আর কল্পনা নয়। স্টারলিংক এখন ইন্টারনেটের ‘ক্রিটিক্যাল অ্যান্ড রিলায়েবল লাইফ লাইন’। বন্যা, সাইক্লোনের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনায় নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা দিতে সক্ষম স্টারলিংক।”

লরেন বলেন, “আমরা শুধু স্যাটেলাইট চালু করছি না, বরং টেলিমেডিসিন ও শিক্ষাসহ নানা সুবিধার নতুন দুয়ার উন্মোচন করছি। অন্যদের জন্য অনুকরণীয় জাতি আপনারা। নিজেদের জীবনের উন্নয়নে মানুষ স্টারলিংক ব্যবহার করবে। এদেশের মানুষ স্টারলিংক ব্যবহার করে কীভাবে তাদের জীবনযাত্রার বৈপ্লবিক পরিবর্তন করছে, সেটি দেখতে আমরা মুখিয়ে আছি।”

স্পেসএক্সের কর্মকর্তা রিচার্ড গ্রিফিথস দ্রুততম সময়ে স্টারলিংককে কার্যক্রম শুরুর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করে দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। বাংলাদেশে ব্যবসা অনেক ‘সহজ’ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

লিখিত বক্তব্য শেষ করেই সংবাদ সম্মেলনস্থল ত্যাগ করেন স্টারলিংকের দুই কর্মকর্তা।

এরপর প্রধান উপদেষ্টার আইসিটি বিষয়ক বিশেষ সহকারি ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ও বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

গত বছরের ১৮ জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার।

সংবাদ সম্মেলনে সেই ঘটনার কথা তুলে ধরে ফয়েজ আহমদ বলেন, “ইন্টারনেট শাটডাউনের ঠিক ৩৬৫ তম দিন আজ। ইতোমধ্যে স্টারলিংকের অর্ডার নেওয়া শুরু হয়েছে। আজ তারা আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করলেন। আগে সফট লঞ্চ হয়েছিল, আজ তাদের উপস্থিতিতে স্টারলিংক সেবার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এল।”

ফয়েজ আহমদ বলেন, “স্টারলিংকের মাধ্যমে পরিষ্কার বার্তা দিতে চাই যে, বিশ্বের সঙ্গে আমাদের জনগণের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার দুঃসাহস যেন আর কেউ না করে। নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট শুধু একটা সুবিধা নয়, অধিকার।

“স্টারলিংক বাংলাদেশের প্রতিটি স্থানে থাকবে, বিশেষ করে দূরবর্তী তৃণমূল এলাকায়। আজ বাংলাদেশ কানেক্টেড এবং এটা আর কখনও ডিসকানেক্টেড হবে না।”

সংবাদ সম্মেলনে টেলিযোগাযোগ নীতিমালা সংস্কারের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলেও উত্তর দেননি ফয়েজ আহমদ।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল এমদাদ উল বারী ও বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমাদুর রহমান।

এর আগে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেপের (বিএসসিএল) সঙ্গে ‘বি টু বি‘ চুক্তি করে স্টারলিংক।

বিএসসিল এমডি ইমাদুর রহমান ও স্টারলিংক এর ব্যবসা পরিচালনা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার চুক্তিতে সই করেন।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের মধ্যে ফোনালাপ হয়। সেই আলোচনার সূত্রে বাংলাদেশে স্টারলিংকের সেবা চালুর উদ্যোগ শুরু হয়।

এরপর বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনার জন্য ১০ বছর মেয়াদী দুটি লাইসেন্স পায় স্টারলিংক। এর একটি হচ্ছে ‘ননজিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট অরবিট অপারেটর লাইসেন্স’; অন্যটি ‘রেডিও কমিউনিকেশন অ্যাপারেটার্স লাইসেন্স।

 

 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশে দুটি লাইসেন্স পেয়েছে স্টারলিংক। একটি ননজিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট অরবিট অপারেটরের; আরেকটি রেডিও কমিউনিকেশন অ্যাপারেটার্স হিসেবে।

দেশে স্টারলিংকের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু

আপডেট সময় ০৯:১৪:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫

 

ইন্টারনেট ‘শাটডাউনের বর্ষপূর্তিতে’ দেশে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করল স্টারলিংক।

শুক্রবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে এ আনুষ্ঠানিক যাত্রার ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার এবং আন্তর্জাতিক কৌশল ও সরকারি সম্পর্ক বিভাগের পরিচালক রিচার্ড গ্রিফিথস। তবে তারা সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন নেননি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে লরেন বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা এবং তার প্রশাসনকে সাধুবাদ জানাতেই হয়, কারণ তিনি বাংলাদেশের জনগণের জন্য নজিরবিহীন এক সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন।

“আপনাদের নেতৃত্ব নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করেছেন। উচ্চগতির ইন্টারনেট এখন আর কল্পনা নয়। স্টারলিংক এখন ইন্টারনেটের ‘ক্রিটিক্যাল অ্যান্ড রিলায়েবল লাইফ লাইন’। বন্যা, সাইক্লোনের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনায় নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা দিতে সক্ষম স্টারলিংক।”

লরেন বলেন, “আমরা শুধু স্যাটেলাইট চালু করছি না, বরং টেলিমেডিসিন ও শিক্ষাসহ নানা সুবিধার নতুন দুয়ার উন্মোচন করছি। অন্যদের জন্য অনুকরণীয় জাতি আপনারা। নিজেদের জীবনের উন্নয়নে মানুষ স্টারলিংক ব্যবহার করবে। এদেশের মানুষ স্টারলিংক ব্যবহার করে কীভাবে তাদের জীবনযাত্রার বৈপ্লবিক পরিবর্তন করছে, সেটি দেখতে আমরা মুখিয়ে আছি।”

স্পেসএক্সের কর্মকর্তা রিচার্ড গ্রিফিথস দ্রুততম সময়ে স্টারলিংককে কার্যক্রম শুরুর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করে দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। বাংলাদেশে ব্যবসা অনেক ‘সহজ’ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

লিখিত বক্তব্য শেষ করেই সংবাদ সম্মেলনস্থল ত্যাগ করেন স্টারলিংকের দুই কর্মকর্তা।

এরপর প্রধান উপদেষ্টার আইসিটি বিষয়ক বিশেষ সহকারি ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ও বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

গত বছরের ১৮ জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার।

সংবাদ সম্মেলনে সেই ঘটনার কথা তুলে ধরে ফয়েজ আহমদ বলেন, “ইন্টারনেট শাটডাউনের ঠিক ৩৬৫ তম দিন আজ। ইতোমধ্যে স্টারলিংকের অর্ডার নেওয়া শুরু হয়েছে। আজ তারা আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করলেন। আগে সফট লঞ্চ হয়েছিল, আজ তাদের উপস্থিতিতে স্টারলিংক সেবার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এল।”

ফয়েজ আহমদ বলেন, “স্টারলিংকের মাধ্যমে পরিষ্কার বার্তা দিতে চাই যে, বিশ্বের সঙ্গে আমাদের জনগণের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার দুঃসাহস যেন আর কেউ না করে। নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট শুধু একটা সুবিধা নয়, অধিকার।

“স্টারলিংক বাংলাদেশের প্রতিটি স্থানে থাকবে, বিশেষ করে দূরবর্তী তৃণমূল এলাকায়। আজ বাংলাদেশ কানেক্টেড এবং এটা আর কখনও ডিসকানেক্টেড হবে না।”

সংবাদ সম্মেলনে টেলিযোগাযোগ নীতিমালা সংস্কারের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলেও উত্তর দেননি ফয়েজ আহমদ।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল এমদাদ উল বারী ও বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমাদুর রহমান।

এর আগে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেপের (বিএসসিএল) সঙ্গে ‘বি টু বি‘ চুক্তি করে স্টারলিংক।

বিএসসিল এমডি ইমাদুর রহমান ও স্টারলিংক এর ব্যবসা পরিচালনা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার চুক্তিতে সই করেন।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের মধ্যে ফোনালাপ হয়। সেই আলোচনার সূত্রে বাংলাদেশে স্টারলিংকের সেবা চালুর উদ্যোগ শুরু হয়।

এরপর বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনার জন্য ১০ বছর মেয়াদী দুটি লাইসেন্স পায় স্টারলিংক। এর একটি হচ্ছে ‘ননজিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট অরবিট অপারেটর লাইসেন্স’; অন্যটি ‘রেডিও কমিউনিকেশন অ্যাপারেটার্স লাইসেন্স।

 

 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম