এক সপ্তাহের ব্যবধানে টানা ছয় পরাজয়ের হতাশা ভুলে এবার পরপর দুই সিরিজ জেতার হাতছানি বাংলাদেশের।
শ্রীলঙ্কার পর পাকিস্তানের বিপক্ষেও ‘প্রথমের’ সামনে লিটনরা

- আপডেট সময় ০৫:৫৩:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫
- / ২৪ বার পড়া হয়েছে
গতিময় খেলা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। বিশ ওভারের এই লড়াইয়ে চিত্রপট বদলায় খুব দ্রুত। সেই গতির কিছুটা হয়তো টের পাচ্ছে বাংলাদেশও। সপ্তাহখানেক আগেও একের পর এক হতাশায় কাতর দলটির সামনে এখন টানা দুটি সিরিজ জয়ের হাতছানি।
ব্যাটিং-বোলিংয়ে দাপুটে পারফরম্যান্সে অনায়াস জয়ে যাত্রা শুরুর পর পাকিস্তানের বিপক্ষে এবার প্রথমবার সিরিজ জয়ের সুযোগ। বাকি দুই ম্যাচের একটি জিতলেই ট্রফি নিয়ে উল্লাসের সুযোগ পেয়ে যাবেন লিটন কুমার দাস, তাসকিন আহমেদরা।
অথচ ডাম্বুলায় গত রোববার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হওয়ার আগে টানা তিন সিরিজ হারের শঙ্কা জেঁকে বসেছিল বাংলাদেশ দলে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুই ম্যাচ হারের পর পাকিস্তান সফরে গিয়েও হেরেছিল তারা।
ভাগ্য বদলায়নি শ্রীলঙ্কা সফরের প্রথম টি-টোয়েন্টিতেও। টানা ছয় ম্যাচ হেরে সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হয় লিটনের দল। এরপর ডাম্বুলায় ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু। সেই ধারায় পরের রোববারের ম্যাচও জিতে এখন আরেকটি সিরিজ জয়ের সুযোগ তৈরি করে ফেলেছে বাংলাদেশ।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচ জিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি জেতার ৯ বছরের অপেক্ষা ঘোচায় স্বাগতিকরা। ২০২৩ সালের এশিয়ান গেমসে পাকিস্তানকে হারিয়েছিল তারা। কিন্তু সেই আসরে খেলেনি কোনো মূল দল।
দীর্ঘ জয়খরা কাটিয়ে এবার লিটনের দলের সামনে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জয়ের সুযোগ। সপ্তাহখানেক আগেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথমবার এই সাফল্য নিজেদের করেছে বাংলাদেশ।
পাকিস্তানের বিপক্ষে একটি ‘প্রথম’ এর মধ্যেই করে ফেলেছে বাংলাদেশ। এর আগে দুই দলের একাধিক ম্যাচের তিনটি সিরিজে কোনো ম্যাচ জিততে পারেনি তারা। ২০১৫ সালের জয় ছিল পাকিস্তানের ওই সফরের একমাত্র টি-টোয়েন্টি। ২০১৬ সালে তারা জেতে এশিয়া কাপে।
চারবারের চেষ্টায় টি-টোয়েন্টি সিরিজের কোনো ম্যাচে পাকিস্তানকে হারানোর পর সিরিজের ট্রফি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মঙ্গলবার দ্বিতীয় ম্যাচে লড়বে স্বাগতিকরা। হেরে গেলেও সুযোগ থাকবে, তবে নিশ্চিতভাবেই অপেক্ষা করতে চাইবেন না লিটন, তাসকিনরা।
টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত মাত্র দুবার টানা একাধিক সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ডকে হারায় তারা। ২০২২-২৩ সালে জেতে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে।
পাকিস্তানের বিপক্ষে বাকি দুই ম্যাচের একটি জিততে পারলে নেতৃত্বের অর্জনে সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহর আরও কাছে চলে যাবেন লিটন। আগের চার সিরিজের দুটিতে ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান। পঞ্চম সিরিজে তৃতীয় সাফল্যের সুযোগ তার সামনে।
সাকিবের নেতৃত্বে ৭টি দ্বিপাক্ষিক সিরিজের ৪টি জিতেছিল বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ দায়িত্বে বাংলাদেশের জয় ৪ সিরিজে। তবে তার এই সাফল্য ১১ সিরিজে অধিনায়কত্ব করে।
চলতি বছরই সাকিব-মাহমুদউল্লাহর রেকর্ড ছোঁয়া কিংবা ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকছে লিটনের। অক্টোবর-নভেম্বরে বাংলাদেশে খেলতে আসবে আয়ারল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অক্টোবরের শুরুতে আফগানিস্তানের বিপক্ষেও একটি সিরিজ আয়োজনের আলোচনা করছে বিসিবি।
এসব অর্জন ও রেকর্ডের হাতছানি কাজে লাগাতে প্রয়োজন পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা। সিরিজ শুরুর আগে লিটন বলেছিলেন, শ্রীলঙ্কা সফরের সাফল্যের ছন্দ ধরে রাখতে চান তারা।
পাকিস্তানকে প্রথম ম্যাচ হারানোর পর সংবাদ সম্মেলনে একই কথা বলেন ৫৬ রানের অপরাজিত ইনিংসে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতা পারভেজ হোসেন।
“শ্রীলঙ্কা থেকে আমাদের সবশেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজটা খুব ভালো খেলে এসেছি। সবাই খুব আত্মবিশ্বাসী। চেষ্টা করেছি ওই আত্মবিশ্বাসটা ধরে রাখার। তো ওইভাবেই আমরা আজকে (রোববার) নেমেছি।”
সিরিজের বাকি দুই ম্যাচেও এখন একই আত্মবিশ্বাসের মন্ত্রে হাঁটতে হবে বাংলাদেশ দলকে।
স্পোর্টস ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম