“বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের মাধ্যমে একটি নতুন বাংলাদেশ চাই। কিন্তু নতুন এই সংবিধানের বিপক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক গোষ্ঠী মাঠে নেমেছে,” বলেন তিনি।
বাহাত্তরের সংবিধান রক্ষায় বিভিন্ন গোষ্ঠী রাজপথে নেমেছে: নাহিদ

- আপডেট সময় ১০:৪৫:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
- / ৩০ বার পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজার শহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পদযাত্রা শেষে সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ট্যাগ:
বাহাত্তরের সংবিধান রক্ষার জন্য বিভিন্ন গোষ্ঠী রাজপথে নেমেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, “বাহাত্তরের সংবিধান ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের আকাঙ্ক্ষাকে বাদ দিয়ে মুজিববাদী সংবিধান প্রতিষ্ঠা করার চক্রান্ত। আমরা ৫৪ বছর সেই চক্রান্তের ভিতরে ছিলাম।
“কিন্তু জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা সেই চক্রান্ত থেকে বের হতে চাই। তবে বাহাত্তরের সংবিধানকে রক্ষায় জন্য বিভিন্ন গোষ্ঠী রাজপথে নেমেছে।”
শনিবার দুপুরে মৌলভীবাজার শহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এনসিপির পদযাত্রা শেষে সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর আমরা বলেছিলাম নতুন বাংলাদেশে নতুন বন্দোবস্ত থাকবে। পুরোনো সিস্টেম পুরোনো আইন পরিচালনা করতে দেব না। কিন্তু অভ্যুত্থানের পর নানা শক্তি পুরোনো সিস্টেম এগিয়ে নেওয়ার জন্য নানা চেষ্টা করছে।
“জুলাইয়ে আমাদের ভাই-বোন শহীদ হয়েছে। বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের মাধ্যমে একটি নতুন বাংলাদেশ চাই। কিন্তু নতুন এই সংবিধানের বিপক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক গোষ্ঠী মাঠে নেমেছে।”
৩ অগাস্ট এক দফা ঘোষণার মাধ্যমে শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে নিজেদের লড়াই স্পষ্ট করার কথা জানিয়ে এনসিপি নেতা বলেন, “আমাদের কোটা আন্দোলন শান্তি প্রিয় ছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ ও পুলিশ দিয়ে আমাদের ওপর হামলার কারণে বাধ্য হয়েছিলাম অভ্যুত্থানের জন্য।
“এই আন্দোলনে যারা পক্ষে ছিল, তারা স্বাধীনতার পক্ষের আর যারা বিরোধী ছিল তারা ফ্যাসিস্টের পক্ষের।”
অতীতে ভারতের আসাম ও ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক ছিল মন্তব্য করে নাহিদ ইসলাম বলেন, “আসামে দীর্ঘদিন ধরে বাঙালিবিরোধী আন্দোলন চলছে। আসামে বাঙালি মুসলমান ও হিন্দু সাব্যস্ত করে তাদের নাগরিকত্ব বাতিল করা হচ্ছে।
“কয়েক বছর আগে ‘হিন্দুত্ববাদী’ মোদী সরকার আসামের মুসলমানদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে রুপান্তর করেছে। আমরা সম্প্রীতির রাজনীতি করতে চাই। আর এই সম্প্রীতি পুরো দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে ছড়িয়ে দিতে চাই।”
অভ্যুত্থানের পর দাবি করা হয়েছিল কর্মসংস্থানের; যা এখনও পূরণ হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন নাহিদ ইসলাম। বলেন, “আমাদের অনেক স্বপ্ন ছিল, অনেক দাবি ছিল। সব দাবিকে নির্বাচনের সঙ্গে রুপান্তর করা হয়েছে। আমরা নির্বাচন চাই তবে বিচার ও সংস্কার ছাড়া নির্বাচন কঠিন হয়ে যাবে। জনগণ এমন নির্বাচন মেনে নিবে না।”
চা শ্রমিকদের কথা তুলে ধরে এনসিপি নেতা বলেন, চা শ্রমিকদের সঙ্গে মজুরি বৈষম্য হচ্ছে। শ্রীলংকায় চা শ্রমিকের মজুরি ৫৫০ টাকা, ভারতেও ৪০০ টাকার বেশি কিন্তু বাংলাদেশের শ্রমিকরা পান মাত্র ১৭৯ টাকা। আর এ জন্য কয়েক দিন পরপর আন্দোলন করেন তারা।
পথসভায় এনসিপি সদস্যসচিব আখতার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক এহতেশামুল হক, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, সিনিয়র মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা দিনা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমীন, অর্পিতা শ্যামা দেব এবং যুগ্ম সদস্যসচিব প্রিতম দাশ উপস্থিত ছিলেন।
পরে শ্রীমঙ্গল মহসীন অডিটরিয়ামে চা শ্রমিক, মনিপুরি, গারো, খাসিয়া, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন এনসিপির নেতাকর্মীরা। এ সময় প্রত্যেক জাতিগোষ্ঠী তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
পরে বিকাল ৪টার দিকে ‘জুলাই পদযাত্রা’ নিয়ে নেতাকর্মীরা কিশোরগঞ্জের দিকে রওয়ানা হন।
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি :বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম