উপকমিশনার তারেক জুবায়েরকে আগামী বুধবারের মধ্যে আত্মপক্ষ সমর্থন করে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
খায়রুল হকের শুনানিতে ’অসহযোগিতা’, শুনানিতে ’অসহযোগিতা’

- আপডেট সময় ১১:১১:০২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫
- / ৩৪ বার পড়া হয়েছে
সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে কারাগারে আটক রাখার শুনানিতে আদালতকে অসহযোগিতার অভিযোগের বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিশনারকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে ওই বিভাগের উপকমিশনার তারেক জুবায়েরকে আগামী বুধবারের (৩০ জুলাই) মধ্যে আত্মপক্ষ সমর্থন করে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্ল্যাহ।
বৃহস্পতিবার ২৪ জুলাই দেওয়া এ আদেশের বিষয়ে জানা গেছে রোববার ২৭ জুলাই।
এতে বলা হয়েছে, গত ২৪ জুলাই যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলায় এ বি এম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। শুনানির জন্য ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্ল্যাহকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওইদিন সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে পুলিশের ডিসি তারেক তার মোবাইল থেকে বিচারককে ফোন করেন। তখন তিনি আসামিকে আদালতের ভবনের নিচে প্রিজন ভ্যানে রেখে শুনানি করার জন্য ‘পীড়াপীড়ি করতে’ থাকেন। আদালতের ভাবমূর্তি রক্ষায় এবং বিচারিক কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করা থেকে বিরত রাখতে জন্য তিনি (হাকিম) ওই প্রস্তাব নাকচ করেন। পরে ৭টা ১৪ মিনিটে আসামিকে আদালতে উপস্থাপন করার ক্ষেত্রে দেরি হওয়ায় বিচারক তাকে ফোন দিয়ে জানতে চান, ‘আসামি হাজির করতে কেমন সময় লাগতে পারে’। জবাবে ডিসি তাকে বলেন, তিনি জানাতে পারবেন না।
আদালতকে ‘অসহযোগিতার’ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আদেশে বলা হয়, এসময় বিচারক আনুমানিক সময় জানানোর অনুরোধ করলে তিনি (ডিসি তারেক) তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং এ বিষয়ে কথা বলতে বা কোনো তথ্য দিতে ইচ্ছুক নন বলে জানান।
এছাড়া তিনি এ বিষয়ে আইন উপদেষ্টা ও ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন বলে চার পৃষ্ঠার আদেশে বলা হয়।
এতে বলা হয়, ডিসি বিচারিক কার্যধারায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেসির অধীন হওয়ার পরও দায়িত্বপ্রাপ্ত হাকিমকে মামলা সংক্রান্তে বিচারিক তথ্য প্রদানে অস্বীকার করে ‘ধৃষ্টতাপূর্ণ ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ’ আচরণ করেছেন, যা পুলিশ প্রবিধান ও পুলিশ আইনসহ প্রচলিত আইন পরিপন্থি এবং বিচারিক কার্যধারায় ‘অসহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড’ সুস্পষ্টভাবে ’পেনাল কোডের’ ১৭৬, ১৭৯ ও ২২৮ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
আদেশে বলা হয়, এছাড়া বিচারিক কাজে অসহযোগিতা করা স্পষ্টত আদালত অবমাননার সামিল। এ কর্মকাণ্ডের জন্য তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার জন্য বিষয়টি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি বরাবর কেন পাঠানো হবে না সে বিষয়ে ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হল।
আদেশের বিষয়টি তুলে ধরে তার বক্তব্য জানতে চাইলে ডিএমপির ডিসি তারেক বলেন, “এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। শনিবার থেকে আমি ছুটিতে আছি। আমি কিছু জানি না।“
রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে বৃহস্পতিবার সকালে সাবেক প্রধান বিচারপতি ও আইন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
পরে তাকে জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে যুবদল কর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় তাকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
নিঝুম আহমেদ – জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম