তারা প্রায়ই একে অপরকে কটাক্ষ করে কথা বলেন। এই বিরোধের মূল কারণ হচ্ছে, ওপেনএআইয়ের মূল উদ্দেশ্য নিয়ে তাদের মতের অমিল।
মাস্ককে নিয়ে আমি খুব বেশি ভাবি না: ওপেনএআইয়ের সিইও স্যাম অল্টম্যান

- আপডেট সময় ১২:১৪:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫
- / ৪৩ বার পড়া হয়েছে
ইলন মাস্ককে নিয়ে তেমন একটা ভাবেন না বলে স্পষ্ট করেছেন চ্যাটজিপিটির নির্মাতা ওপেনএআইয়ের সিইও স্যাম অল্টম্যান।
এর আগে ওপেনএআইয়ের সর্বশেষ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই মডেলটি মাইক্রোসফটের পণ্যে যোগ করার ঘোষণার পর মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক সতর্ক করে বলেছিলেন, ওপেনএআই এত শক্তিশালী হয়ে উঠেছে যে, একসময় মার্কিন সফটওয়্যার জায়ান্ট মাইক্রোসফটকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
তবে নিজের দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী মাস্কের এমন সতর্কবার্তাকে উড়িয়ে দিয়েছেন অল্টম্যান। তিনি বলেছেন, মাস্ক যা ভাবছেন তা নিয়ে তিনি ভাবিত নন।
বৃহস্পতিবার মাইক্রোসফটের সিইও সাত্যিয়া নাদেলা ঘোষণা দিয়েছেন, ওপেনএআইয়ের নতুন জিপিটি-৫ মডেলের পরিষেবা শিগগিরই তাদের কোপাইলট, মাইক্রোসফট ৩৬৫ কোপাইলট, গিটহাব কোপাইলট ও অ্যাজিউর এআই ফাউন্ড্রিসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে চালু করবেন।
এরপরই নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ মাস্ক বলেছেন, “মাইক্রোসফটকে গিলে খাবে ওপেনএআই।”
এদিকে, সাত্যিয়া বিষয়টিকে হালকাভাবে নিয়েছেন। তিনি এক্স-এ লিখেছেন, “মানুষ গত ৫০ বছর ধরেই এমন চেষ্টা করে আসছে, আর এটাই তো মজার ব্যাপার! প্রতিদিন কিছু না কিছু শেখা যায়, নতুন কিছু তৈরি হয়, একসঙ্গে কাজ করা যায়, আবার প্রতিযোগিতাও চলে।”
এ ছাড়া, মাস্কের এআই চ্যাটবট গ্রক ৪-এর প্রশংসাও করেছেন সাত্যিয়া, যা মাইক্রোসফটের প্ল্যাটফর্মেই চলছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে আমেরিকান সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি।
এ নিয়ে শুক্রবার সিএনবিসি’র ‘স্কোয়াক বক্স’ নামের এক অনুষ্ঠানে নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অল্টম্যান। মাস্কের মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি হেসে বলেন, “জানেন, আমি ও কে নিয়ে তেমন একটা ভাবি না।”
এরপর মাস্কের এসব মন্তব্যের অর্থ নিয়ে প্রশ্ন তুলে অল্টম্যান বলেছেন, “আমি তো ভেবেছিলাম তিনি সারাদিন এক্স-এ বসে কেবল পোস্টই করে যাচ্ছেন যে, ওপেনএআই খুব খারাপ, আমাদের মডেল ভালো না এবং আমরা কোনো কাজের কোম্পানিও না– এইসব।”
এ বিষয়ে সিএনবিসি মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি এক্স।
অল্টম্যান ও মাস্কের মধ্যে বেশ পুরোনো মতবিরোধ রয়েছে। তারা প্রায়ই একে অপরকে কটাক্ষ করে কথা বলেন। এই বিরোধের মূল কারণ হচ্ছে, ওপেনএআইয়ের মূল উদ্দেশ্য নিয়ে তাদের মতের অমিল।
২০১৫ সালে তারা দুজনে মিলে একসঙ্গে শুরু করেছিলেন কোম্পানিটি। ওই সময় তাদের লক্ষ্য ছিল, ওপেনএআই কেবল অলাভজনক এআই গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবেই কাজ করবে।
তবে বর্তমানে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান থেকে লাভবান কোম্পানি হিসেবে রূপান্তরিত হওয়ার চেষ্টা করছে ওপেনএআই। কারণ তাদের জনপ্রিয় এআই মডেল চ্যাটজিপিটির চাহিদা খুব দ্রুত বেড়েছে, যেটিকে পুঁজি করতে চাইছে তারা। আর এক্ষেত্রে এ প্রচেষ্টায় প্রধান সহায়ক হিসেবে এগিয়ে এসেছে মাইক্রোসফট।
এর আগে ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন মাস্ক, যেখানে তিনি চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ তুলেছিলেন। তবে পরে সেই মামলা তুলে নেন তিনি।
এ বছরের শুরুতে ওপেনএআইকে অধিগ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছিলেন টেসলা প্রধান মাস্কের নেতৃত্বে বিনিয়োগকারীদের এক কনসোর্টিয়াম। জবাবে, মাস্কের দেওয়া ৯ হাজার সাতশ ৪০ কোটি ডলারের এর এক দশমাংশ দাম অল্টম্যান প্রস্তাব করেছিলেন এক্স এর জন্য।
ওই সময় সামাজিক মাধ্যমে অল্টম্যান বলেছিলেন, “না, ধন্যবাদ, কিন্তু যদি চান তাহলে আমরা টুইটার নয়শ ৭৪ কোটি ডলারে কিনে নেব।”
অল্টম্যান সেই সময় সিএনবিসিকে আলাদাভাবে বলেছিলেন, তিনি মনে করেন, মাস্কের এ অধিগ্রহণের প্রস্তাবটি এক্সএআইয়ের ‘প্রতিযোগীকে ধীর করারই’ একটি প্রচেষ্টা।
প্রযুক্তি ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম