“প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি করা মাছ থেকে ২ থেকে ৩ কোটি টাকা রাজস্ব আসে সরকারের।”
আমদানি খরচ বৃদ্ধি: বেনাপোল দিয়ে মাছ আমদানি বন্ধ

- আপডেট সময় ০১:০৮:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫
- / ৪২ বার পড়া হয়েছে
কাস্টমসের নতুন শুল্কনীতির কারণে খরচ বেড়ে যাওয়ায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে মাছ আমদানি বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছেন আমদানিকারকেরা।
শনিবার থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীদের অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি সরকার বড় অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
রোববার সকালে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে কোনো মাছবাহী ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি।
এ নিয়ে এদিকে কাস্টমসের কোনো কর্মকর্তা এনবিআরের অনুমতি ছাড়া গণমাধ্যমে মন্তব্য করতে চাননি। তবে তারা মৌখিকভাবে জানিয়েছেন, ‘অনিয়ম ঠেকাতে’ কিছু ‘নিয়ম’ করা হয়েছে।
বেনাপোল বন্দর ফিসারিজ কোয়ারেন্টাই কর্মকর্তা আসওয়াদুল আলম বলেন, “শনিবার থেকে কোনো মাছ ভারত থেকে আমদানি হয়নি। তবে মাছবাহী ট্রাক ঢুকলে দ্রুত খালাসের সব ব্যবস্থা রয়েছে।”
বাণিজ্যিক সংশিষ্টরা বলছে, ভারত থেকে যেসব খাদ্য আমদানি হয় তার মধ্যে বড় একটি অংশ রয়েছে হিমায়িত মিঠা পানির মাছ ও সামুদ্রিক মাছ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর সামুদ্রিক মাছে কেজি প্রতি শুল্ক নির্ধারণ করেছে ৫০ সেন্ট মার্কিন ডলার বা ৩৮ টাকা কিন্তু বর্তমানে বেনাপোল কাস্টম হাউজ প্রতি কেজি ৭৫ সেন্ট শুল্ক আদায় করছে। এতে করে আমদানিকারকদের প্রতি চালানে অতিরিক্ত ২৫ সেন্ট বা বিশ টাকা গুনতে হচ্ছে।
এছাড়া কাস্টমস কর্তৃপক্ষ নতুন শর্ত দিয়েছে, প্রতিটি ট্রাকে ৮০ শতাংশ মিঠাপানির এবং ২০ শতাংশ সামুদ্রিক মাছ থাকতে হবে।
এখানেও লোকসানে পড়তে হচ্ছে অভিযোগ করে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেনাপোল কাস্টম হাউজের ডেপুটি কমিশনার মির্জা রাফেজা সুলতানা মাছ আমদানির বিষয়ে তদারকি করে থাকেন। বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলা হলেও ‘সুরাহ হয়নি’। ফলে বাধ্য হয়ে তারা মাছ আমদানি বন্ধ রেখেছেন।
বেনাপোল বন্দরের শ্রমিকরা বলছে, এমনিতেই বেনাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি ‘অর্ধেকের নিচে’ নেমে এসেছে। এরউপর আবার মাছ আমদানি বন্ধ থাকায় অনেক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে।
মাছবাহী ট্রাক চালক রাহুল বলেন, মাছ আমদানি বন্ধ থাকায় দুদিন ধরে তিনি ট্রাক নিয়ে বন্দরে বসে আছেন। হাতে কোনো কাজ নেই।
আমদানি বন্ধের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বেনাপোল আমদানি- রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, “প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি করা মাছ থেকে ২ থেকে ৩ কোটি টাকা রাজস্ব আসে সরকারের। বিষয়টি নিয়ে কাস্টমসের সঙ্গে কথা বলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি।
“খরচ বাড়ায় বাধ্য হয়ে মাছ আমদানি বন্ধ রেখেছেন আমদানিকারকরা।”
বেনাপোল কাস্টম হাউজের কমিশনার খালেদ মোহাম্মদ আবু হোসেন বলেন, তিনি মাত্র কয়েকদিন হলো যোগদান করেছেন বেনাপোল কাস্টমস হাউসে। মাছ আমদানিতে শুল্ক কর পরিশোধের ক্ষেত্রে নতুন করে কোনো নিয়ম চালুর বিষয়টি তার জানা নেই। তবে হিমায়িত (বরফায়িত) মাছের ওজন নির্নয় ও সঠিক ভাবে রাজস্ব আদায়ে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।
তিনি বলেন, “এসব নিয়ে কোনো ব্যবসায়ী এখন পর্যন্ত অভিযোগ করেননি। ব্যবসায়ীরা চাইলে কাস্টমসের সঙ্গে আলোচনা করতে পারবেন।”
বেনাপোল প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম