০১:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫
মেয়ের বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক করে ভাগ্নি জামাইকে নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ‘চোর সন্দেহে’ তাদের পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে জানায় পুলিশ।

রংপুরে জামাই-শ্বশুরকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪

রংপুর প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ০২:১৭:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৪১ বার পড়া হয়েছে

রংপুরের তারাগঞ্জে দুইজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

 

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় ‘চোর সন্দেহে’ জামাই ও শ্বশুরকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রোববার রাতে উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন তারাগঞ্জ থানার ওসি এম এ ফারুক।

গ্রেপ্তাররা হলেন- উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের চরকডাঙ্গা বালাপুর এলাকার মো. আলেফ উদ্দিনের ছেলে মো. আখতারুল ইসলাম (৪৫), রহিমাপুর গ্রামের খান সাহেবপাড়ার মো. আইয়ুব আলীর ছেলে মো. মিজানুর রহমান (২৬), বুড়িরহাট গ্রামের ডাঙ্গাপাড়ার মো. জাফর আলীর ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম (৪০), সয়ার বালাপুর গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলে মো. ইবাদত আলী (৩৫)।

সোমবার সকালে ওসি ফারুক বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ও ভিডিও বিশ্লেষণ করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারেও অভিযান চলছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কেউ ছাড় পাবেন না।

এ ঘটনায় নিহত রুপলাল রবিদাসের স্ত্রী ভারতী রানী অজ্ঞাতপরিচয় ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে আসামি করে তারাগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন।

মামলার বরাতে ওসি ফারুক বলেন, রুপলাল (৪০) তারাগঞ্জ বাজারে জুতা সেলাই করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। শনিবার মেয়ের বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক করতে মিঠাপুকুর উপজেলার ছড়ান বালুয়া এলাকায় গিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভাগ্নি জামাই প্রদীপ লালকে (৩৫) নিয়ে ভ্যানে করে বাড়ি ফেরার পথে সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা মোড়ে স্থানীয় কয়েকজন তাদের পথরোধ করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তারা প্রদীপের কালো ব্যাগ তল্লাশি করে একটি কোমল পানীয়ের বোতল ও ওষুধ পান। বোতলের ঢাকনা খুলে গন্ধ শুকতে গিয়ে বুড়িরহাট এলাকার মেহেদী হাসানসহ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। এতে লোকজন উত্তেজিত হয়ে রুপলাল ও প্রদীপকে বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে নিয়ে পাঁচ-সাতশ মানুষ লাঠিসোঁটা ও লোহার রড দিয়ে মারধর করেন।

খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক রুপলালকে মৃত ঘোষণা করেন এবং প্রদীপকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে ভোর ৪টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রদীপও মারা যান।

এদিকে রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রুপলালের লাশ নিয়ে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। এতে মহাসড়কের দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা দ্রুত আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

পরে দোষীদের বিচারের আওতার আনার আশ্বাসে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ইউএনওর অনুরোধে সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয় এলাকাবাসী।

 

 

 

রংপুর প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

মেয়ের বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক করে ভাগ্নি জামাইকে নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ‘চোর সন্দেহে’ তাদের পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে জানায় পুলিশ।

রংপুরে জামাই-শ্বশুরকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪

আপডেট সময় ০২:১৭:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫

 

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় ‘চোর সন্দেহে’ জামাই ও শ্বশুরকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রোববার রাতে উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন তারাগঞ্জ থানার ওসি এম এ ফারুক।

গ্রেপ্তাররা হলেন- উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের চরকডাঙ্গা বালাপুর এলাকার মো. আলেফ উদ্দিনের ছেলে মো. আখতারুল ইসলাম (৪৫), রহিমাপুর গ্রামের খান সাহেবপাড়ার মো. আইয়ুব আলীর ছেলে মো. মিজানুর রহমান (২৬), বুড়িরহাট গ্রামের ডাঙ্গাপাড়ার মো. জাফর আলীর ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম (৪০), সয়ার বালাপুর গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলে মো. ইবাদত আলী (৩৫)।

সোমবার সকালে ওসি ফারুক বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ও ভিডিও বিশ্লেষণ করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারেও অভিযান চলছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কেউ ছাড় পাবেন না।

এ ঘটনায় নিহত রুপলাল রবিদাসের স্ত্রী ভারতী রানী অজ্ঞাতপরিচয় ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে আসামি করে তারাগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন।

মামলার বরাতে ওসি ফারুক বলেন, রুপলাল (৪০) তারাগঞ্জ বাজারে জুতা সেলাই করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। শনিবার মেয়ের বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক করতে মিঠাপুকুর উপজেলার ছড়ান বালুয়া এলাকায় গিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভাগ্নি জামাই প্রদীপ লালকে (৩৫) নিয়ে ভ্যানে করে বাড়ি ফেরার পথে সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা মোড়ে স্থানীয় কয়েকজন তাদের পথরোধ করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তারা প্রদীপের কালো ব্যাগ তল্লাশি করে একটি কোমল পানীয়ের বোতল ও ওষুধ পান। বোতলের ঢাকনা খুলে গন্ধ শুকতে গিয়ে বুড়িরহাট এলাকার মেহেদী হাসানসহ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। এতে লোকজন উত্তেজিত হয়ে রুপলাল ও প্রদীপকে বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে নিয়ে পাঁচ-সাতশ মানুষ লাঠিসোঁটা ও লোহার রড দিয়ে মারধর করেন।

খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক রুপলালকে মৃত ঘোষণা করেন এবং প্রদীপকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে ভোর ৪টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রদীপও মারা যান।

এদিকে রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রুপলালের লাশ নিয়ে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। এতে মহাসড়কের দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা দ্রুত আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

পরে দোষীদের বিচারের আওতার আনার আশ্বাসে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ইউএনওর অনুরোধে সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয় এলাকাবাসী।

 

 

 

রংপুর প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম