১০:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫
২০২০ সালের অক্টোবরে সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হান আহমদকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়।

সিলেটে হেফাজতে যুবক হত্যা: প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবরের জামিন

সিলেট প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ০৫:১২:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৪৪ বার পড়া হয়েছে

 

সিলেট বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশ হেফাজতে রায়হান আহমদ (৩৪) নিহতের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া জামিন পেয়েছেন।

সিলেট কেন্দ্রীয় কারগার-২ এর ডেপুটি জেলার মনিরুল হাসান সোমবার বলেন, “উচ্চ আদালত থেকে নিম্ন আদালত হয়ে জামিনের কাগজ রোববার আমাদের কাছে পৌঁছায়। পরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে সন্ধ্যায় এসআই আকবর জামিনে মুক্তি পান।”

তিনি জানান, “এসআই আকবর সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন। ২৫ মার্চ তাকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এ আনা হয়। এরপর থেকে তিনি সেখানেই ছিলেন।”

তবে প্রধান অভিযুক্তের এমন জামিনে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন নিহত রায়হানের মা সামলা বেগম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এসআই আকবর হোসেন এখন দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারেন। তার জামিনে আমরা হতাশ।”

মামলার বরাতে জানা যায়, ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেট নগরীর পুলিশের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হান আহমদকে নির্যাতন করা হয়। ওই সময় এসআই আকবর ফাঁড়ির ইনচার্জ ছিলেন। পরদিন ভোরে গুরুতর অবস্থায় তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

রায়হান সিলেট নগরীর আখালিয়া এলাকার নেহারিপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে।

তখন তার পরিবার পুলিশি নির্যাতনের হত্যার অভিযোগ আনে। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে মারা গেছেন রায়হান।

এ ঘটনায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তারের করা মামলা মহানগর পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তদন্তে ফাঁড়িতে নিয়ে রায়হানকে নির্যাতনের সত্যতা পাওয়া যায়।

এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে ১২ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। পরে পুলিশি হেফাজত থেকে কনস্টেবল হারুনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। আকবরকে ৯ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

২০২১ সালের ৫ মে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পিবিআই। অভিযোগপত্রে এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে (৩২) প্রধান অভিযুক্ত করা হয়। অন্য অভিযুক্তরা হলেন- ফাঁড়ির এএসআই আশেক-ই এলাহী (৪৩), কনস্টেবল মো. হারুন অর রশিদ (৩২), টিটু চন্দ্র দাস (৩৮), সাময়িক বরখাস্ত এসআই মো. হাসান উদ্দিন (৩২) ও এসআই আকবরের আত্মীয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান (৩২)।

২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর থেকে তদন্ত শুরু করে পিবিআই। পরদিন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে রায়হানের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করা হয়। এর এক সপ্তাহ পর ২২ অক্টোবর প্রতিবেদন দেওয়া হয়।

দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের সঙ্গে প্রথম প্রতিবেদনের সামঞ্জস্য পায় ফরেনসিক মেডিকেল বোর্ড। অতিরিক্ত আঘাতের কারণে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান ওসমানী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান মো. শামসুল ইসলাম।

তিনি জানান, ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতের জখমই তার শরীরে বেশি ছিল।

 

 

সিলেট প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

২০২০ সালের অক্টোবরে সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হান আহমদকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়।

সিলেটে হেফাজতে যুবক হত্যা: প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবরের জামিন

আপডেট সময় ০৫:১২:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫

 

সিলেট বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশ হেফাজতে রায়হান আহমদ (৩৪) নিহতের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া জামিন পেয়েছেন।

সিলেট কেন্দ্রীয় কারগার-২ এর ডেপুটি জেলার মনিরুল হাসান সোমবার বলেন, “উচ্চ আদালত থেকে নিম্ন আদালত হয়ে জামিনের কাগজ রোববার আমাদের কাছে পৌঁছায়। পরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে সন্ধ্যায় এসআই আকবর জামিনে মুক্তি পান।”

তিনি জানান, “এসআই আকবর সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন। ২৫ মার্চ তাকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এ আনা হয়। এরপর থেকে তিনি সেখানেই ছিলেন।”

তবে প্রধান অভিযুক্তের এমন জামিনে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন নিহত রায়হানের মা সামলা বেগম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এসআই আকবর হোসেন এখন দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারেন। তার জামিনে আমরা হতাশ।”

মামলার বরাতে জানা যায়, ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেট নগরীর পুলিশের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হান আহমদকে নির্যাতন করা হয়। ওই সময় এসআই আকবর ফাঁড়ির ইনচার্জ ছিলেন। পরদিন ভোরে গুরুতর অবস্থায় তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

রায়হান সিলেট নগরীর আখালিয়া এলাকার নেহারিপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে।

তখন তার পরিবার পুলিশি নির্যাতনের হত্যার অভিযোগ আনে। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে মারা গেছেন রায়হান।

এ ঘটনায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তারের করা মামলা মহানগর পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তদন্তে ফাঁড়িতে নিয়ে রায়হানকে নির্যাতনের সত্যতা পাওয়া যায়।

এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে ১২ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। পরে পুলিশি হেফাজত থেকে কনস্টেবল হারুনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। আকবরকে ৯ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

২০২১ সালের ৫ মে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পিবিআই। অভিযোগপত্রে এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে (৩২) প্রধান অভিযুক্ত করা হয়। অন্য অভিযুক্তরা হলেন- ফাঁড়ির এএসআই আশেক-ই এলাহী (৪৩), কনস্টেবল মো. হারুন অর রশিদ (৩২), টিটু চন্দ্র দাস (৩৮), সাময়িক বরখাস্ত এসআই মো. হাসান উদ্দিন (৩২) ও এসআই আকবরের আত্মীয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান (৩২)।

২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর থেকে তদন্ত শুরু করে পিবিআই। পরদিন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে রায়হানের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করা হয়। এর এক সপ্তাহ পর ২২ অক্টোবর প্রতিবেদন দেওয়া হয়।

দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের সঙ্গে প্রথম প্রতিবেদনের সামঞ্জস্য পায় ফরেনসিক মেডিকেল বোর্ড। অতিরিক্ত আঘাতের কারণে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান ওসমানী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান মো. শামসুল ইসলাম।

তিনি জানান, ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতের জখমই তার শরীরে বেশি ছিল।

 

 

সিলেট প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম