বাজার করে ফেরার পর সঠিকভাবে পণ্য সংরক্ষণ না করলে দ্রুত নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
যেসব খাবার খোলা অবস্থায় ফেলে রাখা ঠিক না

- আপডেট সময় ০৪:৫৪:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫
- / ৩১ বার পড়া হয়েছে

রান্নাঘরের সুন্দর করে সাজানো ফলমূল বা ডিম দেখতে যতই ভালো লাগুক, বাস্তবে কিছু খাবার সেখানে রাখা একেবারেই ঠিক নয়।
রান্নাঘরের সুন্দর করে সাজানো ফলমূল বা ডিম দেখতে যতই ভালো লাগুক, বাস্তবে কিছু খাবার সেখানে রাখা একেবারেই ঠিক নয়।
অনেকেই বাজার থেকে কিনে আনা পণ্য খোলা অবস্থায় রেখে দেন। আসলে খামার থেকে সরাসরি কেনা পণ্য ও দোকান থেকে কেনা পণ্যের সংরক্ষণ প্রক্রিয়া এক নয়।
ফলে ঘরে এনে সেগুলোর সংরক্ষণেও ভিন্নতা রাখা জরুরি।
ডিম
খামার থেকে কেনা তাজা ডিম ও দোকান থেকে কেনা ডিমের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।
এই বিষয়ে রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে রান্নাবিষয়ক মার্কিন লেখক এরিয়াল ক্লেইন বলেন, “খামারের তাজা ডিমে একটি প্রাকৃতিক সুরক্ষা স্তর থাকে, যা ডিমের গায়ে লেপা থাকে এবং ব্যাক্টেরিয়া ঢোকা থেকে রক্ষা করে। ফলে এগুলো কিছুটা সময় কক্ষ তাপমাত্রায় রাখা যায়।”
তবে দোকানের ডিম বিক্রির আগে ধোয়া হয়, ফলে সুরক্ষা স্তর নষ্ট হয়ে যায়। তাই দোকান থেকে কেনা ডিম দুই ঘণ্টার বেশি রান্নাঘরে রাখলে খোলের ওপর ব্যাক্টেরিয়া জন্ম নিতে পারে, যা ডিমের ভেতরের মান নষ্ট করে।
ডিম ফ্রিজে রাখলে এর স্থায়িত্ব বাড়ে, অপচয়ও কম হয়।
আলু
অনেকে মনে করেন আলু রান্নাঘরে খোলা অবস্থায় রাখলে সপ্তাহের পর সপ্তাহ ভালো থাকবে। তবে সরাসরি আলো ও তাপের সংস্পর্শে আলুর খোসা দ্রুত সবুজ হয়ে যায় এবং অঙ্কুর গজাতে শুরু করে। ফলে স্বাদ ও পুষ্টি দুই-ই নষ্ট হয়।
“আলু সংরক্ষণের জন্য অন্ধকার, শীতল জায়গা সবচেয়ে উপযুক্ত— যেমন রান্নাঘরের আলমারি বা কেবিনেটে। চাইলে বাদামি কাগজের ব্যাগে রাখা যেতে পারে, তবে কখনই বায়ুরোধী পাত্রে রাখা যাবে না। কারণ এতে ভেতরে আর্দ্রতা জমে আলু নষ্ট হয়ে যায়”- বলেন ক্লেইন।
সঠিকভাবে সংরক্ষণ করলে আলু প্রায় দুই সপ্তাহ ভালো থাকে।
পেঁয়াজ
আলুর মতোই আলো ও তাপের সংস্পর্শে দ্রুত নষ্ট হয়। তাই পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য অন্ধকার ও ঠাণ্ডা জায়গা উপযুক্ত।
তবে একটি বিষয় মনে রাখা জরুরি— আলু ও পেঁয়াজ কখনও একসাথে রাখা যাবে না। আলু থেকে নির্গত এথিলিন গ্যাস পেঁয়াজের অঙ্কুরোদগম বাড়িয়ে দেয়, ফলে তা দ্রুত নষ্ট হয়।
সঠিক পরিবেশে রাখলে পেঁয়াজ প্রায় এক মাস পর্যন্ত ভালো থাকে, যা রান্নার জন্য বেশ সুবিধাজনক। কেবিনেট, বেসমেন্ট বা রান্নাঘরে ছোট আলমারিতে পেঁয়াজ রাখা ভালো।
শসা
শসা দেখতে তাজা রাখার জন্য অনেকেই রান্নাঘরে তাকের ওপর খোলা রেখে দেন। এতে শসা দ্রুত নরম হয়ে যায়।
ক্লেইন বলেন, “শসা অতিরিক্ত আর্দ্রতা ও আর্দ্র পরিবেশ সহ্য করতে পারে না। তাই রান্নাঘরে খোলা তাকে দুয়েক ঘণ্টার বেশি রাখলে এর টাটকা ভাব হারায়।”
ফ্রিজে রাখলে শসা কয়েক দিন পর্যন্ত সতেজ থাকে। রান্না বা সালাদে ব্যবহার করার আগ পর্যন্ত শসা ঠাণ্ডা স্থানে রাখাই ভালো।
পাকা ফলমূল
কিছু ফল ও সবজি চুলার পাশের খোলা তাকে রাখলে দ্রুত পাকে। তবে বেশি সময় রাখলে অতিপাকা হয়ে যায়, আর পচতে শুরু করে। যেমন- কলা, পিচ, অ্যাভোকাডো ইত্যাদি ফল পাকার পর বেশি সময় তাকে রাখলে মাছি জন্মাতে পারে।
তাই ফল পাকার পর ফ্রিজে রেখে দিলে তা আরও কয়েক দিন ভালো থাকে। এতে অপচয় কমে এবং ফলের স্বাদও বজায় থাকে।
কাটা ফল ও সবজি
বাজার থেকে কেনা কাটা ফলমূল অথবা বাসায় কেটে রাখা সবজি কখনই রান্নাঘরের খোলা তাকে রাখা উচিত নয়।
কেটে রাখার পর ফল ও সবজির ভেতরের অংশে সহজেই ব্যাক্টেরিয়া জন্মায়, যা খাদ্যজনিত অসুস্থতার ঝুঁকি বাড়ায়।
তাই কাটা ফল বা সবজি রান্নাঘরের তাকে না রেখে সঙ্গে সঙ্গে ফ্রিজের ঠাণ্ডা জায়গায় রাখা উচিত। এতে সতেজ থাকবে। আর খাওয়ার জন্য নিরাপদ হবে।
লাইফস্টাইল ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম