এ সময়ের মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা না হলে জরুরি বিভাগের সেবাও বন্ধ করে দেয়ার হুঁশিয়ারী দিয়েছেন তারা।
বরিশাল মেডিকেলে হামলা: ইন্টার্নদের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম, শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন

- আপডেট সময় ০৫:১১:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫
- / ৩৯ বার পড়া হয়েছে
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক-কর্মচারীর উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে এবার ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে কর্মবিরতিতে থাকা ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
এ সময়ের মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা না হলে জরুরি বিভাগের সেবাও বন্ধ করে দেয়ার হুঁশিয়ারী দিয়েছেন তারা।
পাশাপাশি হামলার প্রতিবাদে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা সোমবার থেকে ক্লাস বর্জন শুরু করেছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা না হলে তারাও অনির্দিষ্টকালের জন্য এ কর্মসূচি পালন করবে বলে জানিয়েছে।
সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব ঘোষণা দিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের প্রতিনিধি নাজমুল হুদা বলেন, “আমরা স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবির বিরুদ্ধে নই। আমরা তার সঙ্গে সংহতি রেখে সাত দফা দাবি দিয়েছি এবং এর মধ্যেই আমাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্টাফদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে।”
“গতকাল (রোববার) আমাদের মেডিসিন ইউনিট-২ এর মেডিক্যাল অফিসার দিলীপ রায় স্যারের উপর হামলা করে বাজেভাবে আহত করা হয় এবং হাসপাতালে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে একটা ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করা হয়। এতে রোগী ও চিকিৎসকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং আমাদের নারী চিকিৎসকরা ভয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করেন । “
এ হামলার প্রতিবাদে তারা কর্মবিরতি শুরু করেছেন জানিয়ে বলেন, “আমরা তাৎক্ষণিক সবার সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেই হামলার ওই ঘটনার বিচার এবং দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে কর্মবিরতি করার। সেই অনুযায়ী রোববার বিকাল ৩টা থেকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দেড়শতাধিক ইন্টার্ন চিকিৎসক কর্মবিরতিতে যায়।”
নাজমুল হুদা আরও বলেন, “আমরা হাসপাতালের অন্য স্টাফদের দেয়া ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটামের সঙ্গে একমত। তবে আমাদের দাবি হামলার ওই ঘটনার সাথে যারা জড়িত এবং উস্কানিদাতা যারা রয়েছে তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে।
“অন্যথায় এখন যেটুকু ইমারজেন্সি সার্ভিস (আউটডোর, জরুরি বিভাগ ও অ্যাডমিশন ওয়ার্ডে চলমান চিকিৎসা সেবা) হাসপাতালে চালু আছে তাসহ সকল সেবা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হব।”
অপরদিকে সংবাদ সম্মেলনে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জুবায়ের আল মাহমুদ বলেন, “আমরাও স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের আন্দোলনের সঙ্গে একমত এবং আমরা চাই শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সংস্কার। তবে সম্প্রতি আমরা দেখলাম আন্দোলনকারীদের ক্ষোভ সাদা অ্যাপ্রোনধারীসহ হাসপাতালের নার্স ও স্টাফদের ওপর।
“আমরা দালালদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে চাই। কিন্তু আন্দোলনকারীরা আমাদের শিক্ষার্থীদেরও হেনস্থা করছে, আমাদেরও ধাওয়া দিচ্ছে। সর্বশেষ তারা আমাদের দিলীপ স্যারের ওপর হামলা চালিয়েছে।”
এর প্রতিবাদে সোমবার থেকেই ক্লাশ বর্জন শুরু করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “এরকম পরিস্থিতিতে আমরা ইন্টার্ন চিকিৎসক অর্থাৎ সিনিয়র ভাইদের সাথে একমত পোষণ করছি এবং হামলাকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। আর তা না হলে আমরা সব ধরনের ক্লাশ ও ওয়ার্ড কার্যক্রম বয়কট করবো এবং সকল শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ থাকবে।”
দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সারাদেশে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়ন ও হয়রানি বন্ধের দাবিতে সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল ও সড়কে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। দাবির সপক্ষে কয়েকজন শিক্ষার্থী অনশনও করছেন।
এর মধ্যেই রোববার শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালের এক চিকিৎসককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে আন্দোলনকারীরা। এছাড়া তারা হাসপাতাল লক্ষ্য করে ইটের নিক্ষেপ করলে আঘাতে কর্মচারীসহ দুইজন আহত হয়েছে।
বরিশাল প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম