০৭:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫
বছর দশেক আগে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে তার বিরুদ্ধে লেসে মাজেস্তি আইনে এ মামলা হয়েছিল।

রাজপরিবারকে অপমানের মামলায় খালাস সাবেক থাই প্রধানমন্ত্রী থাকসিন

মিজানুর রহমান খান - বিশেষ প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ০২:৩৫:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫
  • / ১৭ বার পড়া হয়েছে

রায়ের আগে আদালতে এসে পৌঁছার পর সমর্থকদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়ছেন থাকসিন সিনাওয়াত্রা। ছবি: রয়টার্স

 

রাজপরিবারকে অপমানের অভিযোগে হওয়া মামলায় থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিতর্কিত ধনকুবের থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে খালাস দিয়েছে ব্যাংককের একটি আদালত।

বছর দশেক আগে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে তার বিরুদ্ধে লেসে মাজেস্তি আইনে এ মামলা হয়েছিল। দোষী সাব্যস্ত হলে তার ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারতো।

বিবিসি জানিয়েছে, থাইল্যান্ডের এই লেসে মাজেস্তি আইনে দেশের সবার জন্যেই রাজপরিবারকে হুমকি দেওয়া বা কোনোভাবে তাদের অবমাননা করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

যদিও আইনটি প্রায়ই আন্দোলনকারী ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমাতেই ব্যবহৃত হয় বলে ভাষ্য সমালোচকদের।

এমন এক সময়ে থাকসিন এ মামলা থেকে খালাস পেলেন যখন তার মেয়ে পায়েতংতার্ন সিনাওয়াত্রা এমন এক আইনি জটিলতায় পড়েছেন, যা তার প্রধানমন্ত্রীর পদও কেড়ে নিতে পারে। পায়েতংতার্নের প্রধানমন্ত্রী পদ আপাতত স্থগিত আছে।

পায়েতংতার্নের বিরুদ্ধে মামলা কয়েক দশক ধরে থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে আসা সিনাওয়াত্রা পরিবারকে জোর ধাক্কা দিয়েছিল, শুক্রবার থাকসিনের খালাস তাদের ও সমর্থকদের জন্য খানিক স্বস্তি নিয়ে এল।

থাকসিনের এক আইনজীবী উইনিয়াত চারমন্ত্রে সাংবাদিকদের বলেন, রায় ঘোষণার পর থাকসিন হাসিমুখে আইনজীবীদের ধন্যবাদ দেন এবং ‘এখন থেকে দেশের কল্যাণে কাজ করতে পারবো’ বলে মন্তব্য করেন।

তার বিরুদ্ধে রাজপরিবারকে অবমাননার অভিযোগ আনা হয় ২০১৬ সালে, সেসময় থাইল্যান্ডে সামরিক শাসন চলছিল, থাকসিন ছিলেন নির্বাসনে।

গত বছর দেশে ফেরার পর ওই মামলা ফের সক্রিয় হয়।

থাকসিনের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাটি যে শুরু থেকেই বেশ দুর্বল ছিল, প্রথম দর্শনেই তা বোঝা যায়, বলছে বিবিসি।

দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদপত্রে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে থাকসিন বলেছিলেন, থাইল্যান্ডে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উচ্ছেদে ২০১৪ সালে যে সামরিক অভ্যুত্থান হয়, সেটি ‘প্রাসাদের কয়েকজন’ এবং প্রিভি কাউন্সিলের সদস্যরা উসকে দিয়েছিলেন বলেই তার ধারণা।

ওই অভ্যুত্থানে থাকসিনের বোন ইংলাক সিনাওয়াত্রা ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন। এর আগে ২০০৬ সালে আরেক অভ্যুত্থানে থাকসিনও ক্ষমতাচ্যুত হন।

সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী যে প্রিভি কাউন্সিলের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান উসকে দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন, সেটি থাইল্যান্ডের শাসনকাঠামোতে বেশ প্রভাবশালী। এটি মূলত ১৯ সদস্যের একটি পরিষদ, যারা থাই রাজাকে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেয়।

কিন্তু রাজপরিবারের অবমাননা নিয়ে থাইল্যান্ডে যে আইন আছে, তার আওতায় এই প্রিভি কাউন্সিল পড়ে না। ওই আইনে কেবল রাজা, রানি, সিংহাসনের উত্তরাধিকার বা সাময়িকভাবে এসব দায়িত্ব পালন করা ব্যক্তিদের অমর্যাদাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।

কিন্তু থাকসিন যেহেতু সুনির্দিষ্ট কারও নাম নেননি, তাই সেটি সরাসরি রাজপরিবারের কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে অবমাননা হিসেবে গণ্য হয় না, বিচারক এমনটা বলে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ খারিজ করে দেন।

 

 

মিজানুর রহমান খান – বিশেষ প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

বছর দশেক আগে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে তার বিরুদ্ধে লেসে মাজেস্তি আইনে এ মামলা হয়েছিল।

রাজপরিবারকে অপমানের মামলায় খালাস সাবেক থাই প্রধানমন্ত্রী থাকসিন

আপডেট সময় ০২:৩৫:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫

 

রাজপরিবারকে অপমানের অভিযোগে হওয়া মামলায় থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিতর্কিত ধনকুবের থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে খালাস দিয়েছে ব্যাংককের একটি আদালত।

বছর দশেক আগে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে তার বিরুদ্ধে লেসে মাজেস্তি আইনে এ মামলা হয়েছিল। দোষী সাব্যস্ত হলে তার ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারতো।

বিবিসি জানিয়েছে, থাইল্যান্ডের এই লেসে মাজেস্তি আইনে দেশের সবার জন্যেই রাজপরিবারকে হুমকি দেওয়া বা কোনোভাবে তাদের অবমাননা করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

যদিও আইনটি প্রায়ই আন্দোলনকারী ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমাতেই ব্যবহৃত হয় বলে ভাষ্য সমালোচকদের।

এমন এক সময়ে থাকসিন এ মামলা থেকে খালাস পেলেন যখন তার মেয়ে পায়েতংতার্ন সিনাওয়াত্রা এমন এক আইনি জটিলতায় পড়েছেন, যা তার প্রধানমন্ত্রীর পদও কেড়ে নিতে পারে। পায়েতংতার্নের প্রধানমন্ত্রী পদ আপাতত স্থগিত আছে।

পায়েতংতার্নের বিরুদ্ধে মামলা কয়েক দশক ধরে থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে আসা সিনাওয়াত্রা পরিবারকে জোর ধাক্কা দিয়েছিল, শুক্রবার থাকসিনের খালাস তাদের ও সমর্থকদের জন্য খানিক স্বস্তি নিয়ে এল।

থাকসিনের এক আইনজীবী উইনিয়াত চারমন্ত্রে সাংবাদিকদের বলেন, রায় ঘোষণার পর থাকসিন হাসিমুখে আইনজীবীদের ধন্যবাদ দেন এবং ‘এখন থেকে দেশের কল্যাণে কাজ করতে পারবো’ বলে মন্তব্য করেন।

তার বিরুদ্ধে রাজপরিবারকে অবমাননার অভিযোগ আনা হয় ২০১৬ সালে, সেসময় থাইল্যান্ডে সামরিক শাসন চলছিল, থাকসিন ছিলেন নির্বাসনে।

গত বছর দেশে ফেরার পর ওই মামলা ফের সক্রিয় হয়।

থাকসিনের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাটি যে শুরু থেকেই বেশ দুর্বল ছিল, প্রথম দর্শনেই তা বোঝা যায়, বলছে বিবিসি।

দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদপত্রে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে থাকসিন বলেছিলেন, থাইল্যান্ডে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উচ্ছেদে ২০১৪ সালে যে সামরিক অভ্যুত্থান হয়, সেটি ‘প্রাসাদের কয়েকজন’ এবং প্রিভি কাউন্সিলের সদস্যরা উসকে দিয়েছিলেন বলেই তার ধারণা।

ওই অভ্যুত্থানে থাকসিনের বোন ইংলাক সিনাওয়াত্রা ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন। এর আগে ২০০৬ সালে আরেক অভ্যুত্থানে থাকসিনও ক্ষমতাচ্যুত হন।

সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী যে প্রিভি কাউন্সিলের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান উসকে দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন, সেটি থাইল্যান্ডের শাসনকাঠামোতে বেশ প্রভাবশালী। এটি মূলত ১৯ সদস্যের একটি পরিষদ, যারা থাই রাজাকে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেয়।

কিন্তু রাজপরিবারের অবমাননা নিয়ে থাইল্যান্ডে যে আইন আছে, তার আওতায় এই প্রিভি কাউন্সিল পড়ে না। ওই আইনে কেবল রাজা, রানি, সিংহাসনের উত্তরাধিকার বা সাময়িকভাবে এসব দায়িত্ব পালন করা ব্যক্তিদের অমর্যাদাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।

কিন্তু থাকসিন যেহেতু সুনির্দিষ্ট কারও নাম নেননি, তাই সেটি সরাসরি রাজপরিবারের কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে অবমাননা হিসেবে গণ্য হয় না, বিচারক এমনটা বলে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ খারিজ করে দেন।

 

 

মিজানুর রহমান খান – বিশেষ প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম