প্রদর্শনীতে প্রগতি চাকমা, অমিত নন্দী, জাহাঙ্গীর আলম ও মলয় বালার ৫৪টি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে।
চার শিল্পীর ‘গুরু-শিষ্য: শিষ্য-গুরু’ জয়নুল গ্যালারিতে

- আপডেট সময় ০১:০১:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ৩০ বার পড়া হয়েছে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে ‘গুরু-শিষ্য: শিষ্য-গুরু’ শিরোনামে যৌথ শিল্পকর্ম প্রদর্শনী।
এতে প্রগতি চাকমা, অমিত নন্দী, জাহাঙ্গীর আলম ও মলয় বালার ৫৪টি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে। প্রদর্শনীর তত্ত্বাবধান করেছেন মিখাইল ইদ্রিস।
প্রদর্শনীতে প্রতিফলিত হয়েছে গুরু-শিষ্য পরম্পরার আধ্যাত্মিক বন্ধন, বাঙালির শিল্প-সংস্কৃতির চিরন্তন সৌন্দর্য এবং প্রকৃতি ও মানবিক ঐক্যের অনন্ত ছন্দ।
আয়োজকরা বলছেন, “এটি নিছক প্রদর্শনী নয়, এ এক সাহিত্যরঞ্জিত শিল্পযাত্রা, যেখানে প্রাচীন ও সমকালীন, আধ্যাত্মিক ও জাগতিক, ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক সকল অভিজ্ঞতা মিলেমিশে রচিত হয়েছে শিল্পের এক অনন্ত মহাস্রোত।”

শিল্পী মলয় বালার ল্যান্ডস্কেপ সিরিজের কয়েকটি কাজের শিরোনাম হলো ‘গোধূলির গ্রাম’, ‘আখখেত’, ‘চাঁদের আলোয় ঘুমন্ত গ্রাম’।
এসব শিল্পকর্ম শিল্পীর গ্রামের শৈশবের স্মৃতি জাগানিয়া অনুভূতি-তাড়িত। শিল্পীর ভাষ্য “এগুলো আলোকচিত্রনির্ভর নয়—শিল্পীর ধ্যান এবং কল্পনার নির্যাস।”
জাহাঙ্গীর আলমের শিল্পকর্মে ষড়ঋতুর প্রকৃতির শোভা মেলে ধরা আছে। ‘বর্ষার সুর’, ‘বৃষ্টি পরাগ’, ‘প্রস্ফুটিত আনন্দ’—এসব ছবিতে প্রকৃতির রূপ ও অন্তর্কথন কাব্যিকভাবে ফুটে উঠেছে।
আধ্যাত্মিক ও মানবিক ঐক্যের প্রতিচ্ছবি হিসেবে আউল-বাউল, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, বুদ্ধ ও সুফি মনীষীদের জলরঙে রূপায়ণ করেছেন অমিত নন্দী।
প্রগতি চাকমা পাহাড়ি আদিবাসী সংস্কৃতি, বিসর্জন, নৃত্য ও প্রকৃতির অনুরণন তুলে ধরেছেন নতুন প্রজন্মের শিল্পভাষায়। ‘ম্রো উৎসব’, ‘প্লুঙের গান’, ‘মুক্তির পথযাত্রা’ ছবিতে পাহাড়ি আদিবাসী জীবন ও সংস্কৃতি উঠে এসেছে জলরঙের নরম প্রলেপে।

আয়োজকরা বলছেন, ২০০৯ সালে প্রাচ্য-চিত্রকলা অনুশীলন সংঘের যাত্রার মধ্য দিয়ে যে উদ্যোগ শুরু হয়েছিল, তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে গড়ে ওঠে ওরিয়েন্টাল পেইন্টিং স্টুডিও।
এ স্টুডিয়োতে গুরু–শিষ্য সম্পর্ক প্রবাহিত হয় পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সৃজনশীল সংলাপ ও শিল্প–সাহিত্য আলোচনায়। গুরু কখনো শিষ্যের ভূমিকা পালন করে, আবার শিষ্য হয়ে ওঠে গুরু।
শনিবার সন্ধ্যায় প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্যকলা বিভাগের অনারারি অধ্যাপক ড. আবদুস সাত্তার।
প্রদর্শনী চলবে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত; প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
সাবরিনা জাহান- বিশেষ প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম