রুকুনুজ্জামান তার সাক্ষ্যে একটি রেকর্ডে শেখ হাসিনা, একটিতে শেখ ফজলে নূর তাপস এবং আরেকটিতে হাবিবুর রহমানের কণ্ঠের মিল পাওয়ার কথা বলেন।
সিআইডির ২ কর্মকর্তার সাক্ষ্য: ফোনালাপের সঙ্গে হাসিনার কণ্ঠস্বর ‘মিলেছে’
- আপডেট সময় ১২:২১:২৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ৫১ বার পড়া হয়েছে
জুলাই আন্দোলন সম্পর্কিত ফোনালাপের ফরেনসিক পরীক্ষায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বরের সত্যতা পাওয়া পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন দুজন সাক্ষী।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারপতি এম মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর একক বেঞ্চে তারা সাক্ষ্য দেন।
দুই সাক্ষী হলেন- ঢাকায় সিআইডির ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক মো. রুকুনুজ্জামান এবং ঢাকায় সিআইডির ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবে কর্মরত এসআই মো. শাহেদ জোবায়ের লরেন্স।
মো. রুকুনুজ্জামান ৪৪ নম্বর ও মো. শাহেদ জোবায়ের লরেন্স এ মামলার ৪৫ নম্বর সাক্ষী। মামলায় আসামির তালিকায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের নামও রয়েছে।
রুকুনুজ্জামান তার সাক্ষ্যে একটি রেকর্ডে শেখ হাসিনার, একটিতে ঢাকা দক্ষিণের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের এবং আরেকটিতে সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের কণ্ঠস্বরের মিল আছে বলে জানান।
অন্যদিকে শেখ হাসিনার সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মাকসুদ কামালের কথপোকথনের মিল পাওয়ার কথা বলেন শাহেদ জোবায়ের লরেন্স।
রুকুনুজ্জামান বলেন, চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি এ মামলার বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছ থেকে তিনি একটি ডিভিডি-আর ও একটি হার্ড ড্রাইভ আলামত হিসেবে নেন। ডিভিডি আর- এ একটি অডিও ফাইল রয়েছে; আর হার্ড ড্রাইভটিতে রয়েছে প্রামাণ্য ফাইল।
“এসব আলামত পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মতামত দিই; ট্রান্সক্রিপটও সরবরাহ করি। ডিভিডি-আর-এর নারী কণ্ঠের সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বরের মিল পাওয়া যায়।”
এই মতামতের সত্যায়িত কপি তিনি মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেন বলে তিনি জানান
তিনি বলেন, ওই ডিভিডি-আরে রক্ষিত একটি পুরুষ কণ্ঠস্বরের সঙ্গে হার্ড ড্রাইভে রক্ষিত শেখ ফজলে নূর তাপসের প্রামাণ্য কণ্ঠস্বরের মিল পাওয়া যায়। এ মতামতের সত্যায়িত কপিও তদন্ত কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানান এ সাক্ষী।
গত ১৯ মার্চ একটি পেনড্রাইভ আলামত হিসেবে গ্রহণের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সেখানে দুই ভিডিও রয়েছে। একটি কথোপকথন সম্বলিত ভিডিও ফাইল; আরেকটি তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের বক্তব্য সম্বলিত প্রামাণ্য ভিডিও ফাইল।
“২৩ মার্চ ভিডিওটি পরীক্ষা করে ওই দিনই প্রতিবেদন দিই। প্রতিবেদনে তর্কিত কণ্ঠস্বরের সঙ্গে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের কণ্ঠস্বরের মিল আছে।”
এই মতামতের সত্যায়িত কপি তিনি তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছেন বলে জানান।
শাহেদ জোবায়ের লরেন্স বলেন, গত ১২ মে মামলার বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা আলামত হিসেবে একটি সিডি ও একটি ডিভিডি পাঠান। সিডিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য মাকসুদ কামালের তর্কিত কথোপকথন সংরক্ষিত ছিল। ডিভিডিতে তাদের উভয়ের প্রামাণ্য কণ্ঠস্বর সংরক্ষিত ছিল।
“পরীক্ষায় সিডিতে রক্ষিত কথোপকথন ফরেনসিক ল্যাবে ব্যবহৃত টুলসের সাহায্যে নারী কণ্ঠস্বর এবং পুরুষ কণ্ঠস্বরকে আলাদা করি। ডিভিডিতে শেখ হাসিনা এবং মাকসুদ কামালের নমুনা কণ্ঠস্বরের সঙ্গে সিডিতে রক্ষিত নারী কণ্ঠস্বর ও পুরুষ কণ্ঠস্বর যাচাই করি। যাচাই করে নারী কণ্ঠস্বরের সঙ্গে শেখ হাসিনার নমুনা কণ্ঠস্বরের মিল পাওয়া যায় এবং পুরুষ কণ্ঠস্বরের সঙ্গে মাকসুদ কামালের নমুনা কণ্ঠস্বরের মিল পাওয়া যায়।”
এই কথোপকথনের মতামত ট্রান্সক্রিপশন আকারে দেন এবং মতামতটি বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা নিজে তাদের দপ্তর থেকে নিয়ে যান বলে জানান এই সিআইডি কর্মকর্তা।
এরপর শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন দুই সাক্ষীকে জেরা করেন।
নিঝুম আহমেদ – জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম











