"উনি বর্তমানে মাল্টি-অর্গান ফেইলিওরের রোগী। ডায়ালাইসিস দেওয়ার চেষ্টা চলছে, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি।"
ফরিদা পারভীনকে বিদেশে নেওয়ার মত অবস্থাও নেই, বলছেন চিকিৎসক
 
																
								
							
                                - আপডেট সময় ০২:০৩:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ৫৯ বার পড়া হয়েছে
লালনসংগীতের বরেণ্য শিল্পী ফরিদা পারভীন এখনো লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন; এই পরিস্থিতিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
শিল্পীর রক্তচাপ বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে ‘কিছুটা বেড়েছে’ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
তবে এতে খুব বেশি আশাবাদী হওয়ার সুযোগ নেই বলে মনে করছেন মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশীষ কুমার চক্রবর্তী।
তিনি বিনোদন ডেস্ক বলেন, “ফরিদা পারভীনের রক্তচাপ কিছুটা বেড়েছে, তবে তার হিমোগ্লোবিনের মাত্রা অনেক কম, অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়নি এবং জ্ঞানের স্তরও নিম্ন পর্যায়ে রয়েছে।
“উনি বর্তমানে মাল্টি-অর্গান ফেইলিওরের রোগী। গতকাল থেকে ডায়ালাইসিস দেওয়ার চেষ্টা চলছে, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি।”
ফরিদা পারভীনের চিকিৎসায় ছয় সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন শাখার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা রয়েছেন।
চিকিৎসক আশীষ কুমার বলেন, “মেডিকেল বোর্ডের সব স্পেশালিস্ট ডাক্তারদের বক্তব্য অনুযায়ী উনার এই চিকিৎসা চলমান থাকবে।”
বর্তমান শারীরিক অবস্থায় ফরিদা পারভীনকে বিদেশে ‘নেওয়া সম্ভব নয়’ বলেও জানিয়েছেন এই চিকিৎসক।
তিনি বলেন, “ফরিদা পারভীনের শারীরিক যে অবস্থা উনাকে দেশের বাইরে নেওয়াও সম্ভব হবে না। সেটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হবে। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নিতে হলেও যে ফিটনেস দরকার সেটা উনার নেই।”
গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন এই শিল্পী। বুধবার শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ায় লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে এই শিল্পীকে।
৭১ বছর বয়সী ফরিদা পারভীনের অসুস্থতা বেশ কিছুদিনের। কিডনি সমস্যা ও ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় নিরন্তর ভুগছেন তিনি। কিডনি ডায়ালাইসিস চলছে সপ্তাহে দুদিন করে। তবে মাঝেমধ্যে অবস্থার অবনতি হয় তার। চলতি বছরে তিন দফায় হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে তাকে।
প্রথমবার ফেব্রুয়ারিতে শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ১৩ দিন হাসপাতালে থেকে বাসায় ফেরেন তিনি। এরপর ৫ জুলাই তাকে হাসাপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়। টানা দুই সপ্তাহ তখন হাসপাতালে ছিলেন।
চিকিৎসকের বেঁধে দেওয়া নিয়মের বেড়াজালেই দিন কাটছিল তার। এর মধ্যে গত ২ সেপ্টেম্বর ডায়ালাইসিস করতে গিয়ে গুরুতর অসুস্থ হলে ফের হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছেন এই শিল্পী। এবারের অবস্থা যে আগের তুলনায় জটিল, তা সেদিনই জানিয়েছিলেন চিকিৎসক আশীষ কুমার চক্রবর্তী।
এর মধ্যে ফরিদা পারভীনের উন্নত চিকিৎসার জন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
তার বড় ছেলে ইমাম নিমেরী গ্লিটজকে বলেছিলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে তার মায়ের চিকিৎসার সব খরচ বহন করা ‘সম্ভব হচ্ছে না’।
নজরুলসংগীত ও দেশাত্মবোধক গান দিয়ে সংগীত জীবন শুরু করলেও পরে তিনি ভিড়ে যান লালনের গানে। এরপর জীবনভর লালনগীতি চর্চাতেই ডুবে থেকেছেন এই শিল্পী।
সংগীতাঙ্গনে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৮৭ সালে একুশে পদক পান ফরিদা পারভীন। ২০০৮ সালে জাপান সরকারের ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কার পান তিনি।
বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রের গানেও কণ্ঠ দিয়েছেন এ শিল্পী। সেরা প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ১৯৯৩ সালে।
ফরিদা পারভীনের কণ্ঠে লালনের গানের যে চর্চা হয়ে এসেছে গেল পাঁচ দশক ধরে, সেটি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে প্রায় ১৬ বছর আগে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘অচিন পাখি সংগীত একাডেমি’।
কিন্তু শারীরিক অসুস্থতা, প্রতিষ্ঠানের আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়া এবং নিজস্ব ভবন না থাকায় এ প্রতিষ্ঠানটিও টিকে থাকার লড়াইয়ে।
বিনোদন ডেস্ক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
 
																			










