১১:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
প্রাথমিক শিক্ষায় ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক ও গানের শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করার দাবি জানানো হয় সম্মেলনে।

তাদের সঙ্গে কোনো জোট নয়: হেফাজত আমীর

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ০৭:৫৭:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ২০ বার পড়া হয়েছে

 

যাদের বিষয়ে ‘পূর্বপুরুষরা’ সতর্ক করে গেছেন, তাদের সঙ্গে কোনো জোট না করার আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।

বৃহস্পতিবার ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত ‘জাতীয় উলামা-মাশায়েখ সম্মেলন ২০২৫’ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান বলে সংগঠনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, “যাদের বিষয়ে আমাদের পূর্বপুরুষেরা আমাদেরকে সতর্ক করে গেছেন এবং অসংখ্য বইপুস্তকে যাদের ভ্রান্ত মতাদর্শ তুলে ধরেছেন, আল্লাহর ওয়াস্তে তাদের সাথে আপনারা কোনো অবস্থাতেই জোট করবেন না।

“যাদের কাছে আম্বিয়ায়ে কেরাম আলাইহিমুস সালাম ও সাহাবায়ে কেরাম রাজিয়াল্লাহু আনহুম আজ্বমাঈনের শান ও সম্মান নিরাপদ নয়, তারা কখনোই আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন না।”

জাতির এই ‘সংকটময় মুহূর্তে’ এ রকম জাতীয় উলামা-মাশায়েখ সম্মেলন আয়োজন করায় আয়োজক সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেন, “আমরা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের স্বচ্ছ আক্বীদা লালন ও ইলমে ওহীর হেফাজতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই রাজনীতি করি, সুতরাং যত বাধা ও সমালোচনাই আসুক না কেন, আমরা আমাদের এই আদর্শিক জায়গা থেকে কোনোভাবেই সরবনা ইনশাআল্লাহ।”

সম্মেলনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক ও জমিয়তের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুর রব ইউসুফী।

দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বাহাউদ্দিন যাকারিয়া, যুগ্ম মহাসচিব ফজলুল করিম কাসেমী ও সাংগঠনিক সম্পাদক লোকমান মাযহারী যৌথ পরিচালনায় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক খলীল আহমদ কুরাইশী, নুরুল ইসলাম ওলিপুরী, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্ছেনীর সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন।

সম্মেলনে ১৫ দফা প্রস্তাব পেশ করেন সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বাহাউদ্দীন যাকারিয়া।

 

প্রস্তাবগুলো হল–

১. ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের চুক্তি বাতিল করতে হবে।

২. জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

৩. জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিতে হবে।

৪. প্রাথমিক শিক্ষায় ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক ও গানের শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করতে হবে।

৫. নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে।

৬. শরিয়াভিত্তিক নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং নারী কমিশনের সুপারিশ বাতিল করতে হবে।

৭. সমকামিতা ও ট্রান্সজেন্ডার সংস্কৃতিসহ ‘ইসলামবিরোধী পরিকল্পনা’ বন্ধ করতে হবে।

৮. পিলখানা, শাপলা, মোদীবিরোধী আন্দোলন ও ২০২৪ সালের ‘গণহত্যার’ বিচার দ্রুত করতে হবে।

৯. ধর্ম অবমাননা রোধে ‘কঠোর আইন’ প্রণয়ন করতে হবে।

১০. অন্তর্বর্তী সরকারকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

১১. গাজায় গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠায় জোরালো আন্তর্জাতিক ভূমিকা রাখতে হবে।

১২. পার্বত্য অঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা দমন করতে হবে।

১৩. কাদিয়ানীদের ‘অমুসলিমৎ ঘোষণা ও মসজিদ-মাদ্রাসা দখলসহ সকল অন্যায়-জুলুম বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

১৪. মসজিদ দখল, চাঁদাবাজি ইত্যাদি রোধে সরকারকে কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে।

১৫. জমিয়তের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মুশতাক আহমদ গাজীনগরীর হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও হত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

 

 

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

প্রাথমিক শিক্ষায় ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক ও গানের শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করার দাবি জানানো হয় সম্মেলনে।

তাদের সঙ্গে কোনো জোট নয়: হেফাজত আমীর

আপডেট সময় ০৭:৫৭:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 

যাদের বিষয়ে ‘পূর্বপুরুষরা’ সতর্ক করে গেছেন, তাদের সঙ্গে কোনো জোট না করার আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।

বৃহস্পতিবার ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত ‘জাতীয় উলামা-মাশায়েখ সম্মেলন ২০২৫’ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান বলে সংগঠনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, “যাদের বিষয়ে আমাদের পূর্বপুরুষেরা আমাদেরকে সতর্ক করে গেছেন এবং অসংখ্য বইপুস্তকে যাদের ভ্রান্ত মতাদর্শ তুলে ধরেছেন, আল্লাহর ওয়াস্তে তাদের সাথে আপনারা কোনো অবস্থাতেই জোট করবেন না।

“যাদের কাছে আম্বিয়ায়ে কেরাম আলাইহিমুস সালাম ও সাহাবায়ে কেরাম রাজিয়াল্লাহু আনহুম আজ্বমাঈনের শান ও সম্মান নিরাপদ নয়, তারা কখনোই আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন না।”

জাতির এই ‘সংকটময় মুহূর্তে’ এ রকম জাতীয় উলামা-মাশায়েখ সম্মেলন আয়োজন করায় আয়োজক সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেন, “আমরা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের স্বচ্ছ আক্বীদা লালন ও ইলমে ওহীর হেফাজতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই রাজনীতি করি, সুতরাং যত বাধা ও সমালোচনাই আসুক না কেন, আমরা আমাদের এই আদর্শিক জায়গা থেকে কোনোভাবেই সরবনা ইনশাআল্লাহ।”

সম্মেলনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক ও জমিয়তের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুর রব ইউসুফী।

দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বাহাউদ্দিন যাকারিয়া, যুগ্ম মহাসচিব ফজলুল করিম কাসেমী ও সাংগঠনিক সম্পাদক লোকমান মাযহারী যৌথ পরিচালনায় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক খলীল আহমদ কুরাইশী, নুরুল ইসলাম ওলিপুরী, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্ছেনীর সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন।

সম্মেলনে ১৫ দফা প্রস্তাব পেশ করেন সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বাহাউদ্দীন যাকারিয়া।

 

প্রস্তাবগুলো হল–

১. ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের চুক্তি বাতিল করতে হবে।

২. জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

৩. জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিতে হবে।

৪. প্রাথমিক শিক্ষায় ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক ও গানের শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করতে হবে।

৫. নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে।

৬. শরিয়াভিত্তিক নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং নারী কমিশনের সুপারিশ বাতিল করতে হবে।

৭. সমকামিতা ও ট্রান্সজেন্ডার সংস্কৃতিসহ ‘ইসলামবিরোধী পরিকল্পনা’ বন্ধ করতে হবে।

৮. পিলখানা, শাপলা, মোদীবিরোধী আন্দোলন ও ২০২৪ সালের ‘গণহত্যার’ বিচার দ্রুত করতে হবে।

৯. ধর্ম অবমাননা রোধে ‘কঠোর আইন’ প্রণয়ন করতে হবে।

১০. অন্তর্বর্তী সরকারকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

১১. গাজায় গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠায় জোরালো আন্তর্জাতিক ভূমিকা রাখতে হবে।

১২. পার্বত্য অঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা দমন করতে হবে।

১৩. কাদিয়ানীদের ‘অমুসলিমৎ ঘোষণা ও মসজিদ-মাদ্রাসা দখলসহ সকল অন্যায়-জুলুম বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

১৪. মসজিদ দখল, চাঁদাবাজি ইত্যাদি রোধে সরকারকে কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে।

১৫. জমিয়তের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মুশতাক আহমদ গাজীনগরীর হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও হত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

 

 

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম