“আপনি যদি ভালো সেবা দেন, মানুষ কর ও ফি দেবে। না দিলে তারা তা আটকে রাখবে,” এনবিআর কর্মীদের উদ্দেশ করে বলেন সালেহউদ্দিন।
‘ধমক দিয়ে’ কর আদায় করা যাবে না: অর্থ উপদেষ্টা

- আপডেট সময় ০৯:২৩:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ২৩ বার পড়া হয়েছে

করদাতাদের কাছ থেকে 'জোর করে' বা 'ধমক দিয়ে' কর আদায় করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
করদাতাদের কাছ থেকে ‘জোর করে’ বা ‘ধমক দিয়ে’ কর আদায় করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তার কথায়, “ব্যবসা ছাড়া, বেসরকারি খাতের উন্নয়ন ছাড়া আমরা এক পা-ও এগোতে পারব না। মানুষ প্রায়ই আমাদের কম কর-জিডিপির অনুপাত নিয়ে কথা বলে। কিন্তু ব্যবসা যদি সমৃদ্ধ না হয়, তাহলে আমরা কর সংগ্রহের আশা করতে পারি না।
“জোর করে তো ট্যাক্স নেওয়া যাবে না, ধমক দিয়ে। কর আদায় বাড়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থেকে। ব্যবসায়ীরা আয় করলে, তারা অবশ্যই কর দেবে।”
বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো (বিএসডব্লিউ) প্রকল্পের ‘মাইলফল উদযাপন’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারি সেবা ‘ডিজিটালাইজেশনের ক্ষেত্রে কোনো আপস করা যাবে না’ মন্তব্য করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “সেবা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
“কেউ একজন উল্লেখ করেছিলেন, আমার মনে হয় প্রকল্প পরিচালক (বিএসডব্লিউ)—এটি কেবল রাজস্ব সংগ্রহের বিষয় নয়, এটি আসলে সেবা দেওয়ার বিষয়।
“আপনি (এনবিআর কর্মী) যদি ভালো সেবা দেন, মানুষ কর এবং ফি দেবে। যদি না দেন, তবে তারা তা আটকে রাখবে।
“তাই সবচেয়ে ভালো উপায় হলো মানসম্পন্ন সেবার প্রতি মনোযোগ দেওয়া, এরপর ব্যবসায়িক সম্প্রদায় স্বাভাবিকভাবেই সাড়া দেবে।”
আমদানি ও রপ্তানির প্রক্রিয়া সহজ করতে শুল্ক বিষয়ক সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট (সিএলপি) অনলাইনে পেতে গত ২ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে বিএসডব্লিউ।
এর ফলে দ্রুতই অনলাইনে সেবা গতি পায়। এদিন পযর্ন্ত মোট ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৪৯১টি সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট বিএসডব্লিউ এর মাধ্যমে অনলাইনে ইস্যু করা হয়েছে।
অনলাইনে ইস্যু করা এসব সিএলপির মধ্যে ৮৪ শতাংশের ক্ষেত্রে আবেদন দাখিলের ১ ঘণ্টার মধ্যে এবং ৯৫ শতাংশের ক্ষেত্রে ১ দিনের মধ্যে ‘স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পাদিত হয়েছে’ বলে তুলে ধরা হয় অনুষ্ঠানে।
৫ করদাতাকে ই-রিটার্ন ‘চ্যাম্পিয়ন’ ঘোষণা
বিগত করবর্ষে একক কোম্পানি হিসেবে যারা সর্বোচ্চ কর্মীর আয়কর বিবরণী (রিটার্ন) অনলাইনে দাখিল করেছে, তাদের ই-রিটার্ন ‘চ্যাম্পিয়ন’ ঘোষণা দেওয়া হয়। আর তাদের প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেওয়া হয় সম্মাননা স্বারক।
পাঁচ কোম্পানি হলো— সোনালী ব্যাংক পিএলসি; ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড, ব্র্যাক, বুরো বাংলাদেশ ও রেনেটা পিএলসি।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “আমি অবশ্যই এসব সংস্থাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, যারা সেরা আয়কর রিটার্নের পুরস্কার পেয়েছে। এটি আমাকে আনন্দিত ও অবাক করেছে।”
গত করবর্ষে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সকল সরকারি কর্মচারীর অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করে এনবিআর।
দেশের সব তফশিলি ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীর জন্যও এ আদেশ দেওয়া হয়।
একই সঙ্গে ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো বাংলাদেশ, ইউনিলিভার বাংলাদেশসহ সব মোবাইল অপারেটরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করে রাজস্ব খাতের এ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
বাধ্যতামূলক হওয়ায় এসব কোম্পানির কর্মীরা ই-রিটার্ন দাখিল করে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
মইদুল হাসান – জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম