০২:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পঞ্চগড়ে হামলার ঘটনা তদন্তে যা পেল বিএনপি

নিজস্ব সংবাদ দাতা
  • আপডেট সময় ০৬:৪৭:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মার্চ ২০২৩
  • / ৯১ বার পড়া হয়েছে

পঞ্চগড়ের সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত প্রকৃত আসামিদের আড়াল করতে ঢালাওভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা সরকারের পূর্বপরিকল্পিত ছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি। রোববার দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে বিএনপি গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। মির্জা ফখরুল বলেন, পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের ওপর হামলা, তাদের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও মালামাল লুটপাট, নিরীহ দুই ব্যক্তির নিহত হওয়া, শতাধিক ব্যক্তির আহত হওয়ার ঘটনা ন্যক্কারজনক, দুঃখজনক ও অমানবিক। অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি আমরা দেখতে চাই না।

এ ঘটনা এবং ঘটনা-পরম্পরার গভীরে গেলে এটা স্পষ্ট যে এটা কোনো আকস্মিক বা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং এটি রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সুপরিকল্পিত ঘটনা। নির্বাচনের আগে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য বিশেষ করে শাসক দলের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী বৃহৎ জনপ্রিয় দল বিএনপির ওপর দোষ চাপিয়ে, আওয়ামী লীগ তাদের পূর্বের খেলা নতুন করে শুরু করে বিএনপিকে আতঙ্কের মধ্যে রাখার নীল নকশা আঁকছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, রাষ্ট্রের যেকোনো নাগরিকের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। পুলিশ জনগণের নিরাপত্তা বিধানে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। সময়মতো কঠোর ব্যবস্থা নিলে হয়ত এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটত না। পূর্বপরিকল্পিত বিধায় পুলিশ এ ঘটনার সময় ইচ্ছাকৃতভাবে নীরব ভূমিকা পালন করে; যাতে আহমদিয়াদের ঘরবাড়িতে দুষ্কৃতিকারীরা অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের সুযোগ পায়। পঞ্চগড়ের ঘটনায় সরকার ও পুলিশ দায়িত্বে চরম অবহেলা করেছে বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তদন্তের আগেই বলে দিলেন, বিএনপি জড়িত। দোষ অন্যের ওপর চাপানো আওয়ামী লীগের পুরোনো অভ্যাস। তারা অগ্নিসন্ত্রাস করে তার দায়ও বিএনপির ওপর চাপিয়েছিল। গণতন্ত্রহীনতা, জবাবদিহি না থাকায় এমন ঘটনা ঘটছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, পঞ্চগড়ের ঘটনায় জড়িত প্রকৃত আসামিদের আড়াল করতে ঢালাওভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে। পুলিশ সেখানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। ইতোমধ্যে বিএনপির ১৮১ জন নেতাকর্মী-সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ঘটনায় জড়িত মূল হোতারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এই হোতারা রেলমন্ত্রীর সঙ্গে ভুক্তভোগীদের দেখতে পর্যন্ত গিয়েছিলেন।বিএনপি গঠিত তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, দেশে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই। লুটতরাজ, হত্যাকারীদের লজ্জাবোধ নেই। তারা মন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়ে ভুক্তভোগীদের সামনে হাজির হয়। যখন আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সুরক্ষার প্রয়োজন ছিল, তখন প্রশাসন নিশ্চুপ ছিল।

ক্ষতিগ্রস্তদের আর্তচিৎকারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বোধোদয় হয়নি। বিএনপির তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- দলটির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও পঞ্চগড় বিএনপির সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে তারা উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

পঞ্চগড়ে হামলার ঘটনা তদন্তে যা পেল বিএনপি

আপডেট সময় ০৬:৪৭:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মার্চ ২০২৩

পঞ্চগড়ের সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত প্রকৃত আসামিদের আড়াল করতে ঢালাওভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা সরকারের পূর্বপরিকল্পিত ছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি। রোববার দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে বিএনপি গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। মির্জা ফখরুল বলেন, পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের ওপর হামলা, তাদের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও মালামাল লুটপাট, নিরীহ দুই ব্যক্তির নিহত হওয়া, শতাধিক ব্যক্তির আহত হওয়ার ঘটনা ন্যক্কারজনক, দুঃখজনক ও অমানবিক। অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি আমরা দেখতে চাই না।

এ ঘটনা এবং ঘটনা-পরম্পরার গভীরে গেলে এটা স্পষ্ট যে এটা কোনো আকস্মিক বা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং এটি রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সুপরিকল্পিত ঘটনা। নির্বাচনের আগে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য বিশেষ করে শাসক দলের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী বৃহৎ জনপ্রিয় দল বিএনপির ওপর দোষ চাপিয়ে, আওয়ামী লীগ তাদের পূর্বের খেলা নতুন করে শুরু করে বিএনপিকে আতঙ্কের মধ্যে রাখার নীল নকশা আঁকছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, রাষ্ট্রের যেকোনো নাগরিকের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। পুলিশ জনগণের নিরাপত্তা বিধানে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। সময়মতো কঠোর ব্যবস্থা নিলে হয়ত এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটত না। পূর্বপরিকল্পিত বিধায় পুলিশ এ ঘটনার সময় ইচ্ছাকৃতভাবে নীরব ভূমিকা পালন করে; যাতে আহমদিয়াদের ঘরবাড়িতে দুষ্কৃতিকারীরা অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের সুযোগ পায়। পঞ্চগড়ের ঘটনায় সরকার ও পুলিশ দায়িত্বে চরম অবহেলা করেছে বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তদন্তের আগেই বলে দিলেন, বিএনপি জড়িত। দোষ অন্যের ওপর চাপানো আওয়ামী লীগের পুরোনো অভ্যাস। তারা অগ্নিসন্ত্রাস করে তার দায়ও বিএনপির ওপর চাপিয়েছিল। গণতন্ত্রহীনতা, জবাবদিহি না থাকায় এমন ঘটনা ঘটছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, পঞ্চগড়ের ঘটনায় জড়িত প্রকৃত আসামিদের আড়াল করতে ঢালাওভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে। পুলিশ সেখানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। ইতোমধ্যে বিএনপির ১৮১ জন নেতাকর্মী-সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ঘটনায় জড়িত মূল হোতারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এই হোতারা রেলমন্ত্রীর সঙ্গে ভুক্তভোগীদের দেখতে পর্যন্ত গিয়েছিলেন।বিএনপি গঠিত তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, দেশে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই। লুটতরাজ, হত্যাকারীদের লজ্জাবোধ নেই। তারা মন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়ে ভুক্তভোগীদের সামনে হাজির হয়। যখন আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সুরক্ষার প্রয়োজন ছিল, তখন প্রশাসন নিশ্চুপ ছিল।

ক্ষতিগ্রস্তদের আর্তচিৎকারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বোধোদয় হয়নি। বিএনপির তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- দলটির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও পঞ্চগড় বিএনপির সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে তারা উপস্থিত ছিলেন।