০৭:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

ব্যবসায়ীদের বাধায় ১৬ বছরেও খালি করা যায়নি নিউ সুপার মার্কেট

নিজস্ব সংবাদ দাতা
  • আপডেট সময় ১০:০৫:৩৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৩
  • / ৯৬ বার পড়া হয়েছে

২০০৭ সালে ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট (দক্ষিণ) ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। কিন্তু এরপর ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও মার্কেটটি খালি করা যায়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যবসায়ীদের বাধার কারণেই মার্কেটটি ধসে পড়ার আশঙ্কা ও অগ্নিঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও খালি করা সম্ভব হয়নি।

শনিবার (১৫ এপ্রিল) সকালে মার্কেটটিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ৩০টি ইউনিটের প্রচেষ্টায় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনে কয়েকশ দোকান পুড়ে গেছে। ঢাকা নিউমার্কেটের পশ্চিম-উত্তর দেওয়াল ঘেঁষে রয়েছে ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট (দক্ষিণ)। মার্কেটটিতে প্রায় এক হাজার ২৪৫টি দোকান রয়েছে।

তিনতলা মার্কেটটির ছাদ ও চারপাশের দেওয়ালের বিভিন্ন অংশের পলেস্তারা আগে থেকেই খসে পড়ছে। পিলারে ধরেছিল বড় বড় ফাটল। তাই যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছিল ডিএসসিসি। ২০০৭ সালে বুয়েটের এক প্রতিবেদনে মার্কেটটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল। তখন সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিল ডিএসসিসি। কিন্তু ব্যবসায়ীদের বাধায় আর বাস্তবায়ন হয়নি। এরপর ২০১৬ সালের ১৭ অক্টোবর আলাদা আরেকটি প্রতিবেদনে মার্কেটটি তিন সপ্তাহের মধ্যে খালি করতে সুপারিশ করে বুয়েট। কিন্তু মার্কেটের ব্যবসায়ীরা তখনও বাধা দেন।

ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হক বলেন, ডিএসসিসি একটি মার্কেট নির্মাণ শুরু করলে গড়ে একযুগ সময় কাটিয়ে দেয়। কোনো কাজ সময়মতো শুরু বা শেষ করতে পারেনি। এমন বাস্তবতায় তখন নিউ সুপার মার্কেট ভাঙা বন্ধে বাধা দিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। তবে আজকের আগুন সন্দেহজনক। ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করতে কেউ আগুন লাগিয়েছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন জানান, ২০১৬ সালেই ফায়ার সার্ভিস ভবনটি অগ্নিঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে।

তখন সেটি নিরাপদ করতে বেশকিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসের দেওয়া নির্দেশনার কিছু বাস্তবায়ন হলেও এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ করা হয়েছে বলে মনে হয় না। এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে কয়েকদিন পর পর আগুন লাগার ঘটনা নাশকতা কি না, সেই আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, সম্প্রতি বঙ্গবাজারসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে।

গত ১৪ এপ্রিল হাজারীবাগ ও ডিএসসিসির ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডে আগুন লাগে। কয়েক দিন পরপর এ আগুনের নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। ডিএসসিসির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, একটি সুনির্দিষ্ট সময়ে বারবার অগ্নিকাণ্ড ঘটছে। তাই আমরা শঙ্কিত নাশকতা কি না। গোয়েন্দা সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে গুরুত্ব সহকারে এটি খতিয়ে দেখার আহ্বান জানাই।

ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

ব্যবসায়ীদের বাধায় ১৬ বছরেও খালি করা যায়নি নিউ সুপার মার্কেট

আপডেট সময় ১০:০৫:৩৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৩

২০০৭ সালে ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট (দক্ষিণ) ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। কিন্তু এরপর ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও মার্কেটটি খালি করা যায়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যবসায়ীদের বাধার কারণেই মার্কেটটি ধসে পড়ার আশঙ্কা ও অগ্নিঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও খালি করা সম্ভব হয়নি।

শনিবার (১৫ এপ্রিল) সকালে মার্কেটটিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ৩০টি ইউনিটের প্রচেষ্টায় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনে কয়েকশ দোকান পুড়ে গেছে। ঢাকা নিউমার্কেটের পশ্চিম-উত্তর দেওয়াল ঘেঁষে রয়েছে ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট (দক্ষিণ)। মার্কেটটিতে প্রায় এক হাজার ২৪৫টি দোকান রয়েছে।

তিনতলা মার্কেটটির ছাদ ও চারপাশের দেওয়ালের বিভিন্ন অংশের পলেস্তারা আগে থেকেই খসে পড়ছে। পিলারে ধরেছিল বড় বড় ফাটল। তাই যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছিল ডিএসসিসি। ২০০৭ সালে বুয়েটের এক প্রতিবেদনে মার্কেটটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল। তখন সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিল ডিএসসিসি। কিন্তু ব্যবসায়ীদের বাধায় আর বাস্তবায়ন হয়নি। এরপর ২০১৬ সালের ১৭ অক্টোবর আলাদা আরেকটি প্রতিবেদনে মার্কেটটি তিন সপ্তাহের মধ্যে খালি করতে সুপারিশ করে বুয়েট। কিন্তু মার্কেটের ব্যবসায়ীরা তখনও বাধা দেন।

ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হক বলেন, ডিএসসিসি একটি মার্কেট নির্মাণ শুরু করলে গড়ে একযুগ সময় কাটিয়ে দেয়। কোনো কাজ সময়মতো শুরু বা শেষ করতে পারেনি। এমন বাস্তবতায় তখন নিউ সুপার মার্কেট ভাঙা বন্ধে বাধা দিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। তবে আজকের আগুন সন্দেহজনক। ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করতে কেউ আগুন লাগিয়েছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন জানান, ২০১৬ সালেই ফায়ার সার্ভিস ভবনটি অগ্নিঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে।

তখন সেটি নিরাপদ করতে বেশকিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসের দেওয়া নির্দেশনার কিছু বাস্তবায়ন হলেও এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ করা হয়েছে বলে মনে হয় না। এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে কয়েকদিন পর পর আগুন লাগার ঘটনা নাশকতা কি না, সেই আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, সম্প্রতি বঙ্গবাজারসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে।

গত ১৪ এপ্রিল হাজারীবাগ ও ডিএসসিসির ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডে আগুন লাগে। কয়েক দিন পরপর এ আগুনের নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। ডিএসসিসির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, একটি সুনির্দিষ্ট সময়ে বারবার অগ্নিকাণ্ড ঘটছে। তাই আমরা শঙ্কিত নাশকতা কি না। গোয়েন্দা সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে গুরুত্ব সহকারে এটি খতিয়ে দেখার আহ্বান জানাই।