১১:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

সাত খুন : ৯ বছরেও ফাঁসি কার্যকর হয়নি দণ্ডিতদের

নিজস্ব সংবাদ দাতা
  • আপডেট সময় ০৭:৩৭:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৩
  • / ১১৩ বার পড়া হয়েছে

নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত সাত খুনের ঘটনার ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও এই মামলায় দণ্ডিতদের এখনও ফাঁসি কার্যকর হয়নি। রায় হওয়ার পর দীর্ঘ সাড়ে চার বছর ধরে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে মামলাটি শুনানির অপেক্ষায় আটকে আছে। দ্রুত মামলাটি নিষ্পত্তির দাবি জানিয়েছেন নিহতদের স্বজনরা।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলায় হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, তার সহযোগী মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, বন্ধু সিরাজুল ইসলাম লিটন, মনিরুজ্জামান স্বপনের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক ইব্রাহিমসহ সাত জন অপহরণের শিকার হন। এর তিনদিন পর ৩০ এপ্রিল নজরুল ইসলামসহ ছয় জন ও ১ মে সিরাজুল ইসলাম লিটনের লাশ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

নারায়ণগঞ্জের ভয়াবহ এই হত্যাকাণ্ড সারাদেশব্যাপী আলোচনার জন্ম দেয়। পরবর্তীতে মামলা দায়ের হলে ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‌্যাব-১১’র চাকরিচ্যুত সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম মাসুদ রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজার আদেশ দেন। পরে উচ্চ আদালতে আপিল করা হলে আদালত ২০১৮ সালে ২২ আগস্ট ১৫ আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে অন্যান্য আসামির বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন। বর্তমানে মামলাটি সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় আটকে রয়েছে।

নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী ও মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, আসামিরা খুব প্রভাবশালী। তারা জেলে অবস্থান করলেও এলাকায় এখনও তাদের প্রভাব রয়েছে। এদিকে আপিল বিভাগে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি না হওয়ার ফলে নিহতদের পরিবার সদস্যদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিহত মনিরুজ্জামান স্বপনের ছোট ভাই মিজানুর রহমান রিপন বলেন, আজকে এই হত্যাকাণ্ডের ৯ বছর অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু রায় কার্যকর হয়নি। ফলে আসামিরা ছাড় পেয়ে যাচ্ছে কি না সেই শঙ্কা থেকেই যায়। আমরা অতি দ্রুত এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের রায় কার্যকর করার দাবি জানাই।

বাদীপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আপিল বিভাগে মামলাটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে। আসামিপক্ষের লোকজন চেষ্টা করছেন মামলার রায় যেন দ্রুত সম্পন্ন না হয়। তাদের সেই চেষ্টা সফল হয়েছে। আমরা চাই, রায় বহাল রেখে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করা হোক। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সাবেক পিপি এস এম ওয়াজেদ আলী খোকন বলেন, আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে আপিলের রায় হবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সুবিচার পাবে।

ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

সাত খুন : ৯ বছরেও ফাঁসি কার্যকর হয়নি দণ্ডিতদের

আপডেট সময় ০৭:৩৭:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৩

নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত সাত খুনের ঘটনার ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও এই মামলায় দণ্ডিতদের এখনও ফাঁসি কার্যকর হয়নি। রায় হওয়ার পর দীর্ঘ সাড়ে চার বছর ধরে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে মামলাটি শুনানির অপেক্ষায় আটকে আছে। দ্রুত মামলাটি নিষ্পত্তির দাবি জানিয়েছেন নিহতদের স্বজনরা।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলায় হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, তার সহযোগী মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, বন্ধু সিরাজুল ইসলাম লিটন, মনিরুজ্জামান স্বপনের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক ইব্রাহিমসহ সাত জন অপহরণের শিকার হন। এর তিনদিন পর ৩০ এপ্রিল নজরুল ইসলামসহ ছয় জন ও ১ মে সিরাজুল ইসলাম লিটনের লাশ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

নারায়ণগঞ্জের ভয়াবহ এই হত্যাকাণ্ড সারাদেশব্যাপী আলোচনার জন্ম দেয়। পরবর্তীতে মামলা দায়ের হলে ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‌্যাব-১১’র চাকরিচ্যুত সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম মাসুদ রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজার আদেশ দেন। পরে উচ্চ আদালতে আপিল করা হলে আদালত ২০১৮ সালে ২২ আগস্ট ১৫ আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে অন্যান্য আসামির বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন। বর্তমানে মামলাটি সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় আটকে রয়েছে।

নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী ও মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, আসামিরা খুব প্রভাবশালী। তারা জেলে অবস্থান করলেও এলাকায় এখনও তাদের প্রভাব রয়েছে। এদিকে আপিল বিভাগে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি না হওয়ার ফলে নিহতদের পরিবার সদস্যদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিহত মনিরুজ্জামান স্বপনের ছোট ভাই মিজানুর রহমান রিপন বলেন, আজকে এই হত্যাকাণ্ডের ৯ বছর অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু রায় কার্যকর হয়নি। ফলে আসামিরা ছাড় পেয়ে যাচ্ছে কি না সেই শঙ্কা থেকেই যায়। আমরা অতি দ্রুত এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের রায় কার্যকর করার দাবি জানাই।

বাদীপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আপিল বিভাগে মামলাটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে। আসামিপক্ষের লোকজন চেষ্টা করছেন মামলার রায় যেন দ্রুত সম্পন্ন না হয়। তাদের সেই চেষ্টা সফল হয়েছে। আমরা চাই, রায় বহাল রেখে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করা হোক। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সাবেক পিপি এস এম ওয়াজেদ আলী খোকন বলেন, আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে আপিলের রায় হবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সুবিচার পাবে।