০৭:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

কমছে ব্যবহারকারী, দেউলিয়ার ঝুঁকিতে চ্যাটজিপিটির মালিক ওপেনএআই

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৯:৫৭:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৩
  • / ১৪৮ বার পড়া হয়েছে

বিশ্বজুড়ে কয়েকদিন আগে হৈচৈ ফেলে দেয় ওপেনএআইয়ের চ্যাট বট চ্যাটজিপিটি। তবে পুরো বিশ্বে সাড়া জাগানো মার্কিন প্রযুক্তিবিদ স্যাম অল্টম্যানের প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই আর্থিক সংকটে পড়তে পারে। ভারতীয় বিশ্লেষণধর্মী ম্যাগাজিন অ্যানালাইটিকস ইন্ডিয়া ম্যাগাজিন এক প্রতিবেদনে বলেছে, ২০২৪ সালের শেষ দিকে প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়া পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি রোববার (১৩ আগস্ট) এমন তথ্য জানিয়েছে।

অ্যানালাইটিক ইন্ডিয়া ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওপেনএআইকে শুধুমাত্র চ্যাটজিপিটি সেবাটি চালু রাখতে— প্রতিদিন ৭ লাখ ডলার (প্রায় ৮ কোটি টাকা) খরচ করতে হচ্ছে। বর্তমানে আল্টমানের প্রতিষ্ঠানটি নগদ অর্থ ঢেলে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের জিপিটি-৩.৫ এবং জিপিটি-৪ কে মনিটাইজ করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও পর্যাপ্ত লাভের ব্যবস্থা করতে পারেনি।

২০২২ সালের নভেম্বরে চ্যাটজিপিটির যাত্রা শুরু হয়। এরপর এটি অ্যাপস জগতের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অ্যাপস হওয়ার রেকর্ড গড়ে। যাত্রার শুরুর দিকে অসংখ্য ব্যবহারকারী এতে আগ্রহ দেখালেও— গত কয়েক মাসে এ সংখ্যা নিম্মমুখী রয়েছে। মানে মানুষ এটির ব্যবহার কমিয়ে দিচ্ছে। ওয়েবসাইট বিশ্লেষক সংস্থা সিমিলারওয়েব জানিয়েছে, এ বছরের জুলাই শেষে দেখা গেছে চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারীর সংখ্যা আরও কমেছে।

সিমিলারওয়েবের তথ্যে বলা হয়েছে, জুলাইয়ে চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারী জুন মাসের তুলনায় ১২ শতাংশ কমেছে। মানে তাদের ব্যবহারকারী ১৭০ কোটি থেকে ১৫০ কোটিতে নেমে এসেছে।

এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির এপিআই সেবাটি সমস্যার অন্যতম আরেকটি অংশ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেক প্রতিষ্ঠান যারা পূর্বে তাদের কর্মীদের চ্যাটজিপিটি ব্যবহার না করতে উদ্বুদ্ধ করেছে, এখন তারা ওপেন এআইয়ের এপিআই সেবা নিচ্ছে। এরমাধ্যমে তারা নিজেরা নিজেদের কাজের প্রয়োজন অনুযায়ী চ্যাট বট তৈরি করতে পারছে।

অ্যানালাইটিকস ইন্ডিয়া ম্যাগাজিন আরও সমস্যার কথা তুলে ধরেছে। তারা বলেছে, বর্তমানে প্রযুক্তি বাজারে অসংখ্য ওপেন সোর্স এলএলএম মডেল রয়েছে। যেগুলো বিনামূল্যে এবং কোনো লাইসেন্স ছাড়াই বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যায়। যার কারণে ব্যবহারকারীরা প্রয়োজন ও সুবিধা অনুযায়ী সবকিছু সাজিয়ে নিতে পারেন।

উদাহরণ হিসেবে অ্যানালাইটিকস ইন্ডিয়া ম্যাগাজিন বলেছে, মাইক্রোসফটের সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি মেটার লিয়ামা-২ ব্যবহারকারীদের ‘বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য’ তাদের এই সেবা বিনামূল্যে দিচ্ছে। আর তাই ওপেনএআইয়ের সেবার বদলে ব্যবহারকারীরা অন্যগুলোতে যাচ্ছেন। চ্যাটজিপিটির সেবা অর্থের মাধ্যমে নিতে হয়। আবার এটি বিভিন্নভাবে সীমাবদ্ধ।

ম্যাগাজিনটিই প্রশ্ন করেছে, মানুষ সহজলভ্য ও বিনামূল্যে লিয়ামা- ২ এর মতো সুবিধা পেলে কেন ওপেনএআইয়ের সেবা নিবে? কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য চ্যাটজিপিটির চেয়েও সুবিধাজনক লিয়ামা-২।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ওপেনএআই এখনো লাভের মুখ দেখেনি। এমনকি চ্যাটজিপিটি তৈরির পর গত মে মাসে এটির লসের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে ৫৪ কোটি ডলারে দাঁড়ায়। বিশ্ববিখ্যাত প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট ওপেনএআইয়ে ১০০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করায় মূলত এটি এখনো টিকে আছে।

ওপেনএআই আশা করছে ২০২৩ সালে তারা ২০ কোটি ডলার লাভ করবে। তাদের প্রত্যাশা ২০২৪ সাল শেষে এ লাভের পরিমাণ ১০০ কোটি ডলারে পৌঁছাবে। কিন্তু যেহেতু এখনো তাদের লসের পরিমাণই বাড়তির দিকে, সেখানে লাভের মুখ দেখা অনেক দূরের বিষয়।

ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

কমছে ব্যবহারকারী, দেউলিয়ার ঝুঁকিতে চ্যাটজিপিটির মালিক ওপেনএআই

আপডেট সময় ০৯:৫৭:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৩

বিশ্বজুড়ে কয়েকদিন আগে হৈচৈ ফেলে দেয় ওপেনএআইয়ের চ্যাট বট চ্যাটজিপিটি। তবে পুরো বিশ্বে সাড়া জাগানো মার্কিন প্রযুক্তিবিদ স্যাম অল্টম্যানের প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই আর্থিক সংকটে পড়তে পারে। ভারতীয় বিশ্লেষণধর্মী ম্যাগাজিন অ্যানালাইটিকস ইন্ডিয়া ম্যাগাজিন এক প্রতিবেদনে বলেছে, ২০২৪ সালের শেষ দিকে প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়া পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি রোববার (১৩ আগস্ট) এমন তথ্য জানিয়েছে।

অ্যানালাইটিক ইন্ডিয়া ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওপেনএআইকে শুধুমাত্র চ্যাটজিপিটি সেবাটি চালু রাখতে— প্রতিদিন ৭ লাখ ডলার (প্রায় ৮ কোটি টাকা) খরচ করতে হচ্ছে। বর্তমানে আল্টমানের প্রতিষ্ঠানটি নগদ অর্থ ঢেলে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের জিপিটি-৩.৫ এবং জিপিটি-৪ কে মনিটাইজ করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও পর্যাপ্ত লাভের ব্যবস্থা করতে পারেনি।

২০২২ সালের নভেম্বরে চ্যাটজিপিটির যাত্রা শুরু হয়। এরপর এটি অ্যাপস জগতের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অ্যাপস হওয়ার রেকর্ড গড়ে। যাত্রার শুরুর দিকে অসংখ্য ব্যবহারকারী এতে আগ্রহ দেখালেও— গত কয়েক মাসে এ সংখ্যা নিম্মমুখী রয়েছে। মানে মানুষ এটির ব্যবহার কমিয়ে দিচ্ছে। ওয়েবসাইট বিশ্লেষক সংস্থা সিমিলারওয়েব জানিয়েছে, এ বছরের জুলাই শেষে দেখা গেছে চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারীর সংখ্যা আরও কমেছে।

সিমিলারওয়েবের তথ্যে বলা হয়েছে, জুলাইয়ে চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারী জুন মাসের তুলনায় ১২ শতাংশ কমেছে। মানে তাদের ব্যবহারকারী ১৭০ কোটি থেকে ১৫০ কোটিতে নেমে এসেছে।

এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির এপিআই সেবাটি সমস্যার অন্যতম আরেকটি অংশ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেক প্রতিষ্ঠান যারা পূর্বে তাদের কর্মীদের চ্যাটজিপিটি ব্যবহার না করতে উদ্বুদ্ধ করেছে, এখন তারা ওপেন এআইয়ের এপিআই সেবা নিচ্ছে। এরমাধ্যমে তারা নিজেরা নিজেদের কাজের প্রয়োজন অনুযায়ী চ্যাট বট তৈরি করতে পারছে।

অ্যানালাইটিকস ইন্ডিয়া ম্যাগাজিন আরও সমস্যার কথা তুলে ধরেছে। তারা বলেছে, বর্তমানে প্রযুক্তি বাজারে অসংখ্য ওপেন সোর্স এলএলএম মডেল রয়েছে। যেগুলো বিনামূল্যে এবং কোনো লাইসেন্স ছাড়াই বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যায়। যার কারণে ব্যবহারকারীরা প্রয়োজন ও সুবিধা অনুযায়ী সবকিছু সাজিয়ে নিতে পারেন।

উদাহরণ হিসেবে অ্যানালাইটিকস ইন্ডিয়া ম্যাগাজিন বলেছে, মাইক্রোসফটের সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি মেটার লিয়ামা-২ ব্যবহারকারীদের ‘বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য’ তাদের এই সেবা বিনামূল্যে দিচ্ছে। আর তাই ওপেনএআইয়ের সেবার বদলে ব্যবহারকারীরা অন্যগুলোতে যাচ্ছেন। চ্যাটজিপিটির সেবা অর্থের মাধ্যমে নিতে হয়। আবার এটি বিভিন্নভাবে সীমাবদ্ধ।

ম্যাগাজিনটিই প্রশ্ন করেছে, মানুষ সহজলভ্য ও বিনামূল্যে লিয়ামা- ২ এর মতো সুবিধা পেলে কেন ওপেনএআইয়ের সেবা নিবে? কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য চ্যাটজিপিটির চেয়েও সুবিধাজনক লিয়ামা-২।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ওপেনএআই এখনো লাভের মুখ দেখেনি। এমনকি চ্যাটজিপিটি তৈরির পর গত মে মাসে এটির লসের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে ৫৪ কোটি ডলারে দাঁড়ায়। বিশ্ববিখ্যাত প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট ওপেনএআইয়ে ১০০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করায় মূলত এটি এখনো টিকে আছে।

ওপেনএআই আশা করছে ২০২৩ সালে তারা ২০ কোটি ডলার লাভ করবে। তাদের প্রত্যাশা ২০২৪ সাল শেষে এ লাভের পরিমাণ ১০০ কোটি ডলারে পৌঁছাবে। কিন্তু যেহেতু এখনো তাদের লসের পরিমাণই বাড়তির দিকে, সেখানে লাভের মুখ দেখা অনেক দূরের বিষয়।