প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবি প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দেশবাসীর পাশাপাশি সকল রাজনৈতিক দলের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেছেন, শেখ হাসিনার বিকল্প প্রধানমন্ত্রী কে আছেন? শেখ হাসিনার চেয়ে যোগ্য নেতা কে আছেন যিনি পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন? তাঁর মতো জনদরদি নেতা কে আছেন? সব দলের কাছে জানতে চাই- শেখ হাসিনা ছাড়া যোগ্য নেতা কে আছেন? আর বিএনপি কাকে নেতা বানাবে?
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এক রাতেই আওয়ামী লীগকে শেষ করে দেবে বলে অভিযোগ করে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচনে শেখ হাসিনা হেরে গেলে বাংলাদেশ হেরে যাবে। গরিব মানুষদের বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনাকে জেতাতে হবে। আদালতের আদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার কবরে ঘুমিয়ে আছে। সেটা কি দেশের জনগণ আর চায়? তাহলে বিএনপি কেন চাইছে?
শনিবার বিকেলে রাজধানীর মিরপুরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত খাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। বিশ্ব সংকটের মধ্যেও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। সব দলের কাছে প্রশ্ন- শেখ হাসিনার চেয়ে যোগ্য নেতা কে আছে যে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন?
বিএনপি নেতৃত্ব সংকটে আছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি কাকে নেতা বানাবে? খালেদা জিয়া, তারেক রহমান দু’জনই আদালত কর্তৃক দ-িত। নির্বাচনে কে নেতা হবে দলের? হাওয়া নেতৃত্ব দিচ্ছে। তাদের নেতা কে? ভুয়া তাদের এক দফা। তিনি প্রশ্ন রেখে আরও বলেন, জনগণ শেখ হাসিনার পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক, সংসদের বিলুপ্তি চায় না। ওরা (বিএনপি) কেন চায়?
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির মুখে মধু, অন্তরে বিষ। বলে ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগের লোকজনের কোনো ক্ষতি হবে না। কি সুন্দর কথা! আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে দেবে। বাকিদের এক রাতেই শেষ করে দেবে। এটা তাদের ভেতরের কথা। বিএনপির তিন গুণ- সন্ত্রাস, দুর্নীতি আর মানুষ খুন। এখন আবার নিজেদের দোষ অপরের ওপর চাপায়। এটা তাদের নতুন কূটকৌশল।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্রকে গিলে খাবে। বাংলাদেশকে পাকিস্তান, আফগানিস্তান বানাবে এটা তাদের ধান্ধা। তিনি বলেন, নির্বাচনে শেখ হাসিনা হারলে আপনি হেরে যাবেন, বাংলাদেশ, গরিব মানুষ, মুক্তিযুদ্ধ হেরে যাবে। তাই গরিব মানুষকে বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনাকে জেতাতে হবে। তাঁকে বিজয়ী করতে হবে, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা খালি হাতে লড়ব। তবে আগুন নিয়ে আসলে তা শক্ত হাতে প্রতিহত করব।
মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দেখলে ‘বিদেশে আছি’ মনে হয়- উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা জনগণের কাছে দেওয়া প্রতিজ্ঞা রক্ষা করেন। সামনে (বিএনপি) তারা অন্ধকার দেখবে। তাদের ভোট দিলে দেশ গিলে খাবে। তারা বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তান বানানোর ধান্ধায় আছে। এদের ব্যাপারে দেশবাসীকেও সদা সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কানাডার আদালত বিএনপিকে সন্ত্রাসীদের দল বলেছে, আমরা বলছি না। তাদের হাতে রক্তের দাগ। মোশতাক ও জিয়ার নেতৃত্বে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এবং ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। অথচ তারা এখন মানবাধিকারের কথা বলছে! মনে হয় তারা খাঁটি ফেরেশতা, তাদের মতো আর ভালো মানুষ নেই।
বিএনপি নেতাদের ইমান নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমান উল্লাহ আমান প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে এসেছেন। ফলের রস খেয়ে সব ভুলে গেছেন। গয়েশ্বর রায় কিশোরগঞ্জের কোরাল মাছ খেয়ে খুশি হয়েছেন, কিছু প্যাকেট বাড়িতেও নিয়ে গেছেন। এগুলো ওপেন, ছবি আছে। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, সংসদ সদস্য আগা খান মিন্টুসহ মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠান শেষে দুস্থদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।