০৪:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

মিয়ানমারে জান্তার হামলায় ১১ বেসামরিকসহ নিহত ১৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৮:৫৫:৪১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুলাই ২০২৩
  • / ১২৫ বার পড়া হয়েছে

মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন জান্তার হামলায় ১৪ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১১ জন বেসামরিক লোক এবং তিনজন প্রতিরোধ যোদ্ধা। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির সাগাইং অঞ্চলে সেনাবাহিনীর হামলায় প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।

শনিবার (২২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতী।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের জান্তা সেনারা গত শুক্রবার সাগাইং অঞ্চলের ইয়ানমাবিন শহরের একটি গ্রামে ১১ জন বেসামরিক নাগরিক এবং তিনজন প্রতিরোধ যোদ্ধাকে হত্যা করেছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।

দ্য ইরাবতী বলছে, ইয়ানমাবিন শহরে অবস্থানরত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সদস্যরা শনিবার ভোরের আগে সেখানকার সোনে চৌং নামের একটি গ্রামে অভিযান চালায় এবং তিনজনকে শিরশ্ছেদ করে হত্যা করে। নিহত এই তিনজনই বো তুন তাউক পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের সদস্য এবং জান্তার হামলার সময় তারা ওই গ্রামে পাহারা দিচ্ছিলেন।

এরপর তারা আরও ১১ জন গ্রামবাসীকে হত্যা করে বলে গ্রুপটি বলেছে। নিহত এই বেসামরিক ব্যক্তিদের সবাই পুরুষ। এক গ্রামবাসী বলেছেন, ‘প্রথমে আমরা গ্রামের কেন্দ্রে তিনজন যোদ্ধার মৃতদেহ পেয়েছি। আর জান্তা সৈন্যদের হাতে নিহত বাকি ব্যক্তিদের লাশগুলো চারদিকে ছড়িয়ে ছিল। কয়েকজনকে নির্যাতনও করা হয়েছে।’

এছাড়া ওই গ্রামে অভিযানের পর অন্য গ্রামবাসীদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং তাদের অবস্থা অজানা। ইরাবতী অবশ্য হামলা, প্রাণহানি বা নিখোঁজের এসব রিপোর্ট স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।

প্রতিরোধ গোষ্ঠীর বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি বলছে, জান্তার হামলায় নিহত তিনজন প্রতিরোধ যোদ্ধার নাম হচ্ছে- কো পায়ে ফিও তুন, কো সাই থু সান এবং কো নে মিন তুন। আর নিহত বেসামরিক নাগরিকরা হলেন- উ মিও মিন্ট ওও, ইউ কিয়াও ও, উ ইয়ান নাইং সো, ইউ সোয়ে গি, উ অং উইন সোয়ে, উ নায়িং মিন, ইউ টোটে কি, ইউ লুইন মো টুন, উ হতে জাও, উ ফো অং এবং উ অং জাও উইন।

অবশ্য জান্তাপন্থি টেলিগ্রাম চ্যানেলগুলো নিহতদের একই নাম প্রকাশ করেছে। কিন্তু এসব চ্যানেল বলেছে, নিহতরা সবাই প্রতিরোধ যোদ্ধা। দ্য ইরাবতী বলছে, হামলায় নিহতদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া গতকাল অনুষ্ঠিত হয় এবং ১৪টি মরদেহ একসঙ্গে দাহ করা হয়।

মিয়ানমারের জান্তা-বিরোধী জাতীয় ঐক্য সরকারের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রী ডক্টর সাসা ফেসবুকে পোস্ট করে বলেছেন, ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের জান্তা সৈন্যরা প্রায় ৮০টি গণহত্যা চালিয়েছে এবং ইয়ানমাবিনে চালানো নৃশংসতা হচ্ছে জান্তার সংঘটিত তেমনই একটি গণহত্যা।

এসময় তিনি জান্তার কাছে অর্থ, অস্ত্র এবং সমর্থন দেওয়া বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের মার্চ মাসে ইয়িনমাবিন শহরের কোনে গ্রামে অন্তত চারজন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছিল জান্তা সেনারা। সেসময় ওই গ্রামে অগ্নিসংযোগ করার পর তারা প্রাণ হারিয়েছিলেন।

ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

মিয়ানমারে জান্তার হামলায় ১১ বেসামরিকসহ নিহত ১৪

আপডেট সময় ০৮:৫৫:৪১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুলাই ২০২৩

মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন জান্তার হামলায় ১৪ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১১ জন বেসামরিক লোক এবং তিনজন প্রতিরোধ যোদ্ধা। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির সাগাইং অঞ্চলে সেনাবাহিনীর হামলায় প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।

শনিবার (২২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতী।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের জান্তা সেনারা গত শুক্রবার সাগাইং অঞ্চলের ইয়ানমাবিন শহরের একটি গ্রামে ১১ জন বেসামরিক নাগরিক এবং তিনজন প্রতিরোধ যোদ্ধাকে হত্যা করেছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।

দ্য ইরাবতী বলছে, ইয়ানমাবিন শহরে অবস্থানরত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সদস্যরা শনিবার ভোরের আগে সেখানকার সোনে চৌং নামের একটি গ্রামে অভিযান চালায় এবং তিনজনকে শিরশ্ছেদ করে হত্যা করে। নিহত এই তিনজনই বো তুন তাউক পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের সদস্য এবং জান্তার হামলার সময় তারা ওই গ্রামে পাহারা দিচ্ছিলেন।

এরপর তারা আরও ১১ জন গ্রামবাসীকে হত্যা করে বলে গ্রুপটি বলেছে। নিহত এই বেসামরিক ব্যক্তিদের সবাই পুরুষ। এক গ্রামবাসী বলেছেন, ‘প্রথমে আমরা গ্রামের কেন্দ্রে তিনজন যোদ্ধার মৃতদেহ পেয়েছি। আর জান্তা সৈন্যদের হাতে নিহত বাকি ব্যক্তিদের লাশগুলো চারদিকে ছড়িয়ে ছিল। কয়েকজনকে নির্যাতনও করা হয়েছে।’

এছাড়া ওই গ্রামে অভিযানের পর অন্য গ্রামবাসীদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং তাদের অবস্থা অজানা। ইরাবতী অবশ্য হামলা, প্রাণহানি বা নিখোঁজের এসব রিপোর্ট স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।

প্রতিরোধ গোষ্ঠীর বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি বলছে, জান্তার হামলায় নিহত তিনজন প্রতিরোধ যোদ্ধার নাম হচ্ছে- কো পায়ে ফিও তুন, কো সাই থু সান এবং কো নে মিন তুন। আর নিহত বেসামরিক নাগরিকরা হলেন- উ মিও মিন্ট ওও, ইউ কিয়াও ও, উ ইয়ান নাইং সো, ইউ সোয়ে গি, উ অং উইন সোয়ে, উ নায়িং মিন, ইউ টোটে কি, ইউ লুইন মো টুন, উ হতে জাও, উ ফো অং এবং উ অং জাও উইন।

অবশ্য জান্তাপন্থি টেলিগ্রাম চ্যানেলগুলো নিহতদের একই নাম প্রকাশ করেছে। কিন্তু এসব চ্যানেল বলেছে, নিহতরা সবাই প্রতিরোধ যোদ্ধা। দ্য ইরাবতী বলছে, হামলায় নিহতদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া গতকাল অনুষ্ঠিত হয় এবং ১৪টি মরদেহ একসঙ্গে দাহ করা হয়।

মিয়ানমারের জান্তা-বিরোধী জাতীয় ঐক্য সরকারের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রী ডক্টর সাসা ফেসবুকে পোস্ট করে বলেছেন, ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের জান্তা সৈন্যরা প্রায় ৮০টি গণহত্যা চালিয়েছে এবং ইয়ানমাবিনে চালানো নৃশংসতা হচ্ছে জান্তার সংঘটিত তেমনই একটি গণহত্যা।

এসময় তিনি জান্তার কাছে অর্থ, অস্ত্র এবং সমর্থন দেওয়া বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের মার্চ মাসে ইয়িনমাবিন শহরের কোনে গ্রামে অন্তত চারজন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছিল জান্তা সেনারা। সেসময় ওই গ্রামে অগ্নিসংযোগ করার পর তারা প্রাণ হারিয়েছিলেন।