১২:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

যেভাবে ঘটেছে ওড়িশার ট্রেন দুর্ঘটনা

নিজস্ব সংবাদ দাতা
  • আপডেট সময় ০৪:৪৭:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ জুন ২০২৩
  • / ১০৫ বার পড়া হয়েছে

ভারতের ওড়িশায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিহত বেড়ে ২৮৮ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ৯০০ জনের বেশি। ট্রেনের ভেতরে এখনো অনেকে আটকা পড়ে আছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ভারতের ইতিহাসে চতুর্থ বড় এ রেল দুর্ঘটনা সমন্ধে সুনিশ্চিত করে কিছু জানা না গেলেও কীভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে তা জানিয়েছেন ভারতের রেলওয়ের নির্বাহী পরিচালক। তিনি জানান, দুইটি যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে প্রথমে সংঘর্ষ হয়। এ সময় পাশের লাইনে একটি মালবাহী তৃতীয় ট্রেন রাখা ছিল। সেটিও দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।

জানা গেছে, নির্ধারিত সময়েই হাওড়ার শালিমার স্টেশন থেকে চেন্নাইয়ের উদ্দেশে রওনা দেয় আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস। বাংলা থেকে দক্ষিণ ভারত যাওয়ার জনপ্রিয়তম ট্রেনগুলির মধ্যে অন্যতম করমণ্ডল এক্সপ্রেস। বহু মানুষ প্রতিদিন ওই ট্রেনে চড়ে দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় যান চিকিৎসা করাতে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। এ সময় ওড়িশার বালেশ্বর স্টেশন পেরনোর পর আচমকাই বিকট শব্দে গতি কমতে থাকে করমণ্ডলের। একাধিক বগি ডান দিকে হেলে পড়তে থাকে বিপজ্জনকভাবে। প্রথমে করমণ্ডল এক্সপ্রেসই তীব্র গতিতে গিয়ে ধাক্কা মারে একই লাইনে আগে থেকে চলতে থাকা একটি মালগাড়ির পেছনে।

আঘাতে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন মালগাড়ির ওপরে উঠে যায়। ২৩টি বগির মধ্যে ১৫টি বগি লাইন থেকে ছিটকে পাশের ডাউন লাইনে ও নর্দমার মধ্যে গিয়ে পড়ে। তখন পাশের সেই লাইন দিয়ে আসছিল বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত যেসব বগি ডাউন লাইনের ওপর পড়েছিল, সেগুলোতে গিয়ে ধাক্কা মারে সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। এতে হাওড়াগামী সেই ট্রেনটিরও দু’টি বগি লাইনচ্যুত হয়।

ট্রেনে উপস্থিত যাত্রীদের কয়েকজন জানান, গতি কমার সঙ্গে সঙ্গে হেলে যাওয়া টের পেতেই হুড়োহুড়ি শুরু হয় বগির মধ্যে। প্রায় এক কিলোমিটার পথ এ ভাবেই আস্তে আস্তে এগোতে থাকে ট্রেনটি। এক পর্যায়ে ডাউন লাইনের ওপর আড়াআড়ি গিয়ে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি।

ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক শোক বার্তায় বলেন, ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনায় আমি মর্মাহত। শোকের এই সময়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছি। উদ্ধার অভিযান চলছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

যেভাবে ঘটেছে ওড়িশার ট্রেন দুর্ঘটনা

আপডেট সময় ০৪:৪৭:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ জুন ২০২৩

ভারতের ওড়িশায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিহত বেড়ে ২৮৮ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ৯০০ জনের বেশি। ট্রেনের ভেতরে এখনো অনেকে আটকা পড়ে আছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ভারতের ইতিহাসে চতুর্থ বড় এ রেল দুর্ঘটনা সমন্ধে সুনিশ্চিত করে কিছু জানা না গেলেও কীভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে তা জানিয়েছেন ভারতের রেলওয়ের নির্বাহী পরিচালক। তিনি জানান, দুইটি যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে প্রথমে সংঘর্ষ হয়। এ সময় পাশের লাইনে একটি মালবাহী তৃতীয় ট্রেন রাখা ছিল। সেটিও দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।

জানা গেছে, নির্ধারিত সময়েই হাওড়ার শালিমার স্টেশন থেকে চেন্নাইয়ের উদ্দেশে রওনা দেয় আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস। বাংলা থেকে দক্ষিণ ভারত যাওয়ার জনপ্রিয়তম ট্রেনগুলির মধ্যে অন্যতম করমণ্ডল এক্সপ্রেস। বহু মানুষ প্রতিদিন ওই ট্রেনে চড়ে দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় যান চিকিৎসা করাতে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। এ সময় ওড়িশার বালেশ্বর স্টেশন পেরনোর পর আচমকাই বিকট শব্দে গতি কমতে থাকে করমণ্ডলের। একাধিক বগি ডান দিকে হেলে পড়তে থাকে বিপজ্জনকভাবে। প্রথমে করমণ্ডল এক্সপ্রেসই তীব্র গতিতে গিয়ে ধাক্কা মারে একই লাইনে আগে থেকে চলতে থাকা একটি মালগাড়ির পেছনে।

আঘাতে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন মালগাড়ির ওপরে উঠে যায়। ২৩টি বগির মধ্যে ১৫টি বগি লাইন থেকে ছিটকে পাশের ডাউন লাইনে ও নর্দমার মধ্যে গিয়ে পড়ে। তখন পাশের সেই লাইন দিয়ে আসছিল বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত যেসব বগি ডাউন লাইনের ওপর পড়েছিল, সেগুলোতে গিয়ে ধাক্কা মারে সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। এতে হাওড়াগামী সেই ট্রেনটিরও দু’টি বগি লাইনচ্যুত হয়।

ট্রেনে উপস্থিত যাত্রীদের কয়েকজন জানান, গতি কমার সঙ্গে সঙ্গে হেলে যাওয়া টের পেতেই হুড়োহুড়ি শুরু হয় বগির মধ্যে। প্রায় এক কিলোমিটার পথ এ ভাবেই আস্তে আস্তে এগোতে থাকে ট্রেনটি। এক পর্যায়ে ডাউন লাইনের ওপর আড়াআড়ি গিয়ে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি।

ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক শোক বার্তায় বলেন, ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনায় আমি মর্মাহত। শোকের এই সময়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছি। উদ্ধার অভিযান চলছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।