১২:২৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ভুক্তভোগী ইউপি চেয়ারম্যান সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি করেছেন।

‘মব সৃষ্টি’ করে পদত্যাগপত্রে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ

রাজশাহী প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ০৪:০৫:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫
  • / ৪০ বার পড়া হয়েছে

রাজশাহীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন গোদাগাড়ী উপজেলায় বাসুদেবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা।

 

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় ‘মব সৃষ্টির’ পর জোর করে পদত্যাগপত্রে এক ইউপি চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রাজশাহীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বাসুদেবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভুক্তভোগী চেয়ারম্যান ও পরিষদের আট সদস্য।

ভুক্তভোগী বাসুদেবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের দাবি, একদল লোক জোর করে পদত্যাগপত্রে তার স্বাক্ষর নিয়েছেন।

লিখিত বক্তব্যে নজরুল ইসলাম বলেন, তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নৌকার বিরুদ্ধে বিজয়ী হয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার কাছে পরাজিত হন আওয়ামী লীগ মনোনীত শফিকুল ইসলাম ও বিএনপি মনোনীত মাহফুজুর রহমান ডালিম। এরপর থেকে জনগণের সেবা করে আসছেন তিনি।

গত বছরের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে পরাজিত প্রার্থী ডালিম ও তার অনুসারীরা ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে আসছেন বলে দাবি নজরুল ইসলামের। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ডালিম।

নজরুল ইসলামের অভিযোগ, “বুধবার দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে কর্মরত অবস্থায় ডালিমের নির্দেশে তার ভাই ও সমর্থকদের নিয়ে কার্যালয়ে ঢুকে পড়েন। তারা এলজিইডির রাস্তা পাকাকরণে অনিয়মের অভিযোগ তুলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে টাইপ করা পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষরের জন্য চাপ দেয়।

“স্বাক্ষর দিতে অস্বীকৃতি জানালে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। পরে দেশি অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আমাকে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করা হয়।”

তিনি বলেন, “স্বাক্ষরের পর তারা ঘোষণা দেন, ‘আজ থেকে চেয়ারম্যান হলেন মোস্তাফিজুর রহমান ডালিম।’ এ সময় অন্তত ৪০ থেকে ৫০ জন দেশি অস্ত্র নিয়ে উপস্থিত ছিলেন।”

পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেয় বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম।

নিজের পদত্যাগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, প্রাণনাশের ভয়ে তিনি পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন; যা আইনত বৈধ নয়। বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ওই ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আলফাজ উদ্দিন, গোলাম আরিফ, কামরুজ্জামান, ওহাব আলী, লিটন, নারী সদস্য সাইদা খাতুন হীরা, সাবিনা ইয়াসমিন এবং সুখ জাহান বেগম উপস্থিত ছিলেন।

ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের অভিযোগ অস্বীকার করে মাহফুজুর রহমান ডালিম বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম না। তবে পদত্যাগের খবর জানতে পেরেছি।”

এ ঘটনায় তিনি ও তার পরিবারের কেউ জড়িত নন বলেও দাবি করেন।

গোদাগাড়ী থানার ওসি রুহুল আমিন বলেন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। যারা চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করেছিলেন পরে তারা ইউএনও কার্যালয়ে গিয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে ইউএনও ভালো বলতে পারবেন বলে জানান তিনি।

রাজশাহী প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ভুক্তভোগী ইউপি চেয়ারম্যান সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি করেছেন।

‘মব সৃষ্টি’ করে পদত্যাগপত্রে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ

আপডেট সময় ০৪:০৫:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

 

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় ‘মব সৃষ্টির’ পর জোর করে পদত্যাগপত্রে এক ইউপি চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রাজশাহীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বাসুদেবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভুক্তভোগী চেয়ারম্যান ও পরিষদের আট সদস্য।

ভুক্তভোগী বাসুদেবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের দাবি, একদল লোক জোর করে পদত্যাগপত্রে তার স্বাক্ষর নিয়েছেন।

লিখিত বক্তব্যে নজরুল ইসলাম বলেন, তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নৌকার বিরুদ্ধে বিজয়ী হয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার কাছে পরাজিত হন আওয়ামী লীগ মনোনীত শফিকুল ইসলাম ও বিএনপি মনোনীত মাহফুজুর রহমান ডালিম। এরপর থেকে জনগণের সেবা করে আসছেন তিনি।

গত বছরের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে পরাজিত প্রার্থী ডালিম ও তার অনুসারীরা ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে আসছেন বলে দাবি নজরুল ইসলামের। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ডালিম।

নজরুল ইসলামের অভিযোগ, “বুধবার দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে কর্মরত অবস্থায় ডালিমের নির্দেশে তার ভাই ও সমর্থকদের নিয়ে কার্যালয়ে ঢুকে পড়েন। তারা এলজিইডির রাস্তা পাকাকরণে অনিয়মের অভিযোগ তুলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে টাইপ করা পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষরের জন্য চাপ দেয়।

“স্বাক্ষর দিতে অস্বীকৃতি জানালে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। পরে দেশি অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আমাকে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করা হয়।”

তিনি বলেন, “স্বাক্ষরের পর তারা ঘোষণা দেন, ‘আজ থেকে চেয়ারম্যান হলেন মোস্তাফিজুর রহমান ডালিম।’ এ সময় অন্তত ৪০ থেকে ৫০ জন দেশি অস্ত্র নিয়ে উপস্থিত ছিলেন।”

পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেয় বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম।

নিজের পদত্যাগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, প্রাণনাশের ভয়ে তিনি পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন; যা আইনত বৈধ নয়। বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ওই ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আলফাজ উদ্দিন, গোলাম আরিফ, কামরুজ্জামান, ওহাব আলী, লিটন, নারী সদস্য সাইদা খাতুন হীরা, সাবিনা ইয়াসমিন এবং সুখ জাহান বেগম উপস্থিত ছিলেন।

ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের অভিযোগ অস্বীকার করে মাহফুজুর রহমান ডালিম বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম না। তবে পদত্যাগের খবর জানতে পেরেছি।”

এ ঘটনায় তিনি ও তার পরিবারের কেউ জড়িত নন বলেও দাবি করেন।

গোদাগাড়ী থানার ওসি রুহুল আমিন বলেন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। যারা চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করেছিলেন পরে তারা ইউএনও কার্যালয়ে গিয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে ইউএনও ভালো বলতে পারবেন বলে জানান তিনি।

রাজশাহী প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম