১২:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫
বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে দুই দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে।

‘কমপ্লিট শাটডাউন’: বেনাপোলে দ্বিতীয় দিনের মত বন্ধ আছে আমদানি-রপ্তানি

বেনাপোল প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট সময় ০৪:৩৭:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
  • / ৩১ বার পড়া হয়েছে

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে বেনাপোল বন্দর দিয়ে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।

 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে বেনাপোল বন্দর দিয়ে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।

এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচির কারণে রোববার কাস্টম হাউজের কোনো কোনো গ্রুপের দরজায় তালা মারা দেখা গেছে। বন্ধ রয়েছে পণ্যের শুল্কায়ন ও খালাসসহ সব ধরনের কাজকর্ম।

তবে বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে দুই দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে বলে চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন ওসি ইলিয়াস হোসেন মুন্সি জানিয়েছেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের অপসারণ দাবিতে শনিবার থেকে চলা এই কর্মসূচি নিয়ে বেনাপোল কাস্টম হাউজের কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি।

দুপুরে বেনাপোল কাস্টম হাউজে গিয়ে দেখা গেছে, কার্যালয় খোলা থাকলেও কোনো কর্মকর্তার উপস্থিত নেই। শুল্কায়নের কাজ বন্ধ থাকায় সরকার এ বন্দর থেকে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পণ্যের সরবরাহ নিতে না পারায় ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ার শঙ্কায় রয়েছেন।

এদিকে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় বেনাপোল ও পেট্রাপোল দুই দেশের বন্দর এলাকায় অসংখ্য পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছে বলে বন্দর ব্যবহারকারীরা জানিয়েছেন। এসব ট্রাকে বাংলাদেশের রপ্তানিমুখি গার্মেন্টস শিল্পের কাঁচামাল রয়েছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অনলাইন সার্ভার বন্ধ থাকায় দুদিন আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত কোনো ‘বিল অব এন্টি’ দাখিল করা যায়নি। সার্ভার বন্ধের কারণে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে যেমন কোনো আমদানি-রপ্তানি হচ্ছে না; তেমনি পণ্যের পরীক্ষণ, শুল্কায়ন ও খালাস সংক্রান্ত সব কাজকর্ম সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন বলেন, “কাস্টমসের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ এর ফলে আমদানিকারকরা তাদের আমদানি করা পণ্য সময় মত খালাস নিতে পারছেন না। এতে বন্দরের গুদাম ভাড়া বাবদ প্রতিদিন একটি বড় অংকের টাকা তাদের ডেমারেজ গুনতে হচ্ছে। অনেক পণ্যের গুনগত মানও নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে ব্যবসায়ীরা মারাত্নকভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা করছেন।

অপরদিকে ভারতের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, পেট্রাপোলে সার্ভার জটিলতায় আমাদের ব্যবসায়ে অনেক ক্ষতি হয়েছিল। এখন আবার বাংলাদেশের এনবিআরের কর্মকর্তাদের কাজ বন্ধে আমরা পণ্য রপ্তানি করতে পারছি না। বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় শত শত পণ্যবাহী ট্রাক পেট্রাপোল বন্দর এলাকা, বন্দরের ট্রাক টার্মিনাল, পেট্রাপোল পার্কিং ও বনগাঁ পার্কিংয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

“প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। এক দিন পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলে প্রায় ১১৫ কোটি বিদেশি মুদ্রা আয় থেকে ভারত সরকার বঞ্চিত হয়। যেহেতু এটা বাংলাদেশের ব্যাপার সেহেতু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পণ্য আমদানি-রপ্তানি ফের শুরু করা হবে।”

বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবীর তরফদার বলেন, কাস্টমস কর্মকর্তাদের আন্দোলনের কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে শনিবার সকাল থেকে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে।

তবে এ সময়ে বেনাপোল বন্দর থেকে ভারতীয় খালি ট্রাকগুলো সে দেশে ফেরত যাচ্ছে বলে তিনি জানান।

 

বেনাপোল প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন

বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে দুই দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে।

‘কমপ্লিট শাটডাউন’: বেনাপোলে দ্বিতীয় দিনের মত বন্ধ আছে আমদানি-রপ্তানি

আপডেট সময় ০৪:৩৭:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে বেনাপোল বন্দর দিয়ে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।

এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচির কারণে রোববার কাস্টম হাউজের কোনো কোনো গ্রুপের দরজায় তালা মারা দেখা গেছে। বন্ধ রয়েছে পণ্যের শুল্কায়ন ও খালাসসহ সব ধরনের কাজকর্ম।

তবে বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে দুই দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে বলে চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন ওসি ইলিয়াস হোসেন মুন্সি জানিয়েছেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের অপসারণ দাবিতে শনিবার থেকে চলা এই কর্মসূচি নিয়ে বেনাপোল কাস্টম হাউজের কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি।

দুপুরে বেনাপোল কাস্টম হাউজে গিয়ে দেখা গেছে, কার্যালয় খোলা থাকলেও কোনো কর্মকর্তার উপস্থিত নেই। শুল্কায়নের কাজ বন্ধ থাকায় সরকার এ বন্দর থেকে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পণ্যের সরবরাহ নিতে না পারায় ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ার শঙ্কায় রয়েছেন।

এদিকে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় বেনাপোল ও পেট্রাপোল দুই দেশের বন্দর এলাকায় অসংখ্য পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছে বলে বন্দর ব্যবহারকারীরা জানিয়েছেন। এসব ট্রাকে বাংলাদেশের রপ্তানিমুখি গার্মেন্টস শিল্পের কাঁচামাল রয়েছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অনলাইন সার্ভার বন্ধ থাকায় দুদিন আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত কোনো ‘বিল অব এন্টি’ দাখিল করা যায়নি। সার্ভার বন্ধের কারণে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে যেমন কোনো আমদানি-রপ্তানি হচ্ছে না; তেমনি পণ্যের পরীক্ষণ, শুল্কায়ন ও খালাস সংক্রান্ত সব কাজকর্ম সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন বলেন, “কাস্টমসের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ এর ফলে আমদানিকারকরা তাদের আমদানি করা পণ্য সময় মত খালাস নিতে পারছেন না। এতে বন্দরের গুদাম ভাড়া বাবদ প্রতিদিন একটি বড় অংকের টাকা তাদের ডেমারেজ গুনতে হচ্ছে। অনেক পণ্যের গুনগত মানও নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে ব্যবসায়ীরা মারাত্নকভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা করছেন।

অপরদিকে ভারতের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, পেট্রাপোলে সার্ভার জটিলতায় আমাদের ব্যবসায়ে অনেক ক্ষতি হয়েছিল। এখন আবার বাংলাদেশের এনবিআরের কর্মকর্তাদের কাজ বন্ধে আমরা পণ্য রপ্তানি করতে পারছি না। বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় শত শত পণ্যবাহী ট্রাক পেট্রাপোল বন্দর এলাকা, বন্দরের ট্রাক টার্মিনাল, পেট্রাপোল পার্কিং ও বনগাঁ পার্কিংয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

“প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। এক দিন পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলে প্রায় ১১৫ কোটি বিদেশি মুদ্রা আয় থেকে ভারত সরকার বঞ্চিত হয়। যেহেতু এটা বাংলাদেশের ব্যাপার সেহেতু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পণ্য আমদানি-রপ্তানি ফের শুরু করা হবে।”

বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবীর তরফদার বলেন, কাস্টমস কর্মকর্তাদের আন্দোলনের কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে শনিবার সকাল থেকে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে।

তবে এ সময়ে বেনাপোল বন্দর থেকে ভারতীয় খালি ট্রাকগুলো সে দেশে ফেরত যাচ্ছে বলে তিনি জানান।

 

বেনাপোল প্রতিনিধি : বিডিপলিটিক্স টোয়েন্টিফোর ডটকম