বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস আজ তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে দ্রুত আইন পাসের আহ্বান
- আপডেট সময় ০২:১২:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ মে ২০২৩
- / ৭৬ বার পড়া হয়েছে
তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে দ্রুত খসড়া আইন পাসের আহ্বান জানিয়েছে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রগতির জন্য জ্ঞান (প্রজ্ঞা)। বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (৩০ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়ের বলেন, তামাক কোম্পানির সি এস আর কার্যক্রম বন্ধসহ একটি খসড়া সংশোধনী কেবিনেটের অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। খসড়াটি যত দ্রুত চূড়ান্ত হবে, তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের পথ ততই ত্বরান্বিত হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ বছর বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘গ্রো ফুড, নট টোব্যাকো’। আর বাংলাদেশে দিবসটি পালিত হবে ‘তামাক নয়, খাদ্য ফলান’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে। বিকল্প খাদ্য ফসল উৎপাদন ও বিপণনের সুযোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং টেকসই ও পুষ্টিকর ফসল চাষে তামাক চাষিদের উৎসাহিত করতে এ প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে তামাক উৎপাদনে কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচনও এবারের বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রজ্ঞা জানায়, শীর্ষ তামাক উৎপাদনকারী দেশগুলোর অধিকাংশই নিম্ন ও মধ্যম আয়ভুক্ত, যার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। পৃথিবীর ১২৫টিরও বেশি দেশে প্রায় ৪ মিলিয়ন হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়। বাংলাদেশ বিশ্বের ৯ম বৃহত্তম তামাক ব্যবহারকারী দেশ। এ দেশে ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠী তামাক ব্যবহার করেন। আর প্রতিবছর তামাক ব্যবহারজনিত রোগে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। তামাক চাষ কৃষকের স্বাস্থ্য, মাটির স্বাস্থ্য এবং সার্বিকভাবে গোটা জনস্বাস্থ্য ও পৃথিবীর স্বাস্থ্যের ক্ষতি সাধন করে। দীর্ঘমেয়াদে বৈশ্বিক প্রতিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং খাদ্য সংকট সৃষ্টিতেও ভূমিকা রাখে তামাক। বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান খাদ্য সংকটের পেছনে সংঘাত-যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং কোভিড-১৯ মহামারির অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবের পাশাপাশি তামাক চাষের একটি প্রভাব রয়েছে।
প্রজ্ঞা আরও জানায়, পৃথিবীব্যাপী উৎকৃষ্ট মানের জমি ক্রমবর্ধমানহারে তামাক চাষে ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে ফসলের জমি ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। তামাক চাষের জমি খাদ্য ফলানোর কাজে ব্যবহার করলে, লাখ লাখ মানুষের খাদ্যের চাহিদা পূরণ হবে। পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তার সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সম্ভব হবে। তামাক চাষ মাটির উর্বরতা হ্রাস করে, তাই এই জমিতে অন্যান্য ফসল উৎপাদনের ক্ষমতাও কমে যায়। একই জমিতে একাধিকবার ফসল উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হয়।
কৃষি পরিসংখ্যান বর্ষগ্রন্থ-২০২১-এর তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে তামাক চাষে ব্যবহৃত মোট জমির পরিমাণ ৯৯ লাখ ৬২৪ একর। ২০২১ মৌসুমে বোরো, গম এবং আলুর একরপ্রতি গড় উৎপাদন ছিল যথাক্রমে ১ হাজার ৬৮১ কেজি, ১ হাজার ৩৩৫ কেজি এবং ৮ হাজার ৫৩৮ কেজি। তামাকের পরিবর্তে এই জমিতে বোরো চাষ করা হলে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৪২৮ মেট্রিক টন বোরো, গম এবং আলু চাষ করা হলে যথাক্রমে ১ লাখ ৩২ হাজার ৯৬৬ মেট্রিক টন গম এবং ৮ লাখ ৫০ হাজার ৩৮৭ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন করা সম্ভব হতো।