০৬:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

যেভাবে আরাভের পরিবর্তে কারাগারে ইউসুফ

নিজস্ব সংবাদ দাতা
  • আপডেট সময় ০৯:৫৩:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩
  • / ১২৫ বার পড়া হয়েছে

পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার আসামি আরাভ খান। এই নাম ছাড়াও তিনি রবিউল ইসলাম, আপন, সোহাগ, হৃদয়, ও হৃদি নামে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ ও অস্ত্র মামলাসহ অন্তত ৯টি মামলা রয়েছে। পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মামুন এমরান খান হত্যা মামলায় তিনি পলাতক আসামি। মূলত, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান দুবাইয়ে আরাভের স্বর্ণের দোকান উদ্বোধনের ঘোষণার পর আলোচনায় আসেন তিনি। তার বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায়।

তথ্যমতে, ২০১৮ সালে পুলিশ কর্মকর্তা মামুন হত্যা মামলায় আরাভ খানসহ আটজনের সংশ্লিষ্টতা পায় ডিবি। এদের মধ্যে আরাভ পলাতক ছিলেন। তাকে গ্রেপ্তারে পাঁচ দফা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। অবশেষে ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন আরাভ। কিন্তু পরে জানা যায়, আরাভ খানের পরিবর্তে জেলে যান চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার আইনপুর গ্রামের নুরুজ্জামানের ছেলে আবু ইউসুফ লিমন।

ইউসুফের আইনজীবী ও ডিবি পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলে যাওয়ার কিছুদিন পর ইউসুফ আদালতকে জানান তিনি হৃদয় (আরাভ) নন। তিনি টাকার বিনিময়ে এবং পরিবারের ভরণপোষণ চালানোর চুক্তিতে হৃদয় সেজে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। পরে বিষয়টি তদন্ত করতে ডিবিকে নির্দেশ দেন আদালত। সেই প্রতিবেদনে বেরিয়ে আসে এই ইউসুফ আসলে হৃদয় নন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ইউসুফ গণমাধ্যমকে বলেন, ফেসবুক সূত্রে আরাভের সঙ্গে পরিচয়। পরে কোনো এক সময় আরাভকে ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহের কথা জানান। তখন আরাভ জানায়, দেশে আসলে সব ব্যবস্থা করে দেবে। সাকিব আল হাসানের সঙ্গেও খেলার সুযোগ করে দেবে। কিন্তু মামলার কারণে সে দেশে আসতে পারছে না।

‘তখন আরাভ আমাকে অনুরোধ করে তার হয়ে আদালতে গিয়ে জেলে যেতে। সে আমাকে দেড় মাসের মধ্যে জামিনে মুক্ত করবে। আমার ক্রিকেট খেলার ব্যবস্থা করে দেবে। একসময় আমি তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাই। পরে পরিবারকে না জানিয়ে হৃদয় পরিচয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করি।’ ইউসুফ আরও বলেন, জেলে যাওয়ার পর একাধিকবার আমার জামিনের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। কারাগারে এই মামলার অন্য আসামিদের সঙ্গে কথা হয়। পরে আমি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি।

ইউসুফের বাবা নুরুজ্জামান বলেন, ইউসুফ ৩ মাস জেলে থাকার পর বিষয়টি জানতে পেরেছি। এরপর তার জামিন পেতে আরও ৬ মাস লেগেছে। মোট ৯ মাস সে জেল খেটেছে। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৮ জুলাই রাজধানীর বনানীর একটি বাসায় গিয়ে খুন হন বিশেষ শাখার পুলিশ পরিদর্শক মামুন ইমরান খান। পরদিন তার মৃতদেহ বস্তায় ভরে গাজীপুরের উলুখোলার একটি জঙ্গলে নিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

ট্যাগস

নিউজটি শেয়ার করুন

যেভাবে আরাভের পরিবর্তে কারাগারে ইউসুফ

আপডেট সময় ০৯:৫৩:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩

পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার আসামি আরাভ খান। এই নাম ছাড়াও তিনি রবিউল ইসলাম, আপন, সোহাগ, হৃদয়, ও হৃদি নামে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ ও অস্ত্র মামলাসহ অন্তত ৯টি মামলা রয়েছে। পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মামুন এমরান খান হত্যা মামলায় তিনি পলাতক আসামি। মূলত, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান দুবাইয়ে আরাভের স্বর্ণের দোকান উদ্বোধনের ঘোষণার পর আলোচনায় আসেন তিনি। তার বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায়।

তথ্যমতে, ২০১৮ সালে পুলিশ কর্মকর্তা মামুন হত্যা মামলায় আরাভ খানসহ আটজনের সংশ্লিষ্টতা পায় ডিবি। এদের মধ্যে আরাভ পলাতক ছিলেন। তাকে গ্রেপ্তারে পাঁচ দফা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। অবশেষে ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন আরাভ। কিন্তু পরে জানা যায়, আরাভ খানের পরিবর্তে জেলে যান চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার আইনপুর গ্রামের নুরুজ্জামানের ছেলে আবু ইউসুফ লিমন।

ইউসুফের আইনজীবী ও ডিবি পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলে যাওয়ার কিছুদিন পর ইউসুফ আদালতকে জানান তিনি হৃদয় (আরাভ) নন। তিনি টাকার বিনিময়ে এবং পরিবারের ভরণপোষণ চালানোর চুক্তিতে হৃদয় সেজে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। পরে বিষয়টি তদন্ত করতে ডিবিকে নির্দেশ দেন আদালত। সেই প্রতিবেদনে বেরিয়ে আসে এই ইউসুফ আসলে হৃদয় নন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ইউসুফ গণমাধ্যমকে বলেন, ফেসবুক সূত্রে আরাভের সঙ্গে পরিচয়। পরে কোনো এক সময় আরাভকে ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহের কথা জানান। তখন আরাভ জানায়, দেশে আসলে সব ব্যবস্থা করে দেবে। সাকিব আল হাসানের সঙ্গেও খেলার সুযোগ করে দেবে। কিন্তু মামলার কারণে সে দেশে আসতে পারছে না।

‘তখন আরাভ আমাকে অনুরোধ করে তার হয়ে আদালতে গিয়ে জেলে যেতে। সে আমাকে দেড় মাসের মধ্যে জামিনে মুক্ত করবে। আমার ক্রিকেট খেলার ব্যবস্থা করে দেবে। একসময় আমি তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাই। পরে পরিবারকে না জানিয়ে হৃদয় পরিচয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করি।’ ইউসুফ আরও বলেন, জেলে যাওয়ার পর একাধিকবার আমার জামিনের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। কারাগারে এই মামলার অন্য আসামিদের সঙ্গে কথা হয়। পরে আমি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি।

ইউসুফের বাবা নুরুজ্জামান বলেন, ইউসুফ ৩ মাস জেলে থাকার পর বিষয়টি জানতে পেরেছি। এরপর তার জামিন পেতে আরও ৬ মাস লেগেছে। মোট ৯ মাস সে জেল খেটেছে। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৮ জুলাই রাজধানীর বনানীর একটি বাসায় গিয়ে খুন হন বিশেষ শাখার পুলিশ পরিদর্শক মামুন ইমরান খান। পরদিন তার মৃতদেহ বস্তায় ভরে গাজীপুরের উলুখোলার একটি জঙ্গলে নিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।